সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং বা এসএনএস-এর ভালোমন্দ
যে-কোনও এসএনএস-এ যোগদান করার সংগত কারণ হল, এটি আপনাকে অন্যান্য মানুষজনের সঙ্গে যুক্ত হতে সাহায্য করে। ফলত আপনার বন্ধুরা যা করছে, তার সঙ্গে আপনি সামঞ্জস্য ও সমগতি রেখে চলতে পারবেন। এসএনএস জনপ্রিয় হলে আপনি পুরোনো বন্ধু-পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন এমনকী হারানো-বিস্মৃত বন্ধুত্বও ফিরে পেতে পারেন।
পেশাগত প্রয়োজনেও আপনি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং বা এসএনএস, Internet ব্যবহার করতে পারেন। আপনার পেশাগত অবস্থানে আপনি যদি সন্তুষ্ট থাকেন, তাহলে দ্বিতীয় ব্যক্তির পেশায় সুযোগ করে দিতে আপনি সাহায্য করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, এক বন্ধু হয়তো তার প্রোফাইলে উল্লেখ করল, বাড়িতে তার একজন ইন্টিরিয়র ডিজাইনার প্রয়োজন। আপনি হয়তো জানেন এই কাজের জন্য কে দক্ষ। আপনাকে কয়েকটি মেসেজ পাঠাতে হবে, তাহলেই একই সঙ্গে আপনি দুই ব্যক্তিরই উপকার করতে পারবেন।
অনেক এসএনএস, যেমন মাইস্পেস এবং ফেসবুক, বন্ধুদের নিমন্ত্রণ জানাতে বা কোনও অনুষ্ঠান সংগঠন করতে সাহায্য করে। আবার কয়েকটি সাইট কতগুলি নির্ণায়ক, যেমন ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে বন্ধুদের গোষ্ঠী তৈরি করে। ফলে, আপনি সিনেমা দেখার জন্য গ্রুপ-ট্রিপের ব্যবস্থা করলে, স্বামীর বন্ধুদের এসএনএস মারফত জানাতে পারেন।
আপনি যদি হন একজন অভিনেতা, সংগীতশিল্পী বা লেখক, আপনিও এসএনএস ব্যবহার করতে পারেন নিজের কাজের সমৃদ্ধির জন্য। ব্যান্ড বা থিয়েটার কোম্পানিগুলির জন্যও অনেকগুলি সাইট, স্পেশাল পেজ তৈরি করে। ব্যক্তি মানুষ এসএনএস-এর সাহায্যে তাঁর পছন্দের জনপ্রিয় মানুষটির সঙ্গেও কথা বলতে পারেন।
কয়েকটি এসএনএস আবার অ্যাপ্লিকেশন প্ল্যাটফর্মেরও কাজ করে। কুইজ থেকে নানা রকমের খেলা, রেস্তোরাঁ রিভিউ প্রোগ্রামেও অনেক অ্যাপ্লিকেশন পেতে পারেন।
Internet-এর মাধ্যমে Social Networking আপনাকে জেল থেকেও ছাড়িয়ে আনতে পারে। মার্কিন গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট, জেমস কার্লবাক, মিশরে সরকার-বিরোধী র্যালিতে অংশগ্রহণের জন্য, মিশরের পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। নিজের ট্যুইটার ফিড ব্যাকে শুধু সে একটা কথা লিখেছিল, ‘অ্যারেস্টেড’। যারা তাকে ট্যুইটারে ফলো করত, তারা জানল যে বাক বিপদে পড়েছে, তারা মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। তবে শেষপর্যন্ত এদের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন পড়েনি কারণ এর আগেই মিশর পুলিশ, বাককে মুক্তি দেয়।
মন্দ দিকগুলি
সবটাই ঝলমলে রোদ আর গোলাপের কাহিনি নয়। এসএনএস-এর মন্দ দিকও রয়েছে। সম্ভবত, সবচেয়ে বড়ো Social Networking-এর ত্রুটি হল এটি ‘পরিচিতি হরণ’ সহজতর করে। এসএনএস প্রোফাইলে আপনাকে নিজের সম্পর্কে কিছু তথ্য শেয়ার করতে হয়। অনেক সাইটই বলে দেয় কীভাবে তথ্য শেয়ার করবেন। অনেক সাইটই আপনাকে ই-মেল আইডি, জন্মদিন এইসব তথ্য লুকোনোর সুযোগ দেয়। আবার ই-মেল আইডি সুরক্ষিত না রাখলে কিছু মানুষ আপনার নামটি ব্যবহার করে ফেক আইডেন্টিটি তৈরি করতে পারে।
আবার সমস্যা হল এই যে, আপনি যদি নিজের সম্পর্কে কোনও তথ্য সাইটে না দেন, তো বন্ধুরা সাইট মারফত আপনার সম্পর্কে কিছুই জানতে পারবে না। ফলত প্রথমেই এসএনএস-এর উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। আপনি যদি অতিরিক্ত তথ্য শেয়ার করেন, আপনি দেখবেন যে আপনার পরিচয় ব্যবহার করছে অন্য কেউ। ফলে আপনার সামাজিক পরিচিতি ব্যাহত হবে। তারা হয়তো আপনার অর্থনৈতিক বিষয়ে নাক গলাতে পারেন।
আর-একটা বিপদ হল, হ্যাকার-রা Internet-কে মাধ্যম করে মানুষকে অশ্লীল ছবি নিরীক্ষণে বাধ্য করে। এগুলিকে বলা হয় ম্যালিশাস সফ্টওয়্যার বা ম্যালওয়্যার। যেমন ধরুন আপনার বন্ধুর কাছ থেকে আপনি একটা লিংক পেলেন, যেখানে বলা হবে একটি মজার ভিডিয়ো দেখুন। সেখানে আপনাকেও দেখা যাবে। এই লিংকের পরেই একটা মেসেজ আসবে আপনার কাছে যে আপনাকে একটি, ভিডিয়ো প্লেয়ার ইনস্টল করতে হবে, এই ভিডিয়ো ক্লিপিংস দেখতে হলে। কিন্তু এই ভিডিয়ো প্লেয়ারটি আদতে কোনও ভাইরাস বা ট্রোজান হর্স, যা-কিনা আপনার কম্পিউটারের ক্ষতি করতে পারে। একবার যদি কম্পিউটার ইনফেকটেড হয়, তাহলে হ্যাকাররা আপনার বন্ধুদের লিস্ট নিয়ে ম্যালওয়্যার আরও ছড়িয়ে দিতে পারে।
এসএনএস আবার অ্যাডিক্টিভও বটে। আপনি যদি প্রত্যেক এসএনএস মারফত শতাধিক মানুষকে বন্ধু হিসেবে পান, আপনি অনায়াসেই আপডেটেড হয়ে যাবেন। ফলত কোনও ব্যক্তিবিশেষের আপডেট দেখা সম্ভব হবে না। নির্দিষ্ট কোনও কিছু খুঁজে বের করাও মুশকিল হবে।
এর কিছু মন্দের মধ্যে ভালো কথা হল এই যে, Social networkin-এর সুবিধাগুলি অসুবিধার তুলনায় অনেক বেশি। কয়েকটি সুঅভ্যাস দিয়ে আপনি এসএনএস-এর মন্দ দিকগুলি এড়াতে পারেন। সাইন আপ করার আগে সচেতন এবং দায়িত্বশীল হতে ভুলবেন না।
তুলনায় অনেক বেশি। কয়েকটি সুঅভ্যাস দিয়ে আপনি এসএনএস-এর মন্দ দিকগুলি এড়াতে পারেন। সাইন আপ করার আগে সচেতন এবং দায়িত্বশীল হতে ভুলবেন না।