অভিনয়-পেশার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, দেশ-বিদেশে যাওয়ার সুযোগটা তাঁরা পেয়ে যান অনায়াসে। তবে শুটিংয়ের ব্যস্ততার কারণে বেড়ানোর ষোলোআনা আনন্দের সুযোগ তাঁরা পান না সবসময়। তাই তাঁদের অল্পে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। কিন্তু যাঁরা সত্যিই বেড়াতে ভালোবাসেন, তাঁরা বেড়ানোর সুযোগ করে নেবেনই। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও এমনই একজন ভ্রমণপিপাসু। অবশ্য, দেশের থেকে বিদেশে বেড়াতেই বেশি ভালোবাসেন তিনি।

জার্মানির রাজধানী শহরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কম নয়। বার্লিন ওয়াল দেখার ইচ্ছে এবং সুযোগের রাজযোটক যখন হয়েই গেল, ঋতুপর্ণা তা হাতছাড়া করেন কী করে!

এদিকে মেডিটেরানিয়ান সাগরের কোল ঘেঁষা টার্কিও বরাবর আকর্ষণ করত ঋতুপর্ণাকে। একদিকে ইস্তামবুলের প্রাসাদোপম অট্টালিকা ও মিনারের ঐশ্বর্য, অন্যদিকে অপূর্ব ল্যান্ডস্কেপ– যে কোনও রোমান্টিক পর্যটকের আদর্শ ডেস্টিনেশন।

একইভাবে ব্যাংককের অ্যাডভেঞ্চার টুরিজম আর ভিয়েনার বর্ণাঢ্যতার হাতছানিও কম আকর্ষণীয় নয়। তাই কখনও শুটিংয়ের ফাঁকে, কখনওবা বিদেশের চলচ্চিত্র উৎসবের অতিথি হয়ে, কখনও নিজের অভিনীত ছবির প্রদর্শনীর শরিক হতে, কখনও আবার বিনা কারণে শুধু বেড়ানোর তাগিদ থেকেই তিনি পূরণ করেছেন মনের ইচ্ছে। আর এই ইচ্ছেডানায় ভর করে কখনও ব্যাংকক, কখনও বার্লিন, কখনও টার্কি, কখনও আবার ভিয়েনা ঘুরে তিনি উপভোগ করেছেন আনন্দ। তাঁর ট্রাভেল অ্যালবাম থেকে বাদ পড়েনি টরেন্টো এবং কানও। রেশমি মিত্রের ‘মুক্তি’-র প্রিমিয়ার শো-এর জন্য টরেন্টো এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের ‘অলীক সুখ’-এর প্রদর্শনীর জন্য কানও ঘুরে নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি শেয়ার করলেন তাঁর সেরা চারটি ভ্রমণকাহিনি এবং একগুচ্ছ আলোকচিত্র।আজ তৃতীয় পর্ব।

বন্ধু বর এবং বার্লিন

প্রুসিয়ার রাজা স্কোলাস স্যানসৌচির ইচ্ছানুসারে একটি রাজকীয় প্রাসাদ প্রতিষ্ঠা হয়। সম্রাটের প্রিয়তম স্থান ছিল এই বিলাসগৃহ, যেখানে তার পোষা কুকুরগুলিকে নিয়ে গ্রীষ্মের দিনগুলিতে অবসরযাপন করতেন তিনি। চেয়েছিলেন এই প্রাসাদের অস্তিত্ব যেন শুধু তাঁর আয়ুকালেই সীমাবদ্ধ থাকে। তাই সামান্য সারানোতেও ছিল তাঁর বিপুল আপত্তি। তার মৃত্যুর পর অবশ্য এটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ফেলে না রেখে সংরক্ষিত হয়েছে এবং টুরিস্টদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হয়েছে স্যানসৌচি প্যালেস। ঋতুপর্ণা বার্লিন গিয়ে তাই এই প্রাসাদটি বেড়িয়ে নিতে ভোলেননি।

বছর কয়েক আগে শুটিংয়ের সুবাদে বার্লিন যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। সঙ্গে ছিলেন স্বামী সঞ্জয় এবং অভিনেতা-বন্ধু ফেরদৌস। তিনজনে মিলে ঠিক করলেন, ছবির শুটিং শেষ হলে আরও দিনকয়েক থেকে বার্লিন শহরটাকে ভালোভাবে দেখে নেবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুরু হল বার্লিন-সফর। এমনিতেই বার্লিনের আবহাওয়া খুব আরামপ্রদ। হালকা শীতের আমেজে কোর্ট, প্যান্ট, টুপি পরে একেবারে পশ্চিমী ধাঁচে নিজেকে সাজিয়ে তুললেন ঋতুপর্ণা। ঘুরে বেড়িয়েছেন বার্লিনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত। গ্লিয়েনিক ব্রিজ, ডাচ কোয়ার্টার, রাশিয়ান কলোনি– এমন আরও কয়েকটি লোকেশনে কাটানোর স্মৃতি আজও অমলিন রয়েছে ঋতুর মনে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...