আগুনরাঙা প্রহর গুনছে মগডালে বসে থাকা টিয়াপাখির দল। হোটেলে আসা ইস্তক ওদের বেলা শেষের ডাক জানান দিচ্ছে, আর মাত্র কিছুক্ষণ। ঘন সবুজের আবডালে কুসুমরাঙা থালা থেকে দিন ফুরোনোর রং ছড়িয়ে পড়ছে। ধৌলাধারের রুক্ষ শরীর আগুন ছোঁয়াচে স্বপ্নময়। টিয়ার ঝাঁকের ট্যাঁট্যাঁ-টুকু ছাড়া, আর দ্বিতীয় কোনও শব্দ নেই পালামপুরের বুকে। বাহারি কেয়ারি করা সবুজ ছিটোনো, হিমাচল পর্যটনের ‘দ্য টি বাড’ হোটেলের বিলাসী বারান্দায় বসে চায়ে চুমুক দিচ্ছি। মনে হচ্ছে সমস্ত জগৎ-সংসার বুঝি তার সব কাজ সমাপ্ত করে আমার সঙ্গে বসেছে দুদণ্ড জিরোবার জন্য। ঝুপঝুপ সন্ধে নামল চুপচুপিয়ে। টিয়াগুলো কোথায় যে লুকোল কে জানে?

আজ বেশ ক্লান্ত। সেই কোন সকালে বেরিয়েছি ধরমশালা থেকে। অনেকটা রাস্তা পার করে চামুণ্ডা মন্দির দর্শন সারলাম। ছিমছাম সুন্দর মন্দিরে কারুকলার বাহুল্য না থাকলেও, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা মন কাড়ে। পূজার্থীরা পুজো দিয়ে শান্তি পান। সেখানেই এক বৈষ্ণো ধাবাতে দুপুরে আহার সারি। খানিকটা আড়মোড়া, দু’চারটে ক্লান্তির হাই, তারপরেই বিল্লুভাইয়ের গাড়িতে স্টার্ট। অনেকটা পথ পেরিয়ে মালান। সেখান থেকে বাঁ-হাতে বেঁকে আরও কিছুটা দূরে নিরিবিলি Palampur। রাস্তা যতই পালামপুর ছুঁইছুঁই করবে, প্রকৃতির হৃদয় নিংড়োনো রূপ ততই এপাশ-ওপাশ চারপাশ ঘিরে ধরবে। দেখবেন পিচসড়কটা চা-বাগনের লাবণ্য ছুঁয়ে ধৌলাধারের বুকে চড়ে বসেছে। সেখানেই আসর বিছানো শান্তির এই ঠাঁই পুলুম, মানে লট্স অফ ওয়াটার। পুলুমই কালে কালে পালামপুর। যদিও এর অতীত নাম ত্রিগার্ত। কাংড়া উপত্যকা এখানে এসেই ধৌলাধারে মিশেছে। কম ভ্রমণার্থীরাই এখানে আসেন। যারা আসেন তারা প্রেমে পড়ে যান। কোজাগরীর দুদিন বাদে পালামপুরে এসেছি। পাশের ঘরেই একজোড়া হানিমুন কাপল। কাল করবাচৌত। দুদিন ধরে ভুবনভরে আলো বিলিয়ে চাঁদটা আজ লুকিয়ে পড়েছে। কাল চাঁদ উঠলে ওদের ব্রত উদযাপন।

গতকাল বিকেল ফুরোতেই যেসব টিয়ার দল পাশের গাছ ছেড়ে কুলায় ফিরেছিল, তারাই আজ সকাল হতেই আবার কলরবে মাতিয়ে তুলেছে পালামপুরের সবুজ দুনিয়া। একজন মগডালে বসে ট্যাঁট্যাঁ করলেই অন্যজন ডানা ঝাপটে কোন কোটর থেকে উড়ে এসে পাশের ডালে বসে। লাল ঠোঁটের কচি সবুজ পাখিগুলোর অবুঝ রঙ্গ বেশ লাগছে। কয়েকটাকে লেন্স-এ ধরবার চেষ্টা করলাম। হাই জুমে ধরাও দিল।

কলকাতায় অট্টালিকার গলি গলে প্রাতর্ভ্রমণ আর হয়ে ওঠে না। সময় থাকলেও ইচ্ছে করে না। কিন্তু ঘুমচোখ খোলা থেকেই মনটা কেমন যেন যাই যাই করছে। বারান্দায় দাঁড়াতেই বুঝলাম, প্রকৃতির আহ্বান, এড়ায় কার সাধ্যি? সুতরাং ভ্রমণব্রত উদ্যাপনে বেরিয়ে পড়লাম সক্বাল সক্বাল। পায়ে পায়ে নিঝুম সকালের আলতো আদর। নরম ঠান্ডার রেশ সারা গায়ে এক অদ্ভুত মাদকতা আনছে। শান্ত শীতল পাহাড়ি বাতাস শরীর ছুঁয়ে যাচ্ছে। মাথার ওপর উঁচু উঁচু গাছগুলোর সবুজ চাঁদোয়া ছিঁড়ে আকাশখানার অনধিকার প্রবেশ।

রাস্তাটা বাঁক নিতেই ভরা সবুজের উজান ঠেলে সূর্যের প্রথম আলোয় ঝলমল করছে আকাশচুম্বী গিরিচূড়া। দিগন্তজোড়া বক্ষ প্রসারিত করে চোখের উপর দাঁড়িয়ে আছে ধৌলাধার। কেটে আনা কাঠের স্তূপ ঘাড়ে-মাথায় বোঝাই করে, ঠিকরে আসা রোদ্দুর গায়ে মেখে হেঁটে চলেছে স্থানীয় মানুষ। রাস্তার দুপাশে চা-বাগানের ঢাল সংসার। মাঝে তার সিঁথির মতো পথ কাটা। সবুজের ঠাসবুনোটের আগল ঠেলে স্কুল পড়ুয়ার দল গুটিগুটি পায়ে চলছে বিদ্যালয়ের দিকে। গায়ে তাদের ঘনসবুজ পোশাক মিশে গেছে চা-পাতার কচি লাবণ্যে। আধকুঁজো মহিলা পিঠের ঝোলায় বাচ্চা বেঁধে চা-গাছের পরিচর্যায় মগ্ন। কেউ বা হাতে কাটারি নিয়ে আগাছা সাফ করে চলেছে। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত এই সাফাই করে চা-বাগিচা বাঁচিয়ে রাখা হয়। তারপর আবার শুরু হয় চায়ের চাষ। তখন রূপঢালা সবুজের লালিত্যে পালামপুর মোহময়ী হয়ে ওঠে। সেই ঊনিশ শতকের ব্রিটিশ আমল থেকে পালামপুরের চায়ের খ্যাতি। দেশ থেকে দেশান্তরে চায়ের চালান হয় রমরমা।

আশেপাশে বেশ কয়েকটা দোকান আছে। প্রায় সবধরনের জিনিসই মেলে এই পাহাড়পুরীতে। মাত্রা কিছুটা গেলেই নেউগাল ক্যাফে। এটাও হিমাচল পর্যটনের। ঠিক হল আজকের জলখাবারটা সেখানেই হবে। কাছেই নেউগাল বা বুণ্ডল নদীর শরীর ঘেঁষা নেউগাল খাদ। বর্ষায় বড়ো বড়ো নুড়ি-পাথর পাহাড়ের ওপর থেকে নদীর বুকে আছড়ে পড়ে। উচ্ছল নদীর চেহারাই যায় বদলে। প্রাচীন বুণ্ডলামাতার মন্দির আছে এখানেই। হোটেলে স্নান সেরে নেউগালের দরজা ঠেলে সেঁধিয়ে পড়ি। সত্যি কথা বলতে কী, হিমাচলি সুগন্ধি বাসমতী চালের ভাত ছাড়া আর অন্য কোনও রান্নাই তেমন একটা জুতসই নয়। এখানে কেউ, বিশেষ করে বাঙালি পর্যটক যদি শখ করেও বিরিয়ানি খান, তাহলে তাঁর সারাজীবনের জন্য বিরিয়ানি খাওয়ার ইচ্ছেটাই ঘুচে যেতে পারে। অন্তত আমার তো ঘুচেছে। অতএব, সে ব্যাপারে সাবধান!

এ হেন শৈলগহনের শুধু রূপের আর্তি মনকাড়ে তাই-ই নয়, শরীর-স্বাস্থ্য চাঙ্গা রাখতেও এর জুড়ি মেলা ভার। তাই ইচ্ছে করেই এক-পা দু-পা হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যেতে মন্দ লাগে না। এর কিছুটা গেলেই বিন্ধ্যবাসিনীর মন্দির। তারপর আরও র কিলোমিটার, চোখে পড়বে জাখনিমাতার মন্দির। পাইন-ওক-দেওদারের বেড়া আর মাথার উপর নীল আকাশের চাঁদোয়ার নীচে ত্রিকোনাকৃতির চূড়াবিশিষ্ট সাধারণ এক মন্দির। পরিবেশের মাহাত্ম্যগুণে মন্দিরের আকর্ষণও বেড়েছে।

Palampur থেকে কিছুটা গেলেই কাংড়া উপত্যকার শেষপ্রান্তে হিমাচলের আর-এক তীর্থ বৈজনাথ। আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন প্রকৃতির শরীর ঠান্ডা থাকলেও ভোটের আগুনে হিমাচলি বাজার বেশ গরম। চতুর্দিকে পোস্টার-পতাকায় ছয়লাপ। হোটেলের কাছ ঘেঁষেই একটা শর্টকাট রাস্তা নেমেছে নিমাথার চক পর্যন্ত। ব্যস, ওই অবধিই। গাড়ি নড়েও না চড়েও না। নাঃ! অবস্থাাবিশেষে যা পার্ক স্ট্রিট তা-ই পালামপুর। আধঘণ্টাটাক জ্যাম-গুঁতোনোর পর ইনোভা ছুটল বৈজনাথের দিকে। উইন্ডস্ক্রিণে ছায়া-রোদ্দুরের গান, আমরা এমনি এসে ভেসে যাই। কোলাহল ছাড়িয়ে মন এখন দেদার বেদুইন।

মন্দিরের কাছ বরাবর আসতেই আবার নাগরিক জটলা। আসলে বাস স্ট্যান্ডের কাছেই এই মন্দিরচত্বর। গাড়ি থামিয়ে খানিকটা হাঁটাপথ। পুজোর সামগ্রী হাতে হাঁকডাক এড়িয়ে মন্দিরে ঢুকি। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কেয়ারি সবুজের রং গায়ে মেখে বহু মানুষই ভিড় করছেন এই দেবদেউলের চাতালে। সঙ্গে বাঁদরের দলও ইতিউতি লাফিয়ে বেড়াচ্ছে ইচ্ছেমতো। এখানের আস্তিকের চোখ খোঁজে দেবাদিদেবের দর্শন, আর নাস্তিকরা নাগারি শৈলিতে মজে যান।

নামটা আসলে বৈদ্যনাথ। অর্থাৎ শিব এখানে চিকিৎসক। লক্ষ লক্ষ ভক্তপ্রাণের ভক্তির জোয়ারে বাবা বৈদ্যনাথ কখন যেন বৈজনাথ হয়ে গেছেন। ঠিক এই সময়ে কেউ যদি বলেন এই মন্দির পাণ্ডবভ্রাতাদের তৈরি, তখনই ইতিহাস কিন্তু তার সর্বাঙ্গের ধুলো ঝেড়ে তেড়ে তর্ক জুড়বে। দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম এই বৈদ্যনাথ। অতএব তর্কের পাট তাকেই তোলা থাক। একঝলকে মন্দিরটাকে দেখলে ওড়িশার মন্দিরের কথা মনে পড়ে। দেবালয় ঘিরে ধৌলাধার আর আশাপুর রেঞ্জের শৈলতরঙ্গ। অনেকটা নীচে বিনোয়া নদী। সকাল কিম্বা বিকেল অথবা তুষার ঝরার সময়ে অসাধারণ বৈজনাথের ভিউ। প্রতিটি শৃঙ্গ তখন বরফের চাদরে আষ্টেপৃষ্টে জড়ানো। নাঃ, সে দৃশ্য এবারকার মতো কল্পনা করা সার। তবু যা দেখছি, তার থেকে চোখ ফিরিয়ে মন্দিরগর্ভে শুধু দেবদর্শন করা মানে আসল দেবতাকে ফেলে কেবল পাথরের মূর্তি নিয়ে বালখিল্য করা। দেবঘরের সারা দেহে সামান্য ছেনি-হাতুড়ির ঠুকঠাকে কী অসামান্য সব ভাস্কর্য-শিল্পকলা! দেখে আশ্চর্য হতে হয়।

ফেরার পথে আর-এক কাণ্ড। সাধে কী বলে বাঁদরের বাঁদরামো! কেয়ারি সবুজের বুকে কী নিশ্চিন্তেই হেলেদুলে গপ্প জুড়েছিল শাড়ি-চুড়িদার পরিহিত একদল মেয়ে। ও মা! কোত্থেকে দুটো হুমদো হনুমান ওদের মধ্যে দুটির ওড়না ধরে টানাটানি শুরু করল। চিৎকার চ্যাঁচামেচি করে দলের সকলে যে যেদিকে পারল দৌড় মারল। কিন্তু একজনের ওড়না রইল পূর্ব পুরুষের হাতে। সেও ওড়না দেবে না আর নাতনিও তার ওড়না গায়ে জড়িয়েই মন্দির থেকে বেরোবে। বেশ খানিকক্ষণ তুইও নাছোড় অবস্থা চলার পর, হনুমানটির বোধহয় মায়া হল। সবজে গালিচার বুকেই ফেলে গেল গোলাপি ওড়নাখানা। নাতনিও সুযোগ বুঝে ইতিউতি চেয়ে টুকুস করে ওড়না তুলে ছুট। এদিকে নাটকের পর্দা পড়তেই মন্দির হালকা। বাবা বৈজনাথকে দেখতেও লোকজন এতক্ষণ ভিড় করেনি। সবই তাঁর লীলা।

বৈজনাথ দর্শন সেরে ফিরে আসি পালামপুর। দ্বিপ্রাহরিক আহারের পর কাছের সৌরভ বনবিহার ঘুরে আসি। সবুজভরা পাহাড়চেরা রাস্তা। মাঝেমধ্যে পাঁচ-ছ’টা বাড়ির সারি। একটা জায়গায় এসে রাস্তা ভাগ হয়ে গেছে। একটি পাহাড় বেয়ে উপরের দিকে উঠেছে আর-একটি নেমে গেছে বুণ্ডলা নদীর কাছে। দ্বিতীয় পথটাই আমাদের। চলতে চলতে হঠাৎই দুটি দোকান সংলগ্ন এক বিরাট বাঁধানো চত্বর। পাশেই ব্রিজ ঝুলছে। নদী পেরিয়ে এপাহাড় থেকে ওই পাহাড়। পায়ের নীচে নুড়ি-পাথরের আনাচেকানাচে বুণ্ডলার বয়ে চলা। চলার মাঝে চড়া পড়ে জলের ধারা ভাগ হয়েছে কোথাও কোথাও।

এপাহাড়ে আসতেই শরীরে চকিতে ঝিরঝিরে কাঁপুনি। এখানে রোদ চুরি হয়ে গেছে কিছু আগেই। অথচ ও পাহাড়ে এখনও রোদেলা আভাস। উঁচু রাস্তাটা নিচুতে নেমে গেছে বুণ্ডলার পাশটিতে। সামনেই বনের হাতছানি। তবে টিকিট কাটতে হবে। মাথাপিছু দশ দিয়ে লোহার গেটটা পেরিয়ে অরণ্যের আলিঙ্গন। কতদিন জঙ্গলে যাওয়া হয়নি। ভাবতেই পারিনি পাহাড়পুরীতে এসে এমন একখানা জঙ্গুলে পরিবেশ পাব। জঙ্গল কেটে সরু বাঁধানো পথ। হরেক ফুলের জলসা এখানে-সেখানে। যদি বলি পার্ক, তবে ফস করে কলকাতার নিক্বো কিংবা নলবনের ছবি ভেসে ওঠে। কিন্তু এ এক্বেবারেই তেমনটি নয়। এখানে মানুষের হাতের ছোঁয়া থাকলেও পর্যটকের বাড়াবাড়ি ভিড়-এর বনজ সৌন্দর্যকে এখনও ধবংস হতে দেয়নি।ঞ্জতাই নির্জন গাছের ছায়ায় গা এলিয়ে ভেসে গেলে, প্রকৃতির আদিম রসের খানিকটা স্বাদ এখনও মেলে।

কিছুটা এগিয়েই দেখি একদল স্কুলের ছেলেপিলে লাল সোয়েটার পরে খেলায় মত্ত। আরও খানিকটা ভিতর ঢুকলেই প্রস্তরমর্মরে এক শহিদের মূর্তি। ইনি কারগিল যুদ্ধের সৈনিক সৌরভ কালিয়া। এনার স্মৃতিতেই হিমাচল সরকার এই বনসাম্রাজ্যের নামকরণ করেছেন। তারপর হাজারও মাছের খেলাঘর ছোট্ট ঝিলটা পেরোলেই, অরণ্য আরও গভীর করে ঘিরে ধরে। পথে পথে পাথর ছড়ানো। আর সেসব পাথরের আকার নেহাতই ক্ষুদ্র নয়। কোনওটা কোমর ছাড়িয়ে বুক ছুঁইছুঁই। কানের পাশে নদীর গর্জন। এই জঙ্গলের পাঁজর ফুঁড়েই দুদ্দাড় বেগে ছুটে চলছে বুণ্ডলা।

বনবিহারের আর-একদিকে বোটিংয়ের দারুণ ব্যবস্থা। জলের বুকে রঙিন সেতু। তারই তলা দিয়ে হংসমুখী তরণিতে চেপে জলবিলাস। গরমকালে সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮টা, আর শীতে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নৌকাবিহার করা যায়। পাশেই ক্যাফে মোনাল। মোনাল এখানকার রাষ্ট্রীয় পাখি। ইচ্ছে হলে চুপচাপ চায়ে চুমুক দিয়ে বনের বুকে পাতা চেয়ার-টেবিলে জমানো যায় বৈকালিক আসর। সঙ্গ দেবে নানা নাম না-জানা পাখিদের কলতান।কোনওটা কিচকিচিয়ে যাবে, কোনওটা পাখা ঝাপটে নিরিবিলি মগ্নতাকে চুরমার করার চেষ্টা করবে আবার কোনওটা উদাস সুরে ভাসিয়ে নেবে আনমনা মনটাকে। ক্যাফে মোনালের মিউজিক সিস্টেম থেকে সুরের নস্ট্যালজিয়া ছড়িয়ে পড়ছে জলে-জঙ্গলে-আকাশে। আলোর তরঙ্গের মতো মোলায়েম সেই পরশ।

সেতু পেরিয়ে গাড়ির কাছে ফিরতে গিয়ে থমকে গেলাম ঝুলন্ত সেতুটার ওপরেই। ধৌলাধারের রং বদলাচ্ছে। পাদদেশে গেরস্থালির সবুজ আরও গাঢ় হচ্ছে। এপাশে বুণ্ডলার টলটলে কোলে কাঁচা সোনা গলছে। শ্যাওলা মাখা পাথরগুলোও সোনার জলে আধখানা শরীর ডুবিয়ে থির। নদীঘেরা পাহাড়পুরীতে নামছে আরও এক নৈঃশব্দ্যের প্রহর।

কীভাবে যাবেন

কলকাতা থেকে জম্মু তাওয়াই বা হিমগিরি এক্সপ্রেসে চাক্বিব্যাংক পৌঁছে সেখান থেকে গাড়িতে ধরমশালা হয়ে পালামপুর। অথবা পাঠানকোট থেকে ন্যারোগেজ রেলপথে পালামপুর যাওয়া যায়। বিমানে গেলে গগ্গল বিমানবন্দরে নেমে যেতে হবে সড়কপথে।

কোথায় থাকবেন

হিমাচল পর্যটনের দ্য হোটেল টি বাড। এছাড়া অজস্র বেসরকারি হোটেল আছে। রেস্ত অনুযায়ী ঘর নিতে পারেন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...