ত্বক যেমন আপনার সৌন্দর্যের অন্যতম আধার, তেমনি বয়সের করাল গ্রাস ত্বকের উপরেই সবচেয়ে আগে পড়ে। তাই যৌবনের শুরু থেকেই ত্বকের ব্যাপারে যত্নবান হোন, মেনে চলুন কিছু beauty regime। বয়সের বলিরেখা-কে ঠেকিয়ে রাখার, তথা যৌবনকে প্রলম্বিত করার এটাই সহজতম উপায়।
প্রতিটি বয়সেই ত্বকের যত্নের প্রয়োজন। তবে তার রকমটা আলাদা আলাদা হয়। বেবি স্কিন টেক্সচার অনেকে দীর্ঘদিন ধরে বজায় রাখতে পারেন, যত্নের কারণে। সঠিক beauty regime মেনে স্কিন-কে প্যাম্পার করলে, সুফল পাওয়া যায়। তাই শুরুতেই নিজের ত্বকের প্রকৃতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন। ত্বক শুষ্ক বা তৈলাক্ত যা-ই হোক না কেন, প্রসাধন সামগ্রীর ব্যবহার তার উপর ভিত্তি করেই করা উচিত। কসমেটিক ডার্মাটোলজিস্ট সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. জয়শ্রী শরদ, ত্বকের ‘ইয়ং লুক’ ধরে রাখার জন্য টিপস দিলেন গৃহশোভার পাঠিকাদের।
২০ – তে কনশাস
কুড়িতে পা রাখলেই ত্বকের ব্যাপারে সচেতন হয়ে উঠুন। কয়েকটি পয়েন্ট মাথায় রাখুন
১) কেবলমাত্র ভালো ব্র্যান্ডের ক্লিনজার-ই ব্যবহার করুন। যদি আপনার ত্বক তৈলাক্ত হয়, তাহলে টোনারও ব্যবহার করা শুরু করুন, বিশেষ করে তখন, যখন প্রতিদিন মেক-আপ করাটা আপনার পক্ষে জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য গ্লাইকোলিক অ্যাসিড যুক্ত ফেস ওয়াশ বা ক্লিনজার ব্যবহার করুন। যদি ত্বক শুষ্ক ধরনের হয়, মাইল্ড ক্লিনজার ব্যবহার করুন।
২) বেশি এসপিএফ যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। ফেস ওয়াশ ব্যবহার করার পর অন্ততপক্ষে ৩০ এসপিএফ থাকা সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা উচিত হবে। তৈলাক্ত ত্বক যাদের, তারা ওয়াটার বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
৩) খাদ্য-তালিকায় গাঢ় রঙের ফল ও সবজি রাখুন।
৪) ধূমপান বা মদ্যপান এড়িয়ে চলুন, কারণ এর প্রভাব ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে।
৩০ – এ তৎপর
তিরিশ মানেই হল যৌবন-এর দ্যুতি ধরে রাখার সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়। নিজেকে সুন্দর করে প্রেজেন্ট করতে হলে, এ সময় ত্বককে অবহেলা করলে চলবে না, কারণ স্কিন-ই হতে পারে আপনার সৌন্দর্যের সবচেয়ে বড়ো প্লাস পয়েন্ট।
৫) ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং-এর রুটিন-এ ঢুকে পড়ুন। রোদ থেকে ত্বককে বাঁচানো খুব জরুরি, কারণ বলিরেখা দেখা দেওয়ার এটা অন্যতম কারণ।
৬) ত্বকের নমনীয়তা বজায় রাখতে বেশি করে জল পান করুন।
৭) ভালোমানের অ্যান্টি এজিং ক্রিম ব্যবহার করা শুরু করুন পঁয়ত্রিশের পর থেকে।
৮) স্ক্রাবিং শুরু করুন, অন্ততপক্ষে সপ্তাহে একবার।
৯) রাতে অবশ্যই ভিটামিন-ই যুক্ত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ফেস ক্রিম ব্যবহার করুন।
১০) ব্যালেন্সড্ ডায়েট গ্রহণ করুন, যাতে সঠিক পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি থাকে।
৪০ – এ চাকচিক্য
চল্লিশ মানেই আপনি ডেঞ্জার পিরিয়ড-এ পা রাখলেন। লেট ফর্টিজ-এ মেনোপজের চোখ রাঙানির সম্ভাবনা প্রবল থাকে। তাই ত্বকের হেলাফেলায় এসময় বড়ো ধরনের ক্ষতি করতে পারে।
১) ক্লিনজিং-টোনিং-ময়েশ্চারাইজিং-এর পাশাপাশি বেশি এসপিএফ-যুক্ত সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন দু’ঘণ্টা অন্তর।
২) আন্ডার আই জেল লাগানো শুরু করুন। তবে এটি যেন ভালো গুণমানের হয়।
৩) অ্যান্টি এজিং ক্রিম এসময়ে বিশেষভাবে জরুরি। তবে এই প্রসাধনী কেনার সময় দেখে নিন এতে পেপটাইডস, কো-এনজাইম কিউ-১০, রেটিনোল, পলিহাইড্রক্সি অ্যাসিড প্রভৃতি উপকরণ আছে কিনা।
৩) ফ্রুট পিল ব্যবহার করলে সুফল পাবেন।
৪) এই সময় স্কিন টোন লাইটনিং ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এতে ফ্রুট এক্সট্র্যাক্টস্ থাকা বাঞ্ছনীয়।
৫) প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম একান্ত জরুরি।
৫০ – এও পারফেক্ট
বয়সটা পঞ্চাশ বলেই যে আপনি বার্ধক্যের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছেন– এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। চাইলে আরও দশ বছর নিজেকে একইরকমের আকর্ষণীয় আর লাবণ্যময়ী রাখা যায়।
১) গোটা শরীরে ময়েশ্চারাইজার লাগানো একান্ত জরুরি। কমপক্ষে ২-৩ বার ময়েশ্চারাইজ করুন সারা শরীর।
২) অ্যান্টি এজিং ক্রিমের ব্যবহার বন্ধ করবেন না।
৩) হাইলোরনিক অ্যাসিড-বেসড্ ক্রিম ব্যবহার করুন।
৪) এই বয়সে আপনার ত্বকের কিছু সাধারণ ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন। যেমন— লেজার, বোটোক্স প্রভৃতি। অ্যান্টি এজিং, বলিরেখা, দাগ-ছোপের সমস্যা প্রভৃতিতে এখন বিশেষ ট্রিটমেন্ট-এর প্রয়োজন আছে।
৫) লেজার ট্রিটমেন্ট যদি করানোর প্রয়োজন হয়, তাহলে তা অবশ্যই কোনও বিশেষজ্ঞের সাহায্যে করান।
৬) অল্প সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন কমানোর পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করতে যাবেন না। এগুলি ত্বকের স্বাভাবিক টানটান ভাব কমিয়ে স্কিন লুজনিং-এর পথ প্রশস্ত করে মুখে বলিরেখা এনে দেয়।
৭) ব্যালেন্সড্ ডায়েট, পজিটিভ অ্যাটিটিউডস্, পর্যাপ্ত ঘুম আর প্রচুর জল পান – এগুলিই আপনাকে, তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।