আসামের বন্যা একটি বিধ্বংসী বিপর্যয়। কারণ, অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে, মোট মৃতের সংখ্যা ১৭৩ এবং ৩০টি জেলায় ২৯.৭০ লক্ষ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ব্রহ্মপুত্র, বেকি, কপিলি, বরাক ও কুশিয়ারা নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে অনেক জায়গা। এরফলে, রাজ্য জুড়ে, ২,৪৫০ টিরও বেশি গ্রাম প্রভাবিত হয়েছে। ৩,০৩,৪৮৪ জন ৫৬৩টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। কাছাড় ছাড়াও নগাঁও ও বারপেটা জেলাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট ১৭টি বাঁধ ভেঙেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক রাস্তা এবং সেতু। ৬৩৩১৪.৭৫ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে, ভেসে গেছে ৭৯৫টি পশুপাখি। বারপেটা, বোঙ্গাইগাঁও, চিরাং, ধুবরি, জোড়হাট, কামরূপ, লখিমপুর, মাজুলি, মরিগাঁও, নলবাড়ি, সোনিতপুর, তিনসুকিয়া এবং উদালগুড়ি থেকে বৃহৎ অঞ্চলে মাটি ক্ষয়ে গেছে। এছাড়াও, কাছাড়, ডিব্রুগড়, উদালগুড়ি এবং তিনসুকিয়া থেকে শহরে বন্যার খবর পাওয়া গেছে।

আসলে বর্ষাকালে বিভিন্ন নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পাড়ে উঠে আসে। জলে ভরাট হয়ে, এই নদীগুলি নদীর তীরসংলগ্ন এলাকা ভাঙতে শুরু করে। এরফলে ঘরবাড়ি ধ্বংস হয় এবং অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন। কাঠের বা  টিনের নৌকা এবং কলাগাছের ভেলা ব্যবহার করে অনেকে কোনওরকমে দৈনন্দিন কাজকর্ম সারেন। এই পরিবহন পদ্ধতি যেমন অপর্যাপ্ত তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ। একসময় বন্যা পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল যে, হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে বিভিন্ন শিবিরে বসবাস করছেন। ফসল পরিবহন করতে না পারায় কৃষকদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। রাস্তাঘাট জলমগ্ন এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বেশিরভাগ গৃহহীন মানুষ ক্যাম্পে বা অস্থায়ী নৌকায় কোনওরকমে বসবাস করছেন। স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা শিশুদের জন্য প্রধান উদ্বেগের বিষয়। কারণ,  শিশুরা বেশিরভাগই অপুষ্টির শিকার। এমনকি বিশুদ্ধ পানীয় জলের সন্ধান করাও একটি বড়ো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ, বেশিরভাগ পানীয় জলের উৎস এখন বন্যার জলে দূষিত।  আর ঠিক এমন পরিস্থিতিতে QMIN আসামের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ৫৭০০০-এরও বেশি খাবার সরবরাহ করেছে। গুয়াহাটির ‘ভিভান্ত’-এর সঙ্গে মিলে আসামের বন্যায় ১৭ টি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে বসবাসকারী পরিবারগুলির জন্য ৫৭,০০০- এরও বেশি খাবার সরবরাহ করেছে রন্ধনসম্পর্কীয় প্ল্যাটফর্ম Qmin-এর সাহায্যে। ইন্ডিয়ান হোটেলস কোম্পানির হিউম্যান রিসোর্সেস বিভাগের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট গৌরব পোখরিয়াল বলেছেন‘IHCL  প্রয়োজনে সবসময় অসহায় মানুষের সেবায় এগিয়ে আসে। তাই এবারও Qmin বন্যাদুর্গত আসামের মানুষদের জন্য  ২৪ দিনে ৫৭০০০ এরও বেশি খাবার বিতরণ করেছে। তবে শুধু এটুকুই নয়, আগামী দিনেও এই মানবিক উদ্দোগ জারি রাখবে বলে জানানো হয়েছে  IHCL-এর পক্ষ থেকে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...