শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে মা ও শিশুর মধ্যে গড়ে ওঠে এক অটুট বন্ধন, Mother’s Love সে বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। মায়ের কোমল স্নেহের স্পর্শেই শিশু নিজেকে সব থেকে সুরক্ষিত মনে করে।

শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে তার সুরক্ষার পুরো দাযিত্ব মা নিজের হাতে তুলে নেয় এবং দাযিত্ব সামলাতে সামলাতেই শিশুর প্রতিটি প্রয়োজন তার নখদর্পণে হয়ে ওঠে। নিজের উপর পূর্ণ আস্থা রেখে মা তার সন্তানকে সবদিক থেকে সুরক্ষা দিতে নিজেকে প্রস্তুত করে তোলে। স্নান করানো থেকে শুরু করে তাকে খাওয়ানো, ঘুম পারান, ব্যথায় স্নেহের প্রলেপ লাগানো সবই মা নিজের দায়িত্ব মনে করে পালন করেন। খাওয়া, ঘুম বাদ দিয়েও সর্বক্ষণের জন্য মায়ের নজর থাকে সন্তানের দেখভালের উপর। অতিরিক্ত গরমে শিশুর জাতে কষ্ট না হয় বা খেলনা নিয়ে খেলতে গিয়ে দুধের শিশু যাতে নিজের কোনও ক্ষতি না করে ফেলে তার প্রতিও থাকে মায়ের সজাগ দৃষ্টি। তাই বাচ্চাকে মানুষ করতে একজন নতুন মায়ের দরকার সর্বপ্রথম নিজের কনফিডেন্স গড়ে তোলা।

বাচ্চার ঘামাচি হলে

গরমের মরশুমে বাচ্চাদের ঘামাচির সমস্যা হয়ে থাকে। তবে সাবধানতা অবলম্বন করলে ঘামাচি রোধ করা সম্ভব।

  • গরমের সময় বাচ্চাকে ঢিলে এবং মোলায়েম সুতির পোশাক পরান। ত্বকে ফুটবে এমন কোনও পোশাক বাচ্চার জন্য বাছবেন না।
  • বাচ্চার জন্য সবধরনের ট্যালকম পাউডার উপযুক্ত নয়। খালি রাইস স্টার্চ-যুক্ত পাউডারই লাগাবেন যাতে বাচ্চাকে ফুসকুড়ি এবং র‌্যাশেজ থেকে বাঁচানো যায়।
  • যেখানে ঘামাচি হয়েছে সেখানে সারাদিনে ২ থেকে ৩ বার পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে দিন বা স্পঞ্জ করে দিন।
  • বাচ্চার জন্য অত্যন্ত সুগন্ধি সাবান বা তেল ব্যবহার করবেন না কারণ এতে কেমিক্যাল থাকে যেটা বাচ্চার স্পর্শকাতর ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।

কনফিডেন্ট হয়ে বাচ্চার মাসাজ করুন

মা নিজের উপর বিশ্বাস রেখে নিজেই শিশুর মালিশ করতে পারেন যদি সঠিক পদ্ধতি মেনে চলেন :

  • বাচ্চার পা থেকে মালিশ শুরু করুন। হাতে তেল নিয়ে থাই থেকে মালিশ করা শুরু করে ক্রমশ নীচের দিকে নামুন।
  • বাচ্চার হাঁটু, গোড়ালি সর্বত্র মালিশ করুন। পায়ে আঙুল চক্রাকারে ঘোরান।
  • বাচ্চার হাত-বুক-পিঠ মালিশ করুন।
  • মালিশ করতে করতে বাচ্চা যদি কাঁদে, তাহলে কোলে নিয়ে বাচ্চাকে চুপ করান। দুধ খাওয়ার পর বা বাচ্চার শোওয়ার সময় মালিশ করবেন না।

খেলনার প্রতিও সজাগ দৃষ্টি রাখুন

শিশুর জন্মের পর শুধু তার মা-বাবাই নয়, সকলেই বাচ্চার জন্য খেলনা কিনে থাকেন। বাচ্চার ঘর ভরে যায় খেলনায় ঠিকই কিন্তু এর মধ্যে সব খেলনাই ভালো কোয়ালিটির হয় না। এই ক্ষেত্রে মা-কে জানতে হবে, কোন খেলনা শিশুকে দেওয়া যেতে পারে।

  • বাচ্চার খাটের সঙ্গে লাগানো যায় সেরকম ঝুলন্ত র‌্যাটল যাতে রঙিন ছোটো ছোটো হাতি, ঘোড়া, বাঘ, ভাল্লুক ইত্যাদি ঝোলানো থাকে সেটি বাচ্চাদের জন্য খুব ভালো। এটা দেখে বাচ্চা আনন্দ পায় এবং চোখের দৃষ্টির মাধ্যমে বাচ্চার কনসেনট্রেশনও বাড়ে।
  • অনেক খেলনায় ঘন্টা লাগানো থাকে। প্লাস্টিকের একটা রিং-এর মধ্যে ঘন্টাগুলো থাকে। খেলনাটা খুব নরমও হয়। হাওয়ায় যখন ঘন্টাগুলো নড়ে তখন তার থেকে মিষ্টি টুংটাং আওয়াজ হয়, যেটা শুনতে শুনতে বাচ্চা কান্না ভুলে চুপ হয়ে যায়।

এছাড়া বয়স অনুপাতে বাচ্চাদের খেলনাও নানা রকমের হয়ে থাকে। তবে খেয়াল রাখা দরকার বাচ্চার খেলনা যেন নরম হয় এবং কোনওরকম শার্প কোণ যেন না থাকে। কাপড়ের তৈরি খেলনা বা ভালো কোয়ালিটির রাবার অথবা প্লাস্টিকের তৈরি খেলনাই বাচ্চাকে দেওয়া উচিত। যেটা বাচ্চা মুখে দিলেও তার কোনওরকম ক্ষতি হবে না।

  • বাচ্চাদের হাতে খেলনা দেওয়ার আগে বড়োদের উচিত নিজেদের সেটা একবার পরীক্ষা করে নেওয়া। সঠিক মনে হলে তবেই বাচ্চার হাতে দেবেন।

বাচ্চাদের খাবার ওগরানো

  • ৩-৪ মাস পর্যন্ত বাচ্চাদের মুখ থেকে লালা পড়ে। বিশেষ করে দুধ খাওয়াবার সঙ্গে সঙ্গে মুখ থেকে দুধ ওগরাতে থাকে।
  • দুধ খাওয়াবার পরে পরেই বাচ্চার সঙ্গে খেলা করা উচিত নয় বা বাচ্চাকে বেশি নাড়ানো ঝাঁকানো উচিত নয়। দুধ খাওয়াবার পর বাচ্চাকে কাঁধে ফেলে ধীরে ধীরে পিঠ চাপড়ানো দরকার যাতে বাচ্চার তাড়াতাড়ি ঢেঁকুর ওঠে এবং এতে দুধ হজম হতেও সুবিধা হয়।
  • অনেক সময় ঠান্ডা দুধ খাওয়ালেও বাচ্চা মুখ থেকে দুধ তোলে কারণ বাচ্চার ঠান্ডা দুধ খেতে ভালো লাগে না।
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...