পেশায় আমি একজন কনটেন্ট রাইটার। এর জন্য আমাকে অনেকটা সময় স্ক্রিনের দিকে চোখ রেখে লিখে যেতে হয়। আমার বয়স ২৪ বছর। চোখে এবং মাথায় মাঝেমধ্যেই খুব ব্যথা হয়। এত তাড়াতাড়ি আমি চশমা পরতে চাই না। কীভাবে আমি আমার কাজের ক্ষতি না করে চোখের যত্ন নিতে পারব এবং চোখ সুরক্ষিত রাখব? এমন কোনও এক্সারসাইজ আছে কি যাতে চোখের আরামও হবে আবার চোখের পাওয়ার হওয়াও রোধ করা যাবে? 

যেমন শরীর ফিট রাখতে এক্সারসাইজ করা দরকার তেমনি চোখ ভালো রাখতেও নিয়মিত এক্সারসাইজ করা জরুরি। কিন্তু সচেতনতার অভাবে বেশির ভাগ মানুষ এই ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তাই করেন না। বিশেষ করে যারা সারাদিন পড়া নিয়ে অথবা কম্পিউটার নিয়ে কাজ করেন, তাদের উচিত সারাদিনের কাজের মধ্যে কিছু এক্সারসাইজ করা।

কম্পিউটার ও ল্যাপটপে সমানে কাজ করার ফলে কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোম হয়ে থাকতে পারে। এক তো কম্পিউটার থেকে চোখের দূরত্ব খুব কম থাকে আর দ্বিতীয়ত এতে চোখের মুভমেন্টও খুব কম হয়। চোখ ও মাথা ব্যথা, আবছা দেখা, জ্বালা করা, চোখে জল আসা, চোখে চুলকানি, চোখ শুষ্ক হয়ে পড়া, কাছের জিনিস দেখতে অসুবিধা হওয়া, একটা জিনিসকে দুটো দেখা, অসম্ভব ক্লান্তি অনুভব করা, কাঁধে, ঘাড়ে, কোমরে ব্যথা হওয়া ইত্যাদি কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রোমের খুব সাধারণ লক্ষণ।

এক ঘন্টার বেশি সময় কম্পিউটারে বসে কাজ করবেন না। প্রতি ১ ঘন্টার পর, ১০-১৫ মিনিটের একটা ব্রেক অবশ্যই নেবেন। চোখকে আরাম দেওয়া খুব দরকার। নিজের দুটো হাত একে অপরের সঙ্গে রগড়ান, তাপ উৎপন্ন হলে দুটো হাত চোখের উপর রাখুন। চোখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন কারণ আপনার চোখ এবং মাথা ব্যথার সমস্যা হয়। এছাড়াও অপ্টোমেট্রি শপে গিয়ে মাঝেমধ্যে চোখ পরীক্ষা করানো খুবই জরুরী। কারণ সময় থাকতে পরীক্ষা করালে সামান্য এক্সারসাইজ এবং চোখের ড্রপ দিলেই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। কিন্তু পরীক্ষা করাতে দেরি করলে চোখের পাওয়ার বাড়তে পারে এবং অন্যান্য সমস্যারও সৃষ্টি হতে পারে।

চোখের এক্সারসাইজের জন্য প্রথমে চোখের কয়েক ইঞ্চি দূরে নিজের আঙুল রাখুন। এবার ওই আঙুলের উপর লক্ষ্য স্থির করুন। এই ভাবে কিছুক্ষণ রেখে আঙুল চোখের একেবারে কাছে নিয়ে আসুন। এবার কোনও দূরের বস্তুর উপর লক্ষ্য স্থির করুন। বারবার চোখের পাতা খোলা-বন্ধ করুন। দিনে ৩-৪ বার এই প্রক্রিয়া অভ্যাস করুন এবং তাহলে আপনার চোখও সুস্থ থাকবে।

পরিমল নারাংগ, সিনিয়র কনসালটেন্ট অপ্টোমেট্রিস্ট, পলক অপ্টিকল্স

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...