আমি ৩৫ বছর বয়সি বিবাহিত মহিলা। ১৩ বছরের আমার একটি ছেলে আছে। আমার স্বামী সরকারি কর্মচারী। আমাদের সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়েছিল৷ আমার বাবা খুব ছোটোবেলায় মারা যান৷মা মামার বাড়ির উপর নির্ভরশীল ছিলেন৷ মামারই পছন্দের পাত্রের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়৷
বিয়ের পর থেকেই সুখ পাইনি ৷ঝগড়া অশান্তি লেগেই থাকত৷ রোজই মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি এসে আমার সঙ্গে লড়াই ঝগড়া করেন স্বামী। এখন তো মাঝেমধ্যে গায়ে হাতও তোলেন। বলতে দ্বিধা নেই আমি Domestic Violence-এর শিকার৷
১৫ বছর ধরে খুবই কষ্টে রয়েছি। সমাজে বদনাম হবে বলে আমার মা ও মামারাও আমাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন না। বিয়ের আগে সরকারি স্কুলের টিচার ছিলাম। ইচ্ছে করে, স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে আবার কোথাও টিচারের চাকরি নিই। তাহলেই হয়তো ছেলেকে ঠিক ভাবে মানুষ করতে পারব। আমার মামা রিটায়ার করে গেছেন। তাদের গলগ্রহ হতে চাই না আমি৷নিজের পায়ে দাঁড়ানোটাই শ্রেয়৷ আমি জানি আমার স্বামী আমাকে ডিভোর্স দেবেন না কিন্তু তাতে আমার কিছু এসে যায় না। আমার আলাদা হওয়ার এই ইচ্ছা কি সঠিক?
যদি আপনার মনে হয় আপনার স্বামী শুধরোবেন না তাহলে স্বামীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে এবং সন্তানকে সুস্থ সামাজিক পরিবেশ দিতে আপনি এই স্টেপ নিতেই পারেন।তবে মনে রাখবেন বাইরের জগতের করাল গ্রাস থেকেও নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে৷ Single mother হিসেবে লড়াইটাও সহজ হবে না৷
প্রথমে আপনি নিজের জন্যে চাকরি খুঁজুন। চাকরি পেয়ে থাকার ব্যবস্থা ঠিক করে তবেই নিজের ডিসিশন স্বামীকে জানাবেন। এমনও হতে পারে আপনার চরম ডিসিশন শুনে উনি নিজেকে শোধরাবার চেষ্টা করবেন। অনেক সময় দূরে চলে যাওয়া বা ডিটাচ হওয়ায় সম্পর্কে মধুরতা আবার ফিরে আসে। কিন্তু যদি দেখেন আপনার এই সিদ্ধান্তে ওনার চরিত্রে কোনও পরিবর্তন হল না, তাহলে আর বিলম্ব না করাই উচিত৷
Domestic Violence-এর প্রভাব ছোটোদের মনে এক দীর্ঘমেয়াদি ছাপ সৃষ্টি করে৷ এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে আপনার সন্তানের উপর৷ওর একটা ভালো , সুস্থ পরিবেশ দরকার৷ আপনি নিজে সেই পরিবেশ তৈরি করতে পারেন আলাদা হয়ে গিয়ে, অথবা ওকে কোনও ভালো বোর্ডিং স্কুলেও দিতে পারেন৷ তবে যে-সিদ্ধান্তই নিন, আপনার মন শক্ত রাখবেন৷ কারণ প্রথমিক ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিতে অনেক বাধা আসবে৷