আমি আধুনিক মানসিকতার মেয়ে। আমার বয়স এখন ২৭ বছর। আমি পড়াশোনাটা সিরিয়াসলি করেছি এবং এখন খুব ভালো একটি চাকরিও করছি। আমি আজ যে পদে রয়েছি তার জন্যে প্রচুর পরিশ্রম করেছি একসময়, সুতরাং এখন আমি জীবনকে উপভোগ করতে চাই।
চাকরির জায়গায় কাজের ব্যাপারে আমি অসম্ভব দায়িত্ব নিয়ে কাজ করি ঠিকই। কিন্তু আর সব ক্ষেত্রে দায়িত্ব ছাড়াই জীবন উপভোগ করতে ইচ্ছুক। আমার এই চিন্তাধারা কি ভুল? আমার নিজের তা মনে হয় না। আমি খুব খোলামেলা মানসিকতার মেয়ে।কিন্তু যে-ছেলেটিকে আমি ভালোবাসি আমার চিন্তাধারায় সে বিশ্বাসী নয়। বয়ফ্রেন্ড -এর প্রাথমিক ভাবে বিয়ের আগেই ফিজিক্যাল হতে আপত্তি ছিল। কিন্তু আমি এসব রিজিড ভাবনাকে আমল না দিয়ে ওর সাথে মিলিত হই।
এখন আবার সে চায় আমাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে করতে এবং বিবাহিত জীবনের সুখ পেতে। কিন্তু আমি কোনও রকম দায়-দায়িত্ব ছাড়াই লিভ-ইন সম্পর্কের সুখ পেতে চাই। কারণ একমাত্র সেটা করলেই, আমি অনেক বেশি কেয়ার ফ্রি ভাবে জীবন কাটাতে পারব। কিন্তু আমার বয়ফ্রেন্ড এতে কিছুতেই সম্মত হচ্ছে না। আমি কোনওরকম বাঁধন ছাড়াই ওকে আমার সঙ্গে লিভ করার অফার দিয়েছি কিন্তু ও প্রত্যাখ্যান করেছে আমার অফার। আমার কি এই সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়ে আসা উচিৎ?
বোঝাই যাচ্ছে, আপনার মতো আপনার বয়ফ্রেন্ড আধুনিক মানসিকতার নন। অথবা উনি আপনার থেকে অনেক বেশি দায়িত্ববান এবং ম্যাচিওরড। এখনকার সমাজে ‘লিভ-ইন’ সম্পর্কটা মডার্ন, স্মার্ট ছেলেমেয়েদের কাছে খুব পছন্দের, দায়িত্ব এড়াবার একটা প্রশস্ত রাস্তা। বিদেশে এই লাইফস্টাইল অনেকে মেনে নিলেও আমাদের দেশে এই সম্পর্কজাত সন্তান অবৈধ বলেই গণ্য করা হয়। পশুদের মধ্যেই এই দায়িত্বহীন যৌনাচার বরাবর হয়ে এসেছে এবং আজও হয়। তাহলে মানুষের সঙ্গে পশুর তফাত কোথায়? আপনি নিজেই বলছেন ছেলেটিকে ভালোবাসেন, তাহলে সমর্পণে ভয় কেন? আপনি দায়িত্বের মধ্যে নিজেকে জড়াতে চান না– সত্যিই কি তাই, নাকি রাস্তা খোলা রাখতে চান যখন খুশি মন পরিবর্তন করে অন্য বয়ফ্রেন্ড খুঁজে নেওয়ার?
আপনি ইচ্ছে করলে কিছুদিন বিয়ে পিছিয়ে দিতে পারেন অথবা বিয়ে করে কিছুদিন আনন্দে কাটাবার পর তবেই সন্তান, পরিবার শুরু করার কথা ভাবতে পারেন। উভয় পথেই আপনি নিজেকে এবং জীবনকেও উপভোগ করতে পারবেন। সন্তান ধারণের ইচ্ছা থাকলে ‘লিভ-ইন’ রিলেশনে না যাওয়াই ভালো।