প্রথম আইভিএফ (ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) ব্যবহার হয়েছিল আজ থেকে প্রায় চার দশক আগে। এটি জটিল প্রক্রিয়ার একটি ক্রম, যা গর্ভধারণে সাহায্য করে বা জিনগত সমস্যার সমাধান করে এবং সন্তানের জন্মে সহায়তা করে। এই বিষয়ে সম্প্রতি নানারকম প্রশ্নের উত্তর দিলেন ডা. ঐন্দ্রি সান্যাল।

ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন কী?

এটি একটি সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে প্রাকৃতিক নিয়মে সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম দম্পতিরা সন্তান পেতে পারেন। সাধারণ ভাবে একজন মহিলার শরীরের ভিতরে প্রাকৃতিক নিয়মে ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়। নিষিক্ত ডিম্বাণুটি জরাযুর আস্তরণের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার পর এবং বেড়ে ওঠার প্রায় নয় মাস পরে একটি শিশুর জন্ম হয়। এই প্রক্রিয়াকে প্রাকৃতিক বা সহায়তাবিহীন গর্ভধারণ বলা হয়। বিভিন্ন বিষয়, যেমন আপনার বয়স ও বন্ধ্যাত্বের কারণ ইত্যাদি আইভিএফ-এর মাধ্যমে আপনার একটি স্বাস্থ্যবান শিশুকে জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করে। এছাড়া, আইভিএফ সময় সাপেক্ষ ও এটি অনধিকার প্রবেশমূলক বলে মনে হতে পারে। আইভিএফ প্রক্রিয়ায় একটি স্বাস্থ্যবান সন্তানের জন্মগ্রহণ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যেমন পুরুষ ও মহিলা উভয়ের বয়স এবং তাঁদের বন্ধ্যাত্বের কারণ।

একজন ফার্টিলিটি চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করার আগে কতটা সময় অপেক্ষা করা উচিত?

আপনার বয়স যদি ৩৫ বছরের কম হয় এবং আপনি ১২ মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রাকৃতিক ভাবে গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন, তাহলে আপনার ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে ডিম্বাণুর পরিমাণ ৩৫ বছরের পরে দ্রুত কমতে থাকে। বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে মহিলাদের স্বাস্থ্যকর ডিম্বাণুর সংখ্যা কমতে শুরু করে এবং ৪০ থেকে ৪৫ বছর বয়সের মধ্যে সম্পূর্ণ ভাবে শেষ হয়ে যায়, যার ফলে প্রথমে পেরিমেনোপজ এবং অবশেষে মেনোপজ হয়।

আর আপনার বয়স যদি ৩৫ বছরের বেশি হয় এবং ৬ মাস বা তার বেশি সময় ধরে প্রাকৃতিক ভাবে গর্ভধারণের চেষ্টা করার পরেও ব্যর্থ হয়ে থাকেন, তাহলে দেরি না করে একজন ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তির মাধ্যমেও ৩৫ বছরের বেশি বয়স মহিলাদের পক্ষে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কম থাকে, কারণ বয়স বেশি হলে ডিম্বাণুর মান সর্বোত্তম নাও হতে পারে। আমাদের বয়স যত বাড়ে, অন্যান্য জটিলতাও তত বেশি তৈরি হতে থাকে, যার ফলে ডিম্বাণুর পরিমাণ নিঃশেষ হয়ে যায়।

একজন রোগী আইভিএফ চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত কিনা, তা কী-কী বিষয় থেকে নির্ধারিত হয়?

মায়ের বয়স: আপনার বয়স যত কম হবে, আইভিএফ-এর মাধ্যমে নিজের ডিম্বাণু ব্যবহার করে একটি স্বাস্থ্যবান শিশুর গর্ভধারণ ও জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা ততই বেশি হবে। এমব্রায়োস্কোর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যা ইঙ্গিত করে যে, এমব্রায়ো মরফোলজি আইভিএফ এবং ভ্রূণ স্থানান্তরে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা পালন করে, কারণ গর্ভাবস্থার হার বৃদ্ধি স্থানান্তরিত ভ্রূণের সংখ্যা এবং মানের সঙ্গে সরাসরি সমানুপাতিক। অপরদিকে, খণ্ডিত ভ্রূণ প্রাকৃতিক ভাবে গর্ভধারণ করতে পারে কিন্তু এটি অখণ্ডিত ভ্রূণের তুলনায় কম হয়।

ডিম্বস্ফোটনে সমস্যা: যেসব মহিলারা স্বাভাবিক ভাবে গর্ভধারণ করেন, তাঁদের সাধারণ ও নিয়মিত ডিম্বস্ফোটন, অথবা পরিণত ডিম্বাণু নিঃসরণ প্রয়োজন। একটি মাসিক ক্যালেন্ডার রাখলে বা ওভিউলেশন প্রেডিকশন কিট ব্যবহার করলে আপনার ডিম্বস্ফোটন শনাক্ত করতে সহায়তা হতে পারে।

টিউবাল অবরোধ (ব্লকেজ): যদি দুটি নালীতেই বাধা থাকে, তাহলে ইন-ভিট্রো ফার্টিফাইলেশন (আইভিএফ) প্রয়োজন।

প্রাকৃতিক ভাবে এক বছরের উপরে চেষ্টা করার পরেও কোনও মহিলা গর্ভধারণ না করলে, কী-কী পরীক্ষা অবশ্যই করাতে হবে?

  • রক্ত পরীক্ষা ও বীর্য পরীক্ষা: মহিলাদেহের হরমোন, থাইরয়েড হরমোন, প্রোল্যাক্টিন ও পুরুষদেহের হরমোন এবং এইচআইভি ও হেপাটাইটিসের জন্য রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। শ্রোণীদেশের একটি শারীরিক পরীক্ষা করা হতে পারে ক্ল্যামাইডিয়া, গনোরিয়া বা যৌনাঙ্গের অন্য কোনও সংক্রমণ পরীক্ষা করার জন্য, যেগুলি গর্ভধারণে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। পুরুষসঙ্গীকেও যৌনাঙ্গের সংক্রমণ পরীক্ষা করাতে হতে পারে। চিকিত্সকরা পুরুষদের বীর‌্যের সম্পূর্ণ পরীক্ষার পরামর্শ দেন, যাতে শুক্রাণুর সংখ্যা, আকার ও গতি পরীক্ষা করা যায়।
  • এএমএইচ পরীক্ষা: এই পরীক্ষায় রক্তে অ্যান্টি-মুলেরিয়ান হরমোনের (AMH) মাত্রা পরিমাপ করা হয়। এএমএইচ পুরুষ ও মহিলা উভয়ে প্রজনন টিস্যুতেই তৈরি হয়, যেটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এটি গর্ভাবস্থায় শিশুর যৌনাঙ্গ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা পালন করে।
  • থাইরয়েড পরীক্ষা: এটির মাধ্যমে শুক্রাণুর কার্যকারিতা এবং সার্ভাইকাল মিউকাস-এর মিথষ্ক্রিয়া পরীক্ষা করা হয়।
  • ট্রান্স-ভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসনিক পরীক্ষা (শ্রোণী): আল্ট্রাসাউন্ড, জরাযু ও ডিম্বাশয়ে স্থিতি পরীক্ষা করে।
  • হিস্টেরোস্যালপিঙ্গোগ্রাম: এইচএসজি ডিম্বনালি ও জরাযুর অবরোধ নির্ণয় করতে সাহায্য করে। জরাযু পরীক্ষার ক্ষেত্রে চিকিত্সক সমস্যা নির্ণয়ের জন্য ওই অংশটি দেখেন ও ছবি তোলেন।
  • ল্যাপারোস্কপি: এন্ডোমেট্রিওসিস, নিরাময় ও অন্যান্য অবস্থা নির্ণয়ের জন্য ল্যাপারোস্কোপগুলিকে ছোটোছোটো ছিদ্রের মাধ্যমে তলপেটে প্রবেশ করানো হয়।
  • এন্ডোমেট্রিয়াল বায়োপসি: চিকিৎসক আপনার জরাযুর পর্দার উপরের আস্তরণ স্বাভাবিক আছে কিনা জানার জন্য এটি প্রয়োগ করতে পারেন, যাতে ভ্রূণটিকে ব্যবহার করতে পারে।

চিকিৎসা চলাকালীন কী কী নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে হবে?

  • সবরকম আসক্তি এড়িয়ে চলুন: চিকিৎসা চলাকালীন আপনার সাফল্যের সম্ভাবনা সর্বাধিক করতে ধূমপান, মদ্যপান ও ড্রাগের নেশা থাকলে তা এড়িয়ে চলা অত্যন্ত জরুরি, তাই এগুলিকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।
  • ফ্যালোপিয়ান টিউব অবরুদ্ধ থাকার জন্য বন্ধ্যাত্ব হলে বা পুরুষের বন্ধ্যাত্ব থাকলে, আইভিএফ-ই একমাত্র চিকিৎসা। অন্যান্য ক্ষেত্রে, মহিলার বয়স ও বন্ধ্যাত্বের বছরের সংখ্যাই গুরুত্বপূর্ণ হয়। ভারতীয় মহিলাদের গর্ভাশয় শ্বেতাঙ্গ মহিলাদের থেকে আগে বৃদ্ধ হয়, তাই যখনই তাঁরা তিরিশ বছরের কোটায় পৌঁছে যান, তখন তাঁদের অবশ্যই সক্রিয় ভাবে চিকিৎসা করাতে হয়।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চা আপনার জীবনযাপনের অংশ হওয়া উচিত। অতিরিক্ত ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খেলে কোনও লাভ হবে না। টাটকা ফল ও বাদামের মতো প্রাকৃতিক উপাদান থেকে ভিটামিন গ্রহণ করুন। ভারতে সাধারণত ভিটামিন ডি-এর অভাব ফার্টিলিটিকে প্রভাবিত করতে পারে, তাই খেয়াল রাখুন।

আইভিএফ প্রক্রিয়ায় কত সময় লাগে?

প্রতিটি চক্র কিছুটা আলাদা হতে পারে কিন্তু ফার্টিলাইজেশন ইন-ভিট্রো প্রক্রিয়া সাধারণত ২ থেকে ৬ সপ্তাহ চলে।

আইভিএফ-এর রোগীরা এই চক্রের প্রথম তিনটি সপ্তাহে তাঁদের হরমোনগুলির খেয়াল রাখেন এবং ঋতুস্রাবের সময়ে সামঞ্জস্য বজায় রাখেন। এর ফলে যে-ওষুধ তাঁরা খাচ্ছেন, তা যে কাজ করছে, তা নিশ্চিত হয়। আপনার ফার্টিলিটি ক্লিনিকের চিকিত্সক আপনাকে আইভিএফ-এর জন্য একটি সর্বাঙ্গীণ সময়ে ক্যালেন্ডার এবং ওষুধগুলি লেখা একটা শিট দেবেন।

চিকিৎসার আগে ও চিকিৎসা চলাকালীন কী ধরনের ডায়েট মেনে চলা উচিত?

একটি প্রদাহ-বিরোধী খাদ্যাভ্যাস আইভিএফ-কে সফল করতে সাহায্য করে। এর জন্য প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্টফুড ও চিনি খাওয়া কমানোর চেষ্টা করুন। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, দানাশস্য, ফল ও শাকসবজি, শুদ্ধ প্রোটিন যেমন মাছ, বিনস ও কম ফ্যাটযুক্ত পোলট্রির মাংস প্রদাহবিরোধী ডায়েটের অংশ। ওমেগা-থ্রি সমৃদ্ধ গোটাশস্য, মাছ ও বাদাম স্বাস্থ্যকর এন্ডোমেট্রিয়ামে লক্ষণীয় ভাবে সহায়তা করে। আইভিএফ চলাকালীন মহিলাদের পক্ষে সয়াবিন থেকে তৈরি নানা খাদ্যবস্তু খাওয়া ভালো এবং এগুলি উপকারীও।

একবার আইভিএফ অসফল হলে আরেকবার চেষ্টা করার আগে কতদিন অপেক্ষা করা উচিত?

পরিসংখ্যানগত ভাবে, পরপর চলা চক্রের সাফল্যের হারও কয়েকমাস পরের সাফল্যের হারের মধ্যে কোনও লক্ষণীয় পার্থক্য নেই। গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, সাফল্যের হারের ক্ষেত্রে ব্যর্থতা ও পরবর্তী আইভিএফ চক্রের মধ্যবর্তী সময়কাল নগণ্য। সুতরাং, এটি সম্পূর্ণ ভাবে রোগীর উপর নির্ভর করছে যে তিনি আইভিএফ-এ প্রাথমিক ভাবে ব্যর্থ হওয়ার পরে আবার চেষ্টা করার আগে কতটা সময় অপেক্ষা করতে চান।

তবে মানসিক আঘাত কাটিয়ে ওঠা পর‌্যন্ত তাঁদের অপেক্ষা করা উচিত। সেই কারণে তাঁদের পরবর্তী চেষ্টা করার আগে কিছুদিন অপেক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে তাঁরা যে-কোনও সময় আবার চেষ্টা করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এরই পাশাপাশি তাঁদের একটি স্বাস্থ্যকর ও চিন্তামুক্ত জীবনযাপন করতে হবে এবং আগামীদিনের আনন্দের জন্য তৈরি থাকতে হবে।

আইভিএফ-এর সুবিধা নেওয়ার বয়ঃসীমা কত?

মহিলার বয়স আইভিএফ-এ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা পালন করে। যে-কোনও দম্পতির ক্ষেত্রে এটি আইভিএফ-এর সাফল্যের প্রধান বিষয়। যদি কোনও মহিলার বয়স ৩৫ বছরের কম হয় ও তিনি আইভিএফ-এর সুবিধা গ্রহণ করেন, তাহলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা খুব বেশি হয়। আবার ৪০ বছরের বেশি বয়সি মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কম হয় এবং ফ্যালোপিয়ান টিউব রিভার্সাল বা টেস্টটিউব বেবির মধ্যে বেছে নেওয়া কঠিন হয়ে যায়।

এর ব্যয়, সাফল্যের হার ও প্রজনন সম্বন্ধীয় সমস্যার কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেমন, যদি কোনও দম্পতি একাধিক সন্তান পেতে চান এবং মহিলা কমবয়সি হন, তাহলে টিউবাল ইনভার্সান করা ভালো। যদি কেবল একটি সন্তান চান এবং মহিলার বয়স ৩৫ বছরের বেশি হয়, তাহলে আইভিএফ সবচেয়ে ভালো বিকল্প। ৪২ বা ৪৩ বছর বয়সের বেশি হলে আইভিএফ ও ফ্যালোপিয়ান টিউব রিভার্সালের সাফল্যের হার একই এবং তা খুবই কম। তবে, যদি সবকটি বয়সের সীমাকে বিবেচনা করা হয়, তাহলে আইভিএফ-এর সাফল্যের হার ফ্যালোপিয়ান টিউব রিভার্সালের চেয়ে বেশি। ব্যয়ের দিক থেকে আইভিএফ-এর তুলনায় ফ্যালোপিয়ান টিউব রিভার্সালের খরচ কম।

এর কি কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া আছে?

ইঞ্জেক্ট করা ফার্টিলিটি ওষুধের কয়েকটি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ইঞ্জেকশনের জায়গায় সামান্য ব্যথা ও যন্ত্রণা, গা-গোলানো বা মাঝেমধ্যে বমি। সাময়িক অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ইঞ্জেকশনের জায়গায় ত্বক লাল হওয়া অথবা চুলকানি, স্তনের শিথিলতা, যোনিস্রাব বৃদ্ধি, মুডসুইং ও ক্লান্তি। এছাড়া ওভারিয়ান হাইপারস্টিমুলেশন সিন্ড্রোমও (OHSS-ওএইচএসএস) দেখা যেতে পারে। ওএইচএসএস-এর বেশিরভাগ লক্ষণ (গা-গোলানো, ব্লোটিং, ডিম্বাশয়ে অস্বস্তি) মৃদু হয়। এগুলি সাধারণত ডিম্বাণু সংগ্রহের পরে কিছুদিনের মধ্যে চিকিত্সা ছাড়াই সেরে যায়। গুরুতর ক্ষেত্রে, ওএইচএসএস-এর ফলে তলপেট ও ফুসফুসে প্রচুর পরিমাণে তরল জমতে পারে। এর ফলে বর্ধিত ডিম্বাশয়, ডিহাইড্রেশন, শ্বাসকষ্ট ও তলপেটে ভীষণ যন্ত্রণা হতে পারে। খুব বিরল ক্ষেত্রে (আইভিএফ-এর জন্য ডিম্বাণু সংগ্রহ করা মহিলাদের ১ শতাংশ এরকম), ওএইচএসএস-এর ফলে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে ও কিডনি বিকল হতে পারে।

আইভিএফ-এ আর কী-কী পরীক্ষা করতে হয়?

প্রোল্যাক্টিন পরীক্ষা: প্রোল্যাক্টিন হল স্তন্যদুগ্ধ তৈরি করার জন্য আবশ্যক ও প্রধান হরমোন। এই পরীক্ষার ফলাফল দেখে চিকিৎসকরা প্রত্যেক মহিলার জন্য ওষুধের সঠিক সমন্বয় নির্ধারণ করতে পারেন।

সংক্রামক রোগের স্ক্রিনিং: চিকিৎসকরা রোগীকে এইচআইভি, হেপাটাইটিস-বি, ক্ল্যামাইডিয়া, রুবেলা ও চিকেনপক্সের জন্য পরীক্ষা করতে পারেন। এই সবকটি রোগ বাড়তে থাকা ভ্রূণের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে এবং গুরুতর জটিলতা তৈরি হতে পারে। অন্যান্য বিকল্পের মধ্যে রয়েছে উচ্চ ডিজিটাল ম্যাগনিফিকেশন, যার মাধ্যমে কেবলমাত্র স্বাস্থ্যবান ও সর্বোত্তম শুক্রাণু শরীরে প্রবেশ করানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়।

ফ্যালোপিয়ান টিউব প্যাটেন্সি পরীক্ষা: এই ক্ষেত্রে হিস্টেরো স্যালপিঙ্গোগ্রাফি আল্ট্রাসাউন্ড প্রক্রিয়াটি অনন্য। সাধারণ আল্ট্রাসাউন্ড বা এক্স-রে থেকে জরাযুর অবস্থা এবং ফ্যালোপিয়ান টিউবে বাধা আছে কিনা, তা সঠিক ভাবে দেখা ও মূল্যায়ন করা যায় না।

বীর্য মূল্যায়ন: যদি শুক্রাণুর নমুনা দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে মূল্যায়নের জন্য সেটিকে গবেষণাগারে পাঠানো হয়।

ডা. ঐন্দ্রি সান্যাল,

ফার্টিলিটি কনসালট্যান্ট

নোভা আইভিএফ ফার্টিলিটি, কলকাতা

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...