চিরকালই ফ্যাশনের দুটি ধারা বহমান। ট্র‌্যাডিশনাল ও ফিউশন। মানুষও এই দুই ধারায় পোশাক পরতে বেশি পছন্দ করে। অনেকেই বেশিরভাগ সময় পোশাকে ট্র‌্যাডিশনাল ধারা বজায় রাখার চেষ্টা করেন। উৎসবে,পার্বণে ভারতীয় সংস্কৃতি ধরে রাখেন। কিন্তু এখন বেশিরভাগ তরুণ-তরুণী সময়ের সঙ্গে নিজের বসন-ভূষণে পরিবর্তন পছন্দ করছেন। আমাদের দেশে সেই ধারাটা অব্যাহত আছে। আগামীতেও থাকবে।

বছরজুড়েই ফ্যাশন ট্রেন্ডে বৈচিত্র‌্যময় ফ্যাশন নিয়ে আধুনিক কনসেপ্টকে উপজীব্য করে নানা ফর্মে পোশাকে ডিজাইন করেন ডিজাইনাররা। স্টাইল এবং ফ্যাশন বজায় রেখে শৈল্পিক প্রতিভা ফুটিয়ে তোলার কাজটি সহজ নয়। বিষেশত যখন প্রতিটি মানুষের রুচি আলাদা। ফ্যাশনে এখন ফিউশনের জয়জয়কার। এটা গ্লোবালাইজেশনের একটা প্রভাব। গত কয়েক বছরের ফ্যাশনের দিকে তাকালে বোঝা যায়, পোশাকের চেয়ে বেশি পরিবর্তন এসেছে পোশাকের অলংকরণে।

ক্রমশ ফ্যাব্রিকের ধরনটাও বদলে যাচ্ছে। ক্রেতারা নতুন নতুন ফ্যাব্রিক চাইছেন। ডিজাইনাররাও প্রতিনিয়ত নতুন ফ্যাব্রিক নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন। আরেকটা দিক বদলাচ্ছে, সেটা হলো কাট-প্যাটার্ন। শুধু আমাদের দেশে নয়, বহির্বিশ্বের ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

ভারতীয় মেয়েরা মূলত তিন ধরনের পোশাক পরেন–শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ ও টপস-জিন্স। অনেকেই মনে করেন শাড়ি পরা অনেকটাই কমে গেছে। আসলে রেগুলার শাড়ি পরা হয়তো কিছুটা কমেছে; কিন্তু যে-কোনও উত্সব-পার্বণ বা জন্মদিনের মতো ঘরোয়া কোনও অনুষ্ঠানে তরুণীরা শাড়ি পরতে ভালোবাসেন। সালোয়ার-কামিজ অনেক দিন ধরেই পরছেন মেয়েরা। কিন্তু এর বদলে টপস বা সিঙ্গল কামিজে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন কলেজ তরুণীরা। এর দুটি কারণ। প্রথমত, টপ বা সিঙ্গল কামিজ, লেগিংস, পালাজো বা প্যান্ট যে-কোনও কিছুর সঙ্গে অনায়াসেই পরা যায়। অন্যদিকে থ্রি পিসের চেয়ে এটা বেশ সাশ্রয়ী। রেগুলার ড্রেস হিসেবে টপস, টি-শার্ট, জিন্সের দিক থেকে মুখ ফেরানো কঠিন।

গরমে একটু ঢিলেঢালা পোশাকের প্রতি আগ্রহ থাকবে তরুণ-তরুণীদের। ফ্লোরাল মোটিফ, জিওমেট্রিক মোটিফের নানা ব্যবহার দেখা যায় গ্রীষ্ম-পোশাকে। অনুষ্ঠানের পোশাকের ফ্যাব্রিকের মধ্যে কটনের পাশাপাশি কাতান, সিল্ক, হাফ সিল্ক এসব বেশ চলছে আজকাল। বৈচিত্র‌্যময় লং ড্রেসও বাজারে এখন জনপ্রিয়। নাইট পার্টির পোশাক হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে স্লিটেড শিমারি গাউন। সামার ক্যাজুয়েস-এর পাশাপাশি একটু ফর্মাল এবং ফিউশনই এখন ইন।

আজকাল বেশকিছু পরিবর্তন এসেছে বাঙালি বিয়ের রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠানে। আসলে বাঙালিরা নিজেদের ধারাবাহিক রীতি-নীতির সঙ্গে এখন মিশিয়ে ফেলেছে অবাঙালি সংস্কৃতিকেও। তাই লেহঙ্গার সঙ্গে শর্টটপ-এর ফিউশনও এখন ওয়েডিং ফ্যাশনে ইন। এছাড়া ট্র‌্যাডিশনাল লেহঙ্গা তো আছেই। কেউ কেউ আবার বিয়ে অনুষ্ঠানে পরতে পছন্দ করেন শরারা, ঘরারা। নাচের তালে ঘেরদার পোশাক বেশ আকষর্ণীয় হয়ে উঠবে। সেইসঙ্গে, পুরোপুরি এথনিক জামাকাপড়ও চলতে পারে। সিকুইন্স, গোটাপত্তি, জারদৌসির কাজ করা পোশাকও নজর কাড়তে পারে বিয়ে অনুষ্ঠানে। এছাড়া, প্রিন্টও এখন ফ্যাশনে ইন। তবে একটু হালকা প্রিন্ট-ই বেশি ভালো লাগবে।

প্রি-ওয়েডিং পার্টিতে চলতে পারে ওযে্টার্ন শর্ট ড্রেস বা গাউন। যেহেতু পার্টি মানেই একটু আলো-আঁধারি পরিবেশ, তাই একটু ব্রাইট টোনের পোশাক পরাই ভালো। চলতে পারে শিমারি পোশাক। ব্ল্যাক, নেভি ব্লু কিংবা ডিপ পার্পল রং এড়িয়ে চলবেন এক্ষেত্রে। পরিবর্তে, কোবাল্ট ব্লু, রয়াল ব্লু, এমারেল্ড গ্রিন বা রেড কালারের পোশাক পরুন। স্ট্রাইকিং কালার্স মেক ইউ স্ট্যান্ড আউট।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...