যে-ঋতুই হোক না কেন, ফিট থাকা অত্যন্ত জরুরি। বর্ষাকালে সবারই একটু আলসেমি হয়। বিশেষ করে বৃষ্টিতে মাঠে মর্নিংওয়াক করার বা জিমে গিয়ে ব্যায়াম করতে ইচ্ছে হয় না। অথচ অন্য সব ঋতুর মতো এই সময়ও শরীরের প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করাটা জরুরি। সে আপনি গৃহবধূই হোন বা ওয়ার্কিং উয়োমেন। নিয়মিত ব্যায়াম না করলে শরীরে পাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ফলে নানা অসুস্থতা ঘিরে ধরে। তাই বর্ষাকালেও নিজেকে ফিট রাখা থেকে বিরত থাকবেন না। বরং জেনে নিন কীভাবে বাড়িতে থেকেও নিজেকে ফিট রাখতে পারবেন।
১) এই সময় আর্দ্রতা বেশি থাকার ফলে, শরীরে জলের চাহিদা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে ১০-১২ গেলাস জল খাওয়া জরুরি।
২) এই মরশুমে শসা, তরমুজ, খরবুজা এবং সিট্রাস ফল খাওয়া অত্যন্ত সুফলদায়ী। এগুলি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে।
৩) ওয়ার্কআউট করাটা রুটিন বানিয়ে ফেললে সেটা একঘেয়ে হয়ে যায়। তাই চেঞ্জ করে করে বায়াম করুন। কোনও দিন ফ্রিহ্যান্ড, কোনওদিন যোগ ব্যায়াম, কোনও দিন অ্যারোবিক্স বা ডান্স।
৪) প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট বরাদ্দ রাখুন ওয়ার্কআউট-এর জন্য।
৫) বৃষ্টির জন্য জিম-এ যাওয়া সম্ভব না হলে, বাড়িতেই ওয়েট এক্সারসাইজ বা স্ট্রেচিং করুন।
৬) ওয়ার্কআউটের আগে প্রপার ওয়ার্মআপ অত্যন্ত জরুরি, এতে পেশিতে ইঞ্জুরি হওয়ার সম্ভাবনা কমবে। ৭) ওয়ার্কআউট শেষ হলে কিছুক্ষণ কুল ডাউন পজিশনে থাকুন।
৮) দিনে যে-কোনও সময়ই ব্যায়াম করা যায়, তবে সবচেয়ে ভালো সময় দিনের শুরুতে বা বিকেলে।
৯) ওয়ার্কআউট করার সময় চেষ্টা করুন নিশ্বাস মুখ দিয়ে নেওয়ার বদলে নাক দিয়ে নিতে। এর ফলে হয়তো আপনার গতি একটু ঢিমে হবে, কিন্তু ক্যালোরি বার্ন হবে তাড়াতাড়ি।
১০) ওয়ার্কআউটের সময় হালকা রঙের আরামদায়ক পোশাক পরুন।
১১) ওয়ার্কআউট করতে করতে এক্সজস্টেড হলে, অল্পক্ষণ ফ্যান-এর নীচে বসে জিরিয়ে নিন। তারপর আবার ব্যায়াম শুরু করুন।
১২) ব্যায়ামের সময় মন ভালো রাখতে পছন্দের কোনও গান বা মিউজিক শুনতে পারেন। এর ফলে মন অযথা কোনও চিন্তায় ভারাক্রান্ত হবে না। আপনিও স্ট্রেস-ফ্রি থাকতে পারলে ব্যায়ামের সুফল পাবেন।
১৩) ব্যায়াম একা না করে বন্ধু বা পরিবারের কারও সঙ্গে করুন। এর ফলে একঘেয়ে লাগবে না। পরস্পরকে বুষ্ট করতে পারবেন।
১৪) সঠিক ডায়েট গ্রহণ করুন। মিষ্টি খাবার, অতিরিক্ত ভাজাভুজি বর্জন করুন। জাংক ফুড যাতে নুনের পরিমাণ বেশি, যেমন চিপ্স, আচার, চাটনি, কম খান। ফল-সবজি বেশি করে খান।
১৫) বাইরে বেরোনোর সময় কলা, খরবুজা, আপেল প্রভৃতি ফল কেটে লাঞ্চ প্যাক বানিয়ে নিন। বোতলে লেবু জল, আমপানা, ঘোল প্রভৃতি ভরে নিন।
১৬) সাধারণ জলের মধ্যে এক স্লাইস লেবু বা শসা বা পুদিনাপাতা দিয়ে দিন। এর ফলে জল খাওয়ার পর ফ্রেশ ফিল করবেন।
১৭) খাবার প্রস্তুত করার সময় ধনেপাতা, পুদিনাপাতা ও মৌরি ব্যবহার করুন। এগুলি শরীর ঠান্ডা রাখে। গরমমশলা কম খাওয়াই ভালো।
১৮) রান্না করার আগে ঈষদুষ্ণ গরম জলে নুন দিয়ে সবজি ধুয়ে নিন।
১৯) বৃষ্টিতে ভিজে ফেরার পর অবশ্যই শ্যাম্পু করে ফ্রেস হয়ে নেবেন। পারলে একটা গোটা কাঁচা পেঁয়াজ অল্প নুন সহযোগে খেতে পারলে আর হাঁচি-সর্দিকাশির ভয় থাকবে না।
২০) ৮-৯ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন।
২১) বাড়িতে থাকলে ভালো মিউজিক শুনুন, বই পড়ুন।
২২) বাইরে থেকে ফিরে অবশ্যই মেডিকেটেড সাবান দিয়ে হাত-পা ধুয়ে নিন। পার্সোনাল হাইজিন বজায় রাখতে জামাকাপড় একবার ফ্রেশ জলে ডিসইনফেকট্যান্ট মিশিয়ে ধুয়ে নিন।
২৩) এই মরশুমে পায়ের যত্ন নেওয়া বিশেষ ভাবে জরুরি, কারণ বাইরের নোংরা জলকাদা পায়ে ইনফেকশন তৈরি করতে পারে। তাই নখ পরিষ্কার রাখুন। বিউটি পার্লারে যাওয়া সম্ভব না হলে, বাড়িতেই ঈষদুষ্ণ জলে দুফোঁটা শ্যাম্পু মিশিয়ে পা পরিষ্কার করুন, স্ক্রাবিং করুন।
২৪) রেনকোট, ছাতা ব্যবহার করুন। বৃষ্টির জলে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চুল ভেজানো থেকে বিরত থাকুন।
২৫) বৃষ্টিকে দোষারোপ না করে ঘরে বসে এর আনন্দ নিন। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। মন ভালো রাখুন।