আমি খুব সমস্যায় পড়ে আজ এই কথা আপনাদের জানাচ্ছি৷ আমার স্বামী অল্প বয়সে মারা যাওয়ার পরও আমি শ্বশুর বাড়িতেই থাকি৷ যৌথ পরিবার আমাদের৷ আমি উপার্জন করি না৷ আমার মেয়ের বয়স দশ৷ আমার মা-বাবা না থাকায়, স্বামীর মৃত্যুর পর মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই রয়ে গেছি৷ একদিন মেয়ে আমায় বলল ওর কাকা ওর সাথে খুব খারাপ কাজ করেছে। আমি খুব অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, তোমাকে কি উনি মেরেছেন নাকি বকেছেন? এর উত্তরে ও যা বলল, তা শুনে সত্যিকথা বলতে অবাক না হয়ে পারিনি। ও বলেছিল, ওর কাকা নাকি ওকে দিয়ে নানা ভাবে তার যৌনঅঙ্গগুলি স্পর্শ করতে বাধ্য করে৷ এই কথাটি কাউকে বলতে পারিনি। শুধু নোংরা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে, ঘৃণায় গা গুলিয়ে উঠেছিল।
দিনের পর দিন চলছে এই অত্যাচার।আমি বাড়ি থেকে বেরোলেই, মেয়েকে তার ঘরে ডেকে নিয়ে যান ওর কাকা এবং খারাপ কাজে লিপ্ত করান৷ আমি কীভাবে এর প্রতিবাদ করব বুঝতে পারছি না৷ আমায় ওরা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে কোথায় যাব, ভেবে পিছিয়ে আসি৷
এরকম বাজে অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকেরই হয়েছে, কিন্তু সমাজ, সংসার ও নিজের সম্মানের কথা বিবেচনা করে আমরা কেউ মুখ খুলি না । আর মুখ খুলি না বলে অপরাধ ও অপরাধীরা দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন একটি লুকিয়ে রাখা সমস্যা। কারণ এখানে এসব নিয়ে চুপচাপ থাকার একটি সংস্কৃতি রয়েছে। কিন্তু মা হিয়েবে আপনার উচিত এই ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা। অভিযুক্ত, পরিবারের সদস্য হলেও।
শিশুদেরও সেফ টাচ আর আনসেফ টাচ সম্পর্কে চেনান। আগে এটিকে গুড টাচ, ব্যাট টাচ বলা হত। কিন্তু এর সঙ্গে একটা নৈতিকতা জড়িয়ে থাকত। যার জেরে তারা অনেক সময় নির্যাতন নিয়ে অভিযোগ জানাতেন না।
সবথেকে বড়ো কথা ওই তথাকথিত পরিবারের সম্মানের তুলনায় শিশুর সুরক্ষার উপর জোর দিন। এ ব্যাপারে পরিবারের গুরুজনদের সাহায্য নিতে হবে৷ এই ধরনের নির্যাতন হলে তা আপনার কন্যার মনে সারা জীবনের মতো একটি ভীতির সঞ্চার করবে। পরিবারের সদস্য হলেও তার এই অপরাধ প্রবণতার কথা পরিবারের বাকিদের জানাতে হবে।
যদি তাতেও দেখেন সমাধান হল না, বহু এনজিও এখন এই ধরনের ইসুতে কাজ করছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ পুলিশের হেল্পলাইন নম্বরেও যোগাযোগ করতে পারেন৷
তবে বিষয়টি আর বাড়তে দেবেন না৷ এতে আপনার ও আপনার মেয়ের, উভয়েরই জীবন নষ্ট হচ্ছে৷ দোষীকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া দরকার, না হলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়বে৷ আপনারা দুর্বল ভেবে সে আরও পেয়ে বসবে৷