পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম এবং প্রতিপালিত হরনাজ সান্ধু তাঁর মায়ের কাছ থেকে প্রেরণা লাভ করে আজ সাফল্যের তাজ মাথায় তুলে নিয়েছেন। বংশপরম্পরায় চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা ভেঙে বেরিয়ে আসার সাহস করা এবং একই সঙ্গে একজন সফল গাইনিকোলজিস্ট হয়ে দেখিয়ে নিজের পরিবারকেই আশ্চর্যন্বিত করেছিলেন হনরাজের মা।

পঞ্জাবের হরনাজ সান্ধু 12 ডিসেম্বর 2021-এ মাত্র 21 বছর বয়সে Miss Universe-এর মুকুট নিজের দেশ ভারতে ফিরিয়ে আনতে সফল হন। এর আগে 2000-তে লারা দত্তা এবং 1994-তে বঙ্গললনা সুস্মিতা সেন মিস ইউনিভার্সের খেতাব জিততে সফল হয়েছিলেন। হরনাজ ভারতের তৃতীয় মিস ইউনিভার্স খেতাব জিতেছেন যেখানে ৭৯টি দেশের প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করেন। এটি মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার ৭০তম এডিশন ছিল। ইজরায়েলের Eilat-এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। হরনাজ এই সম্মান জিতে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন।

পঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলায় বাটালা-তে হরনাজের জন্ম। শৈশব থেকেই তাঁর পছন্দ নাচ-গান। স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা করেন চণ্ডীগড় থেকে। এখন পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে তিনি মাস্টার্স করছেন। মাত্র 17 বছর বয়সেই হরনাজ 2017-তে মিস চণ্ডীগড়, 2018-তে মিস ম্যাক্স এমার্জিং স্টার ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ড এবং 2019-এ মিস ইন্ডিয়া পঞ্জাব খেতাব জিতে নেন। এছাড়াও তিনি প্রচুর ফ্যাশন মডেলিং এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। তাঁর পরিবারের আরও তিন সদস্য হলেন মা-বাবা-ভাই।

হরনাজের প্রেরণার প্রধান উৎস হল তাঁর মা, যিনি পেশায় একজন গাইনিকোলজিস্ট। মায়ের দেখাদেখি পুরুষানুক্রমে চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক ভাবধারা ভেঙে বেরিয়ে এসে হরনাজ নিজের মায়ের আয়োজিত হেলথ ক্যাম্পে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। সেখানে গিয়ে মহিলাদের হাইজিন কী-ভাবে তারা মেনটেইন করবে সেই সম্পর্কে ৱুঝিয়েছেন। হরনাজ চণ্ডীগড়ে থাকলেও তাঁর পরিবার কৃষিকার্যের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং কৃষক আন্দোলনে তাঁর পুরো সমর্থন ছিল এবং সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এর মীমাংসা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

শান্ত স্বভাবের মৃদুভাষী হরনাজ মডেলিং শুরু করেন খুব অল্পবয়স থেকেই। বহু বিউটি প্রতিযোগিতাতেও তাঁকে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। এর ফলে তাঁর আত্মবিশ্বাসও বাড়ে। তিনি মনে করেন, মিস ইউনিভার্স খেতাব জেতার পেছনে সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যও অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তাঁর ক্ষেত্রে। মজবুত মেন্টাল হেলথ বজায় রাখতে তিনি রোজ মেডিটেশন এবং যোগ অভ্যাস করেছেন। কয়েকটি পাঞ্জাবি ছবিতেও তিনি অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করেছেন।

সময় পেলেই হরনাজ হর্স রাইডিং, রান্না করা, গান বা লেখার শখও পূরণ করেন। তাঁর পোষ্য সারমেয়টির নাম ‘রজার’। গ্ল্যামার জগৎ বরাবরই হরনাজকে আকর্ষিত করেছে। সুতরাং আশা করা যায় আসছে কয়েক বছরের মধ্যে তাঁকে বলিউডে অভিনয় করতে দেখা যাবে।

হরনাজ সম্পর্কে কয়েকটি মজার তথ্য

  • প্রাণী হোক কিংবা মানুষ, হরনাজ যে কারওরই হুবহু অনুকরণ(mimic) করতে পারেন
  • তিনি একজন ক্লোসেট সিংগার
  • পাঞ্জাবি ভাষায় দোহা লিখতে ভালোবাসেন তিনি
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...