এ যেন বুদ্ধি আর বিবেচনার চ্যালেঞ্জ গেম। সাধ আর সামর্থ্যের ট্র্যাপিজ। হাত ফসকালেই সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ। আপনি গৃহিণী। তাই সংসারের বাজেটও আপনার হাতে। এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দিনকালে, হাঁসফাস অবস্থাটা আপনাকেই সামলাতে হবে দশ হাতে। তাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হল ভেবেচিন্তে, বুদ্ধি খাটিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করা। যেখানে দরকার এবং যতটুকু দরকার ততটাই খরচ করুন। প্রয়োজনে, যে খরচটা না করলেও চলে, সেটা এড়িয়ে চলবার চেষ্টা করুন। এইভাবে বুঝে চলতে পারলে মন্দার বাজারেও আপনাকে আর্থিক চাপ বহন করতে হবে না। আপনাদের সুবিধার্থে কয়েকটি টিপ্স দেওয়া হল যার দ্বারা সহজেই বাজে খরচা করার থেকে নিজেকে সংযত রাখতে পারবেন। আজ প্রথম পর্ব।

বাজেট কম করুন : অমূলক খরচা কমান। দামি জামাকাপড় কেনা, খাবার, ড্রিংক্স, বন্ধুদের সঙ্গে উইকএন্ড পার্টি যত কম করবেন ততই ভালো। ব্যক্তিগত বাজেট ঠিক করে যদি সেইমতো চলা যায়, আপনার আর্থিক সংগতিও বাড়বে। কোথায় আপনার টাকা যাচ্ছে এবং কী খাতে খরচ হচ্ছে বুঝতে সুবিধা হবে। এছাড়াও আপনার ভবিষ্যৎ আর্থিক পরিকাঠামো স্থির করতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না।

ক্রেডিট কার্ড কম ব্যবহার করুন : ক্রেডিট কার্ডের রেট অফ ইন্টারেস্ট খুব বেশি, তাই যত কম এটা ব্যবহার করবেন ততই ভালো। মূলত আপনি যত টাকা কার্ডের মাধ্যমে তুলছেন, তার তিনগুণ বেশি টাকা আপনাকে ফেরত দিতে হচ্ছে। ক্রেডিট কার্ডের বদলে ডেবিট কার্ড ব্যবহার করলেও আপনি সমান সুবিধা পেতে পারেন যদিও যত টাকা আপনার ব্যাংকে রয়েছে তার মধ্যেই আপনি খরচ করতে পারবেন। এর থেকে বেশি টাকা আপনাকে ব্যাংকে ফেরত দিতে হবে না।

বেশি সঞ্চয় করুন : আপনি নিজের ইচ্ছে মতন জীবনযাপন করতে চান অথচ তার জন্য পকেট খালি করে খরচ করতে আগ্রহী নন। এটাই স্বাভাবিক। তাই খরচের আগে সঞ্চয়ের কথা ভাবুন। তিল তিল বিন্দুতে সিন্ধু গড়তে ক্ষতি কি? ভেবেচিন্তে খবরাখবর নিয়ে তবেই অর্থ বিনিয়োগ করুন। সম্ভব হলে সোনা, সম্পত্তি ইত্যাদিতে ইনভেস্ট করতে পারেন। এছাড়াও জীবনবিমা, মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করাটাও বুদ্ধিমানের কাজ, কারণ ভবিষ্যতে এর থেকে অনেক বেশি আর্থিক লাভ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

শপিং-এর নেশা ভালো নয় : শপিং-এর মতো মজা খুবই কম আছে। জীবনকে পুরোপুরি এনজয় করতে হলে শপিং অবশ্যই করা দরকার। কিন্তু শপিং করার আগে খেয়াল রাখতে হবে কোথায় ‘সেল’ চলছে, ফলে কম টাকায়, আপনি জিনিসের উৎকর্ষতার সঙ্গে আপস না করেও অনেককিছু কিনে লাভবানই হবেন। অনেকসময় বিক্রেতারা প্রলোভন দেখিয়ে, ক্রেতাদের আকর্ষিত করতে চায়। সুতরাং সতর্কতার সঙ্গে দেখে নেবেন সত্যিই প্রলোভিত হওয়ার মতো লাভ হচ্ছে কিনা? ফ্ল্যাট স্ক্রিন  টিভির এখনই আপনার প্রয়োজন আছে কি? অথবা বিদেশে হলিডে কাটানোটা আর এক বছর দেরি করলে খুব কি ক্ষতি হয়ে যাবে? ভেবে দেখবেন। কিছু ত্যাগ করতে পারলে লম্বা দৌড়ে আপনি লাভ করতে পারবেন অনেক কিছু। হঠকারিতার বশে কিছু কিনে বসবেন না কারণ ভবিষ্যতে মনে হতে পারে এত তাড়াহুড়ো করে জিনিসটা না কিনলেও চলত।

জ্বালানি বাঁচান : কম দূরত্বের রাস্তা যাওয়ার থাকলে সাইকেলে অথবা পায়ে হেঁটে যাওয়াই ভালো। এতে আপনার জ্বালানির খরচ বাঁচবে, শরীরের অতিরিক্ত মেদও কম হবে এবং আপনাকে সতেজ, তরতাজা রাখতেও সাহায্য করবে। সাইক্লিং এবং হাঁটা ডাক্তারের মতে হার্টের জন্য সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম। জিম যাওয়ার খরচার থেকেও আপনার রেহাই। এ ছাড়া বাড়িতে ব্যবহৃৎ রান্নার গ্যাসও কম পোড়ান। কম আঁচে রান্না করার চেষ্টা করুন এবং অযথা গ্যাস পোড়ানো কমান।

গাড়ির জন্য সমবেত খরচা : কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য পুল কার করতে পারলে ভালো। বাচ্চাকে স্কুলে ছাড়া, সপ্তাহের বাজার করা যদি একসঙ্গে কয়েকজন মিলে করা যায় তাহলে খরচটা সকলের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যায়। এছাড়াও সপ্তাহে প্রতিদিন গাড়ি বার না করে, প্রয়োজন মতো চালালে আপনার খরচ অনেকটা কম হবে। নিজের গাড়ি না থাকলেও পুল কার ব্যবহার করে আপনি সময় এবং অর্থ দুটোরই অপচয় কমাতে পারবেন।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...