ছোট্ট্ ছুটিতে মনটা পালাই পালাই করছে? অথচ মারণ রোগের ভয়ে দূরে যাওয়াটাও ঝুঁকিপূর্ণ মনে হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে কাছেপিঠে ভ্রমণ করতে যারা ইচ্ছুক, তাদের কিন্তু এই দুটি জায়গা মন্দ লাগবে না৷এই Weekend Getaway -তে পৌঁছতে বেশি সময় লাগে না কলকাতা থেকে৷শান্ত নিরিবিলি এই জায়গাগুলি, ঘুরে দেখার মজাই আলাদা৷ঘুরে আসুন ম্যাসাঞ্জোর আর তোপচাঁচি৷ Family Vacation কাটানোর মনপসন্দ Holiday Destination৷ রইল প্রয়োজনীয় বিবরণ৷
ম্যাসাঞ্জোর
ময়ূরাক্ষী নদীর কোলে বেড়ানোর এক অপূর্ব জায়গা ম্যাসাঞ্জোর।প্রকৃতির সবুজ মেখে ম্যাসাঞ্জোর রয়েছে আপনারই প্রতিক্ষায়। সবুজ টিলা পাহাড়ের কোলে বয়ে চলেছে ময়ূরাক্ষী, পাখির ডাকে ভরে উঠছে চরাচর, কোলাহল-মুক্ত এক আদিবাসী জনপদ। মৃণাল সেন পরিচালিত ছবি মৃগয়া যা কিনা মিঠুন চক্রবর্তীকে একদা জাতীয় পুরস্কার এনে দিয়েছিল, তার শুটিং হয়েছিল ম্যাসাঞ্জোরেরই এক সবুজ বনস্থলিতে।
ময়ূরাক্ষী বাঁধে সারাদিন পাখিদের আনাগোনা ও নদীর ছলাৎছল শুনতে শুনতে প্রহর কাটবে। কাছেই অপূর্ব বেড়ানোর জায়গা দুমকা। আধঘন্টায় গাড়িতে ঘুরে আসতে পারেন দুমকার কুরুয়া পাহাড়। ঝাড়খণ্ডের রূপ-রসের সবটুকু স্বাদ পাবেন দুমকায়। মালভূমির অসমতল পথ পেরিয়ে গাড়িতে দুমকা যাওয়ার রাস্তাটিও ভারি সুন্দর।
থাকার জন্য যোগাযোগ করতে হবে সল্টলেক-এর সেচ দফতরে। এদের গেস্ট হাউস ময়ূরাক্ষী ভবনে ৬- টা ঘর রয়েছে। এছাড়াও আছে ৩৮টি ঘর বিশিষ্ট ইউথ হস্টেল। বুকিং হয় মৌলালি যুবকেন্দ্রে।
যারা গাড়িতে যেতে ইচ্ছুক তাদের জন্য পানাগড় থেকে মোরগ্রামের দিকে ৬০নং জাতীয় সড়ক ধরে এগিয়ে যেতে হবে। সিউড়ি রেল গেট ছাড়িয়ে আরও ১০ কিমি গেলেই ম্যাসাঞ্জোড়। ট্রেনে সিউড়ি নেমে গাড়িতেও ম্যাসাঞ্জোর পৌঁছোতে পারেন।
তোপচাঁচি
ঝরিয়ার মাইনিং অঞ্চলের জল সরবরাহের জন্য পরেশনাথ পাহাড়ের ঢালে তৈরি হয়েছিল বিশাল জলাধার তোপচাঁচি লেক। নীল জলের ব্যাকগ্রাউন্ডে আকাশের ক্যানভাস। এক স্নিগ্ধ পরিবেশে বুক ভরে অক্সিজেন নিতে আপনার উইকএন্ড গেটঅ্যাওয়ে হতে পারে তোপচাঁচি। সকালে পাহাড়ের কোল থেকে উঁকি মারে সূর্য। উজ্জ্বল হয়ে ওঠে সবুজ টিলাগুলো। শীতে পরিযায়ী পাখিরা আসে দূর-দূরান্ত থেকে। লেক আর পাহাড়ি অরণ্যকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি। লেকের জলে ঘুরে বেড়ায় নানা ধরনের মাছ। এই আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে পর্যটক বড়ো একটা যান না। জলাধারের পাশেই রয়েছে লেক প্যালেস গেস্ট হাউস। পরিচালনায় কোল মাইনিং এরিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি।
অনেকে ধানবাদে থেকেও দিনে দিনে ঘুরে আসেন তোপচাঁচি লেক৷ শীতে না গিয়ে যারা বসন্তে যাবেন তাদের উপরি পাওনা পলাশ আর মহুয়ার মিষ্টি মৌতাত।
তোপচাঁচির নিকটবর্তী স্টেশন গোমো। লেক থেকে দূরত্ব ৬কিমি। সরাসরি গোমো পৌঁছোতে হলে হাওড়া-হাতিয়া-কালকা, শিয়ালদহ-জম্মু তাওয়াই, হাওড়া গোয়ালিয়র চম্বল এক্সপ্রেস রয়েছে। কিন্তু সুবিধাজনক হবে রাতে ধানবাদে থেকে ভোরের কোনও ট্রেনে গোমো পৌঁছোনো। গোমো থেকে অটোয় পৌঁছে যান লেক দর্শনে।