সুখী বিবাহিত জীবনে সেক্স অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান ভারতে শুধুমাত্র পুরুষের যৌন চাহিদাই নয়, প্রাধান্য পাচ্ছে নারীর দৈহিক চাহিদাও। যৌন আকর্ষণে পুরুষকে বিমোহিত করার ঘটনা এখন আর নতুন নয়। স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে যৌন সম্পর্ক, পরিবার পরিকল্পনা ইত্যাদি নিয়ে মত বিনিময়ে এখন শুধু স্বামীর নয়, স্ত্রীরও গুরুত্বপূর্ণ যোগদান রয়েছে।
এ যুগের মেয়েরা মুক্ত কণ্ঠে নিজেদের মতামত জানাতেও দ্বিধা বোধ করছেন না। যৌনসম্পর্কের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী উভয়েই শারীরিক ও মানসিক সন্তুষ্টি পাওয়ার চেষ্টা করেন, যেটা তাদের জীবনের একঘেয়েমি কাটিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত জীবনের আনন্দ এনে দিতে পারে। পরবর্তীকালে ভালোবাসার মানদণ্ড এটাই হয়ে দাঁড়ায় এবং সুখী ও হেলদি ফ্যামিলির চাবিকাঠি লুকিয়ে থাকে পরস্পরের যৌনসম্পর্কেরই উপর। এখন গর্ভবতী মহিলাদের যত্রতত্র এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়ানো এবং কর্মক্ষেত্রে রোজ হাজিরা দেওয়াটা এতটাই পরিচিত একটা চিত্র হয়ে গেছে যে, নতুন করে ভুরু তুলে সেদিকে এখন কেউ আর দৃষ্টিপাত করে না।
অনেক সময় দেখা যায় স্বামী কর্মসূত্রে অন্যত্র থাকে। সেই পরিস্থিতিতে স্ত্রী-কেই বাড়ির পুরো দায়িত্ব পালন করতে হয়। বাড়ির বাইরের কাজ যেমন, বাচ্চাদের পড়াশোনা, স্কুলের নানা ঝামেলা, বিভিন্ন বিলের পেমেন্ট, দোকানবাজার এসব কিছুও স্বামীর অবর্তমানে স্ত্রীকেই ভরে নিতে হয়। এছাড়াও তার নিজস্ব সোশ্যাল লাইফ, বন্ধুবান্ধব, নানারকম পলিটিকাল কাজে যোগদান করা ইত্যাদিও তার জীবনের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য ভাবেই জড়িয়ে থাকে।
আধুনিক গৃহবধূরা সবসময় চাকরি করতে বাড়ির বাইরেই যেতে হবে এমন কনসেপ্ট-এ বিশ্বাস করেন না। নিজেদের সোশ্যাল লাইফ, স্ট্যাটাস, মডেল রোল বজায় রাখার জন্য বাড়িতে বসেই অর্থ উপার্জনের বিভিন্ন পন্থা বেছে নেন। অনেকে সফট টয়, চিত্রকলা, ফুলের বোকে বানিয়ে প্রদর্শন করেন এবং বিক্রিও করেন। আবার ছাত্র-ছাত্রী জোগাড় করে বাড়িতে ব্যাচ বানিয়ে নানা ধরনের বিষয়ের উপর ক্লাসও কনডাক্ট করেন। এর থেকেও অর্থ উপার্জনের এবং স্বাধীন থাকার একটা সহজ রাস্তা অনায়াসে বেরিয়ে আসে আধুনিক নারীদের।
এখন বাড়ির বউরা এতটাই আত্মসচেতন হয়ে গেছেন যে বাড়িতে তাদের স্বামীরাও স্ত্রী-কে খুশি ও আরামে রাখার জন্য, বাড়ির প্রতিটি কাজে শ্রমদান করতে এতটুকু ইতস্তত করেন না। পরিবর্তন এসেছে women’s lifestyle-এ। শিক্ষার দৌলতে এবং সোশ্যাল এক্সপোজারের কারণে এখন মেয়েরা অনেক বেশি ম্যাচিওর হয়ে গেছেন সুতরাং শক্ত হাতে ‘ঘর ও বাহির’ সামলাতে তাদের জুড়ি মেলা ভার।
আধুনিকতা আজ প্রায় প্রতিটি ঘরবসতের পুরোনো চিত্রটা বদলে দিয়েছে ঠিকই কিন্তু গ্রামের চেহারার পরিবর্তন শহরের তুলনায় কম। এখনও সেখানে পুরুষের সমান অধিকার মেয়েদের দেওয়া হয় না। নারীর শিক্ষাগত যোগ্যতার উপরেই নির্ভর করে ফ্যামিলিতে তাকে কোথায় জায়গা দেওয়া হবে।
যে-যত বেশি শিক্ষিত হবে, পরিবারে সেই মেয়ের স্থান তত উপরে। কিন্তু এখনও এমন বহু পরিবার আছে যেখানে পুরুষদের প্রাধান্যই বেশি। এটা খুব পরিষ্কার ভাবেই বুঝিয়ে দেওয়া হয় যে স্বামীর উপস্থিতিই সেখানে প্রধান, তা সেখানে বাড়ির বউরা যতই শিক্ষিত হোক। সেসব পরিবারে মেয়েরা স্বাধীনতা দাবি করতে গেলেই লাগে পরিবারে দ্বন্দ্ব।
ভারতবর্ষের সমাজব্যবস্থা আজও নারীর সঠিক মান স্থাপন করতে পেরেছে কিনা মাঝে মাঝে সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ থাকে। রাস্তায় যেতে-আসতে অনেক সময়েই শুনতে হয়, ‘কীসের জন্য চাকরি করছ যখন তোমার স্বামী এত ভালো উপার্জন করছেন?’ এইসব লোকেদের এটাই মনে হয়, মেয়েরা শুধু চাকরি করে অর্থ উপার্জনের জন্য। অথচ আধুনিক মেয়েরা চাকরি করব বলেই যে মনস্থির করে সেটা ঠিক নয় সবসময়। পড়াশোনা শেষ করার পর নর্মাল ভাবেই মেয়েরা পুরুষদের মতোই চাকরি করতে শুরু করে। এটাই স্বাভাবিক আজ তাদের কাছে।
চাকুরিরতা মহিলা এবং গৃহবধূর মধ্যে আজ আর কোনও তফাত নেই। দিনের শেষে দুজনেই নিজেদের কাজে পারফেক্ট। মনে রাখতে হবে এই নারীই মুখ বন্ধ করে পরিবারের প্রত্যেকের জীবনের ওঠা-নামার সঙ্গে নিজেকে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রাখে। সোনার কাঠি ও রুপোর কাঠির ছোঁয়ায় পরিবারের প্রত্যেককে রূপকথার কাহিনির পাত্র-পাত্রী করে তোলে।