বর্তমান করোনা পরিস্থিতি আমাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। আমরা আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় কবে ফিরবো কিংবা আদৌ ফিরতে পারবো কিনা জানি না। আর এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে হলে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে আমাদের সুস্থ থাকতেই হবে। তাই, কোনও ব্যাথা-যন্ত্রণা পুষে রাখলে চলবে না। বিশেষকরে হিপ-জয়েন্টের মতো ব্যাথা দূরীকরনের ব্যাবস্থা করতে হবে দ্রুত। এই ধরনের সমস্যায় কীভাবে আধুনিক চিকিৎসার সাহায্য নেবেন,সেই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিলেন বেলভিউ ক্লিনিকের কনসালটেন্ট অর্থোপেডিক ও রিপ্লেসমেন্ট সার্জন ডা. সন্তোষ কুমার।

আমাদের দেশে, বিশেষকরে পূর্বভারতে প্রায়ই দেখা যায়,অনেকের ক্ষেত্রে জন্মগত অর্থাৎ জেনেটিক আর্থ্রাইটিস যেমন— অ্যাঙ্কিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস, আভাস্কুলার নেক্রোসিস অথবা টিউবারকুলার আর্থ্রাইটিস-এর শিকার অনেকেই। ডা. কুমারের মতে, এক্ষেত্রে হিপ-জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট-ই একমাত্র চিকিৎসা। প্রবীনদের মধ্যে দেখা যায় ভারসাম্যের অভাব, পেশীর সচলতার অভাব অথবা  আর্থ্রাইটিস-এর ফলে চলাফেরায় অসুবিধায় পড়েন। এর উপর যদি পড়ে গিয়ে হিপ জয়েন্ট-এ বা তার আশপাশের হাড়ে চিড় ধরে বা ভেঙে যায়,তাহলে আরও বিপদ।

Health article
X-ray scan image of hip joints with replacement

হিপ জয়েন্ট-এর ভিতরের ফ্র্যাকচারকে বলে ‘ইন্ট্রা ক্যাপ্সুলার হিপ জয়েন্ট ফ্র্যাকচার’। এই ধরনের ফ্র্যাকচার-এ হাড় অনেক সময় ভেঙে ঘুরে যায় এবং দুটি ভাঙা অংশের মধ্যে অনেকটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। ফলে,হাড় সহজে জুড়তে চায় না বা জোড়ে না। এ ক্ষেত্রে হিপ জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট-ই  চিকিৎসার একমাত্র উপায়।

মহিলাদের ক্ষেত্রে সাধারণত মেনোপজের পরে হরমোনের ভারসাম্যের অভাব ঘটে, ফলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায় এবং হাড় নরম বা ফাঁপা হতে থাকে। এই অবস্থাকে বলা হয় অস্টিওপোরোসিস। এরফলে পড়ে গিয়ে খুব অল্প আঘাতেই হিপ জয়েন্ট-এর বাইরে বা ভিতরে চিড় ধরতে পারে অথবা ভেঙে যেতে পারে। হিপ জয়েন্টের বাইরের ফ্র্যাকচারকে বলা হয় ‘এক্সট্রাক্যাপ্সুলার নেক অফ ফেমার ফ্র্যাকচার’ বা ‘ট্রোকান্টার ফ্র্যাকচার’। এই ফ্র্যাকচার ‘আনডিসপ্লেসড’ থাকলে অনেকক্ষেত্রেই ডাইনামিক প্লেট অ্যান্ড মাল্টিপল স্ক্রু ব্যবহার করে চিকিৎসা করা হয়।

ডা. কুমার এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘এখন হিপ জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট করা হয় উন্নত প্রযুক্তি অর্থাৎ কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড টেকনোলজি দ্বারা। এই পদ্ধতিকে বলা হয় অর্থোপাইলট সিস্টেম। এর ফলে রুগি কম ব্যাথা-যন্ত্রণা পান এবং চিকিৎসায় সাফল্যের হার অনেক বেশী, প্রায় একশ শতাংশ। এটি মিনিমাল ইনভেসিভ পদ্ধতিতে করা হয় বলে রক্তপাতের সম্ভাবনা কমে যায় এবং রুগি খুব কম সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। শুধু তাই নয়, অস্ত্রোপচারের পর রুগি হাঁটাচলা, দৌড়ানো,সাঁতারকাটা প্রভৃতি করতে পারেন অনায়াসে। সেইসঙ্গে, এই পদ্ধতিতে একসঙ্গে বোথ সাইড হিপ জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট করা যায়। এর ফলে চিকিৎসার খরচও অনেকটা কম হয়।’

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...