চশমায় ফ্যাশন? কয়েক বছর আগেও ভাবা যেত না। চশমায় মুখের সৌন্দর্য ঢাকা পড়ে সাজটাই হবে মাটি। চশমিশ, চার-চোখোর মতো টিপ্পনী শুনতে হবে আশপাশের মানুষজনের থেকে। অথচ কমজোর দৃষ্টিশক্তির কারণে চশমাটাও মাস্ট।

বর্তমানে চশমা নিয়ে এহেন পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলে গেছে। এখন চশমা শুধুমাত্র দৃষ্টিশক্তিই নয় সৌন্দর্যের পাশাপাশি আপনার ব্যক্তিত্বও বাড়িয়ে তোলার সহায়কও বটে। এককথায় বলা যেতে পারে– এক চশমায় ট্রিপিল ধামাকা। এমনকী আজকাল সেলিব্রিটিরাও নিজেদের মেকওভার বদলানোর সময় অথবা ইন্টেলেকচুয়াল লুক আনতে বিভিন্ন ধরনের চশমা ব্যবহার করছেন।

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশনদুরস্ত চশমা পাওয়া যাচ্ছে। রিমলেস, কালার ফ্রেম, একটু মোটা ধরনের ফ্রেম-সহ আরও বিভিন্ন স্টাইলের চশমা। ফলে আপনার চিকিৎসক চশমার পরামর্শ দিলেও ঘাবড়ে যাওয়ার দিন শেষ। অনায়াসে বেছে নিতে পারেন নিজের মুখের মানানসই যে-কোনও Trendy Eye Glasses।

চশমা বেছে নেওয়ার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার। প্রথম শর্ত, এমন চশমা বাছুন যা আপনার মুখের সৌন্দর্যকে খুব বেশি ঢেকে না দেয়। ট্রেন্ডি স্টাইলিশ চশমার একটা আবেদন রয়েছে। কিন্তু কোনটা আপনার মুখের সঙ্গে যথাযথ মানানসই, তা আপনাকেই বেছে নিতে হবে। চশমার কালার, শেপ এবং স্টাইল সবদিকেই খেয়াল রাখতে হবে। বিরাট কোনও কঠিন কাজ নয় এটা। রকেট সায়েন্স জানার প্রয়োজন নেই।

চোখে পছন্দসই চশমা লাগিয়ে আয়নার সামনে নিজেকে ভালোভাবে দেখে নিন। সঠিক চশমা বেছে নিতে সমস্যা হবে না। নির্বাচন সঠিক না হলে নিজেকেই অস্বস্তিতে পড়তে হবে। মনে রাখবেন এটা আপনার পার্সোনালিটির পরিচায়কও বটে । তাই মুখ অনুপাতে বেঢপ চশমা পরতে যাবেন না, অকারণে ট্রেন্ড ফলো করতে গিয়ে৷চশমা কেনার আগে এগুলি মাথায় রাখুন—

ফ্রেম

মুখের শেপ অনুযায়ী চশমা বাছাই করা উচিত। মুখের শেপ গোল হলে, রাউন্ড শেপের চশমা এড়িয়ে চলুন। কারণ গোল মুখে রাউন্ড ফ্রেমের চশমা পরলে আপনার মুখ আরও গোলাকৃতি দেখাবে। কিছুটা অ্যাঙ্গেল শেপ পারফেক্ট ম্যাচিং। বিশেষত আয়তাকার ফ্রেম অনেক বেশি ভার্সাটাইল। এতে একটা আলাদা স্টাইল-ফান্ডা রয়েছে। গোলাকৃতি তো বটেই, যে-কোনও ধরনের মুখেই চলতে পারে।

এছাড়া লম্বা ও সরু মুখের ক্ষেত্রে রাউন্ড ফ্রেম পারফেক্ট।ডিসপ্লে দেখে কখনও চশমা বাছবেন না। চশমা দেখতে সুন্দর হলেই হবে না, আপনার মুখের সঙ্গে তা কতটা মানানসই, সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

চশমার ফ্রেম বাছার সময় খেয়াল রাখবেন তা যেন আপনার বয়স অনুপাতে আপনাকে বেশি ভারিক্বি না করে তোলে। অবশ্য নিজের লুকটাকে মাঝেমধ্যে বদলাতে চাইলে অতিরিক্ত কয়েকটা চশমা রেখে দিতেই পারেন আপনার ওয়ার্ডরোবে।

কালার

ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ গুরুত্বপূর্ণ। তবে স্কিনের টোন, কোয়ালিটি অনুযায়ী ফ্রেমের কালারের কথাও মাথায় রাখতে হবে। গোলাপি ও সোনালি স্কিন টোনের ক্ষেত্রে গোল্ডেন অথবা ব্রাউন কালারের ফ্রেম গুড চয়েজ। যদি ক্যারি করতে পারেন তাহলে লাল, নীল, সবুজের মতো উজ্জ্বল কালারও বেছে নিতে পারেন।

রং হল ব্যক্তিত্ব প্রকাশের একটা মাধ্যম। সুতরাং বাকিদের সামনে নিজের ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে সঠিক রং বেছে নিন। প্রতিটি রং আলাদা ভাবে অর্থবহ৷কালো সফিসটিকেশন ও মিস্ট্রির প্রকাশ। সিলভার কালার জ্ঞান ও পাণ্ডিত্যের প্রতীক। নিজেকে ইনোসেন্ট ও স্নিগ্ধ দেখাতে পিংক ও পার্পল পারফেক্ট। ভায়োলেট কালারের মধ্যে একটা রাজকীয় ভাব রয়েছে। কিছুটা সেক্সিও। ব্লু ও গ্রিন বন্ধুত্বসুলভ রং। গ্রহণযোগ্যতাও বেশি। রেড হল সেক্সি, বোল্ড ও পাওয়ার-এর প্রতীক। এবার আপনিই ঠিক করুন নিজেকে কীভাবে মেলে ধরবেন।

মেটিরিয়াল

ফ্রেমের উপাদানের বিষয়টি আমরা প্রায়সই গুরুত্ব দিই না। প্লাস্টিকের পাশাপাশি মেটাল-সহ, সব ধরনের ফাইবার ফ্রেম পাওয়া যায়। সাধারণত প্লাস্টিকের তৈরি ফ্রেম মোটা হয়। প্লাস্টিক ফ্রেম বিভিন্ন রঙে পাওয়া যায়। রিমলেস ফ্রেম দারুণ অপশন। আজকাল লাইট ওয়েট হওয়ার কারণে ফাইবার ফ্রেম ভীষণ ভাবে ইন। চশমা নয়, বাকিদের নজর থাকবে আপনার উপরই। অবশ্য ফ্রেম কী ধরনের হবে তা অনেকাংশে নির্ভর করে গ্লাসের ওজনের উপর।

অনেকের লেন্স-এর দিকেও বেশ ঝোঁক রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে লেন্স খুব বেশি ছোটো না হওয়াই ভালো। ছোটো হলে লেন্স-এর ভিশন এরিয়া কম হয়। দেখতে সমস্যা হতে পারে। অনেকে সরু লেন্সের চশমা পরেন। লুক পরিবর্তন করতে মাঝেমধ্যে তা ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু নিয়মিত ব্যবহারের ক্ষেত্রে লেন্সের মাপ যথাযথ হওয়া দরকার। ফ্রেম, কালারের মতোই এটাও ভীষণ জরুরি। অনেকের ট্রানজিশন লেন্সের প্রতিও যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে।

চশমা প্লাস সানগ্লাস

একইসঙ্গে দুটি কাজ সেরে নেওয়া যায়। চশমা নিয়ে আতঙ্কের দিন শেষ।এখন এটি দিয়ে আপনি রোদচশমার সুবিধাও পেতে পারেন৷দুটি বাক্স সঙ্গ বহন করার ঝামেলা নেই৷বারবার বদলানোর প্রয়োজন নেই৷

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...