সমুদ্র ভালোবাসেন না এমন পর্যটক হয়তো খুঁজলেও পাওয়া যাবে না৷ বিশেষ করে সেটা যদি হয় একটু ভিন্ন ধরনের সমুদ্র৷এবারের গন্তব্য – বগুড়ান জলপাই৷ এই স্পটটি আপনাকে খালি হাতে ফেরাবে না৷ কাঁথি থেকে ১২ কিমি। কলকাতা থেকে গাড়িতে পৌঁছোনো মোটেই কঠিন নয়৷ কারণ দিঘা যাওয়া তো এখন জলভাত৷ তাই সকাল সকাল রওনা দিন৷ একবার পৌঁছে গেলেই কয়েক লক্ষ লাল কাঁকড়ার সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে খেলতে খুঁজে পাবেন পিছাবনি নদী৷নির্জন বিচ, ঘন ঝাউ বনের মধ্যে দিয়ে পিছাবনি নদী অচিরেই মন কেড়ে নেবে৷ আর সবচেয়ে বেশি করে যা মন ভরাবে তা হল নির্জনতা৷দিঘা বা মন্দারমণির মতো গাদা গাদা হোটেল আর পর্যটকের ভিড় নেই এখানে৷বিচের ধারে ঝুপড়ি হোটেলে হাল্কা জলখাবার মিলবে৷আর মিলবে প্রকৃতির সঙ্গে মিতালি পাতানোর দেদার সুযোগ৷
সমুদ্রও কিন্তু বেশ লুকোচুরি খেলায় মাতে বগুড়ান জলপাই-এ৷স্থানীয় লোকেরা জানায় দুপুর ১২ টা ও রাত ১০ টায় বিচের কাছে সমুদ্র আসে। বাকি সময় তার রূপ ধরা পড়ে না৷ বিপত্তি হলো কয়েক কিমি কাদা পেরোনো। গুজরাতের কচ্ছের রানের মতো মাইলের পর মাইল জনহীন প্রান্তর। এখানে নরম কাদায় পা গেঁথে যায়।সেই ভাবেই অনেকটা পথ হেঁটে যাওয়া৷
তবে আর পাঁচটা বিচের মতোই ভোরবেলা হাঁটতে বেশ লাগে এখানেও৷ তাই আগের রাতটা যারা দিঘায় কাটাবেন তাদের পক্ষে সুবিধাজনক হবে৷ কাদায় পা ডুববে, কিন্তু সেটাই তো adventure! নদীর জলের মধ্যে দিয়ে চলুন, কারণ জলের তলায় কাদা কম। ৩ অথবা ৪ কিমি দূরে দিগন্ত আলো করে থমকে দাঁড়ানো গাঢ় কমলা রঙের এক অদ্ভুত সূর্যোদয়ের সাক্ষী হবেন হঠাৎই৷
ভোরের সোনালি আলোয় চকচকে সমুদ্রের দেখা মিলবে। পথে দেখা হবে বেশ কিছু বিচিত্র জলচরের সঙ্গে। জেলেদের সঙ্গে৷ ঝিনুকের টুকিটাকি বিক্রেতাদের সঙ্গে৷নির্জন সমুদ্র আপনাকে নিমেষে আপন করে নেবে৷ মন দেওয়া নেওয়ার পালা সাঙ্গ হলে, ফেরার পথে কিছু ঝিনুক সংগ্রহ করে নিন। তবে মাত্র ৩০ কিমি দূরে মন্দারমণি। সেখানটা ঘুরেই না হয় ফেরার পথ ধরুন৷ বাড়তি সতর্কতা হিসেবে বলি, দয়া করে বিচে গাড়ি চালাবেন না৷ গাড়ি চললে প্রচুর কাঁকড়া বা ছোটো প্রাণী মারা যায়৷ প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার দায় কিন্তু পর্যটকেরও৷