একাকিত্বের অনুভূতি কষ্টকর হলেও, সেটা জয় করা কঠিন নয়৷ এই পৃথিবীতে অনেকেই নিজের ইচ্ছেতে বা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষীতে সঙ্গীহীন৷ গত দুবছরে কোভিডের ঢেউয়ে অনেকে প্রিয়জন বা জীবনবঙ্গীকে হারিয়েছেন৷ কিন্তু জীবন তো থেমে থাকে না৷ তাই কষ্ট ভুলে আবার উঠে দাঁড়াতেও হয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে নেওয়ার, overcoming loneliness -এর কিছু পরামর্শ দিচ্ছি আমরা৷
মনখারাপকে জয় করতে হলে
নিজে কী করতে চান, সেটা আপনাকেই স্থির করতে হবে। অন্য কেউ কিছু করছে বলেই যে আপনাকে তার অনুকরণ করতে হবে, তেমন নয়। আপনার বিশেষ গুণগুলিকে আগে চিহ্নিত করুন। আপনার ইন্টারেস্ট-এর বিষয়গুলিতে জোর দিন। অপূর্ণ ইচ্ছাপূরণের জন্য কিন্তু প্রভূত মানসিক জোর লাগে। সেই জোর আগে মনে মনে একত্রিত করুন। তারপর যা সংকল্প করছেন, সেদিকে পা বাড়ান।
নিজের মতামতের বিষয়ে নিশ্চিত হোন
যে-কোনও বিষয়ে নিজেকে আপগ্রেড করার মধ্যে লজ্জার কিছু নেই। ইন্টারনেট-এর সাহায্য নিন। দ্বিধা কাটিয়ে তারপর ফিল্ড-এ নামুন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই হাতেকলমে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার মূল্য আছে। এর ফলে যে-কোনও বিষয়ে ভালো-মন্দ সম্পর্কে আপনার সম্যক জ্ঞান লাভ হবে। আপনার আগে যারা কোনও কাজে উদ্যোগ নিয়েছেন, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এর দ্বারা তাদের সঙ্গে পরিচিত হোন। এতে আপনার যোগাযোগের পরিধিটাও বাড়বে। কীভাবে আপনি এগোবেন, তাদের পরামর্শ নিয়ে এরপর নিজের কাজের একটি রূপরেখা তৈরি করুন। যদি ব্যাংক লোন নেওয়ার প্রয়োজন হয়, নিজের প্রোজেক্ট-টি গুছিয়ে লিখে ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাঁর সাহায্য চান আর্থিক সহায়তার জন্য।
মনে রাখবেন যে-কোনও কাজের শুরুতে অনেক বাধা, অনেক প্রতিবন্ধকতা আসে। ভয় পেয়ে বা হতাশ হয়ে হাল ছাড়লে চলবে না। অনেকেই আছেন যারা অর্থের অভাবে বিউটি পার্লার খুলতে না পারলেও বাড়ি থেকে বিজনেস কনট্যাক্ট তৈরি করে কনে সাজানোর অর্ডার নেন। এভাবেও কিন্তু শুরু করা যায় মূলধন না থাকলেও।
স্বপ্ন দেখতে সংকোচ কীসের?
মনে রাখবেন কোনও কিছু শুরু করতে গেলে বয়সটা কিন্তু আদৌ কোনও ফ্যাক্টর নয়। লোকলজ্জার ভয়ে পিছিয়ে আসবেন না। আত্মবিশ্বাসই হল সাফল্যের মন্ত্র। আপনি চাইলে যে-কোনও বয়সেই আপনার পছন্দের কাজ শুরু করতে পারেন। আপনার অধরা স্বপ্নকে ছোঁওয়া সত্যিই অসম্ভব নয়। মনের জোরে মানুষ কী না পারে! ঝুঁকি সব কাজে থাকে। যদি বিফলও হন প্রাথমিক ভাবে, তাহলেও ভেঙে পড়লে চলবে না। নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিন। দেখবেন পরের বার সাফল্যের সোপান স্পর্শ করা আর ততটা অসম্ভব মনে হবে না।
চারপাশে চোখ রাখলেই জানতে পারবেন এমন কত শত মানুষের কথা। কেউ বিকলাঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও এভারেস্ট জয় করেছেন। কেউ ক্যানসারের মতো মারণ ব্যাধি জয় করেও চালিয়ে যাচ্ছেন সাফল্যের জয়যাত্রা। কেউ দৃষ্টিহীন হয়ে থেমে থাকেননি, ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে প্রমাণ করেছেন জীবনে কিছুই অসম্ভব নয়।
স্বপ্ন দেখলে তা সফল করার তাগিদও অনুভব করতে হবে। থেমে যেতে যেতে একবার যদি ঘুরে দাঁড়ান, নতুন করে পথ চলা শুরু করেন দেখবেন স্বপ্ন আপনার হাতের মুঠোয় ধরা দেবে।