ত্বকের যত্ন বা নিজের রূপ নিয়ে সবসময়ই আমরা সতেচন থাকি৷ ঠিক কী করলে আরও ভালো ও সুন্দর হয়ে ওঠা যায়, সেই চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠি৷ প্রতিটা পদে পদে নতুন কিছুর সন্ধান করি যাতে দীর্ঘ দিন যৌবন অটুট রাখা যায়৷কিন্তু অনেক সময় আমরা যে-ভুলটা করি, তা হল, অতিরিক্ত গরম জলে স্নান করা। এর ফলে ত্বক তার স্বাভাবিক তৈলাক্তভাব হারায়। তাই খেয়াল করুন স্নানের জল যেন ঈষদুষ্ণ থাকে, আর তাতে মিশিয়ে নিন কিছু এসেনশিয়াল অয়েল।এর ফলে ত্বকের জৌলুস ফুটে উঠবে, healthy young skin বজায় থাকবে৷।
দীর্ঘ–মেয়াদি রূপটান
চুলে বা মুখের Mask নেওয়ার সময় আপনার চুলের এবং ত্বকের প্রকৃতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন। তারপর সেই মতো ড্রাই বা অয়েলি টাইপ মাস্ক ব্যবহার করুন।
রাতে শুতে যাওয়ার আগে অবশ্যই মেক-আপ তুলে নেবেন, তারপর আপনার ত্বকের উপযুক্ত নাইট-ক্রিম ব্যবহার করুন। দেখে নেবেন সেই ক্রিমে যেন ড্যামেজ রিপেয়ার আর রিংকল কন্ট্রোলের গুণাগুণ থাকে।
চুল আপনার সৌন্দর্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সুতরাং প্রতিবার বিউটি স্যালনে গিয়ে ব্লো ড্রাই করার পর বা হেয়ার সেটিং করার পর, চুলের এক্সট্রা যত্ন নিতে ভুলবেন না। চুলের পুষ্টি দরকার শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচাতে। তাই চুলের উপযোগী হেয়ার প্যাক লাগান ও শ্যাম্পু করার পর অবশ্যই কন্ডিশন করুন। চুলে হেয়ার কালার করিয়ে থাকলে বা স্ট্রেটনার ব্যবহার করে থাকলে, চুলে নরমভাব আনতে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
ডায়েটের দিকেও নজর দিন। সহজে হজম হয় এমন খাবার খান। প্রচুর জল খান, টাটকা ফল, বাদাম, দই, গমের দানা প্রভৃতি আপনার রোজকার খাদ্য-তালিকায় রাখুন। মহিলারা তাদের ব্যস্ত জীবনশৈলীর কারণে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে খুব বেশি মনোযোগী হতে পারেন না। কোনও একটি খাদ্যের মধ্যেই যদি থাকে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, ত্বক তরতাজা রাখা এবং বলিরেখা কমানোর গুণ, তাহলে একাধারে সব সমস্যাই মেটে। এমনই একটি খাদ্যগুণ বিশিষ্ট ফল হল শুকনো খেজুর। অ্যান্টি-এজিং ময়েশ্চারাইজার প্রাকৃতিক ভাবেই এর মধ্যে রয়েছে। তাই যৌবন ধরে রাখতে এটির জুড়ি নেই। মাত্র ৪-টি শুকনো খেজুরেই আপনি পেয়ে যাবেন ৪৮টি পেস্তা, ফল-সবজি আর ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট-এর গুণ। সেই সঙ্গে কমবে অ্যান্টি-এজিং ক্রিম লাগানোর হ্যাপাও।
জরুরি টিপ্স
হাঁটার মতো ভালো ব্যায়াম আর নেই। সকালে বা বিকালে হাঁটার অভ্যাস বজায় রাখুন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে গোড়ালি উঁচু করে, যেন মাথায় একটি বইয়ের বান্ডিল নিয়ে হাঁটছেন, এমনভাবে হাঁটার চেষ্টা করুন। এটি অত্যন্ত ভালো ব্যায়াম যা আপনার দেহের স্ট্রাকচার ঋজু রাখবে। কাঁচা শাক-সবজি খাওয়ার একটি সুফল আছে। এতে আপনি জিনিসটির খাদ্যগুণ পুরোমাত্রায় পেতে পারেন। তাই গ্রিন স্যালাড, ফ্রুট স্যালাড প্রভৃতি আপনার ডায়েট-এ রাখুন। এগুলি ত্বক-কে স্বাস্থ্যেজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে। শরীরে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট তৈরিতেও এগুলি সাহায্য করে। তাই ফ্রেশ শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করুন, ক্যান-বন্দি খাবার এড়িয়ে চলুন।
আইসক্রিম বা চকোলেট মাঝেমধ্যে খেতে পারেন কিন্তু চিপ্স আর কুকিজ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। জাংক ফুড শুধুমাত্র আপনার এনার্জি লেভেল কমিয়েই দেবে না, উপরন্তু তা শরীরের মধ্যে অনেক অপ্রয়োজনীয় জিনিস যেমন এক্সেস ফ্যাট সঞ্চয় করবে। তাই হালকা খাবার খান কিন্তু তা যেন খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ খাবার হয়। আয়রন, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ফাইবার, সবকিছুরই আলাদা আলাদা গুণাগুণ আছে। অল্প পরিমাণে পেস্তা ওজন কমাতে যেমন সাহায্য করবে ঠিক তেমনি শরীরের প্রয়োজনীয় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড-এরও জোগান দেবে।
ব্রেকফাস্টে একটি সিরিয়াল, দুপুরের খাবারে স্যালাড ও দই এবং রাতে একটি হেলথ্ ড্রিংক অবশ্যই খান। শুধু সুন্দর ত্বক আর চুল নয়– নিজেকে চিরযৌবনা করে রাখার এটাই হল আসল সিক্রেট।