গেল গেল রব তুলছেন ওরা। সমাজ বোধহয় উচ্ছন্নে গেল! প্রকৃতির বিপক্ষে গিয়ে, সমাজের বিপক্ষে গিয়ে এ কী কাণ্ড করছেন সমকামীরা ! কিন্তু ভেবে দেখেছেন কী, এতে দোষটা কার? কোন মানুষটির সেক্সুয়াল চয়েসস কী হবে, তা যেমন পুলিশ, অভিভাবক কিংবা সমাজ ঠিক করে দেবে না, তেমনই ধর্মগুরুরাও ঠিক করবে না। সংবিধানের ২১ ধারা অনুসারে, নিজের মতো করে বাঁচার অধিকার সবার আছে। সেইসঙ্গে, Homosexuality বা বৃহত্তর অর্থে Lesbian, Gay, Bisexuality এবং Transgender -এর জীবনযাপন ও সেক্সুয়াল চয়েসসও যে-কেউ রাখতে পারেন চাইলে। আর আইনমাফিক এই অধিকার ভোগ করা যায় পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়াই।
বিচারপতি এন আনন্দ ভেঙ্কটেশ এমন এক মামলার রায় দিয়েছিলেন বেশ কিছুদিন আগে, যেখানে সেক্সুয়াল চয়েসকে সার্থক রূপ দিতে, বাড়িছাড়া হয়েছিলেন দুই যুবক। তখন পুলিশ জোর করে তাদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার চেষ্টা করেছিল। অভিভাবক, পুলিশ কিংবা চিকিৎসক যদি এই প্রজন্মের রুচি, পছন্দকে সঠিক ভাবে মানবিকতার সঙ্গে উপলব্ধি না করতে পারেন, তাহলে কারওর ব্যক্তিগত সেক্সুয়াল চয়েস-এর ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার অধিকারও তাদের নেই।
বিচারকের স্পষ্ট বক্তব্য, হোমো সেক্সুয়াল এবং লেসবিয়ান হওয়া কোনও অপরাধ নয়। একসঙ্গে তারা যেমন থাকতে পারবেন, ঠিক তেমনই অন্য নাগরিকদের মতো সামাজিক সম্মান পাওয়াও তাদের কাম্য।সমাজে যদি LGBT Community গড়ে ওঠে তাতে কারও হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই৷ দুই সমকামীকে জোর করে চিকিৎসা করানোর বিষয়ে পুলিশের ভূমিকাকে শুধু কড়া ভাষায় নিন্দা করাই নয়, অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে উচ্চ আদালত। সেইসঙ্গে, ভবিষ্যতে ওই যুগল যাতে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।
আসলে সমকামিতা আবহমান কাল ধরে সমাজে থাকলেও, ধর্মের ধ্বজাধারীরা এই বিষয়টিকে কোনও কালেও ভালো চোখে দেখেনি, আজও দেখতে নারাজ। কারণ, এই ধরনের সম্পর্কে উৎসব অনুষ্ঠান হয় না, সন্তান হয় না। আর এসব না হলে, পুরোহিতদের উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে। তাই, তাদের অঙ্গুলিহেলনে সমকামিতাকে তির্যক ভাবে দেখা হয়। ওদের প্রতি ঘৃণা এবং অত্যাচার করা হয়।