বিয়ের আচার অনুষ্ঠানে গায়ে হলুদও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই গায়ে হলুদে তেমন দামি শাড়ি পরা হয় না, তাই ফুলের সাজ সমেত তাঁতের শাড়িই ভালো। এখন আবার অনেকে ফুলের চুড়ি, খোঁপা এসবেও নজর কাড়ছেন বিয়েতে।

আসলে, এখন দুরকম ওয়েডিং ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে। একদল বিয়েতে লাল বেনারসি পরতেই পছন্দ করছেন। আবার কেউ কেউ এখন টম্যাটো রঙের বা আগুন রঙের কাঞ্জিভরম পরতে চাইছেন।

টিপিক্যাল বাঙালি বউ হিসাবে যারা সাজতে চাইছেন, তারা এখন শাড়ির বর্ডারে হেভি কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। অর্থাৎ, শাড়িটা অ্যাজ ইট ইজ রেখে, বর্ডার আর ব্লাউজ-এ হেভি এমব্রয়ডারি করাতে পছন্দ করছেন। নর্মালি যে-ব্লাউজ পিস থাকে বেনারসির সঙ্গে, সেটা না বানিয়ে গোল্ডেন টিশু বা র-সিল্কের উপর আলাদা কোনও রঙের ব্লাউজ তৈরি করিয়ে নিচ্ছেন উইথ হেভি ওয়ার্ক। কেউ কেউ আবার স্যাটিনের রেড ব্লাউজ পছন্দ করছেন। বেনারসিতে যে-মোটিফ থাকে, সেটাকে তুলে নিয়ে ব্লাউজের কাজ করালে ভালো লাগবে। সাধারণত, হেভি জারদৌসির কাজ চলে বিয়েতে। কেউ কেউ আবার চান মাথায় দেওয়া দুপাট্টা-টা হেভি করে বানাতে। বিয়ে মিটে যাওয়ার পর যাতে ওই আড়াই মিটার দুপাট্টা শাড়ির আঁচল হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন, তাই এই সিদ্ধান্ত।

বেনারসির ব্লাউজটা সাদা ঢাকাই বা অন্য কোনও একরঙা শাড়ির সঙ্গে পরলে ভালো লাগবে বিয়ে পর। আবার পরবর্তীকালে বেনারসিটাও কেউ কুর্তা বা আনারকলি স্যুট বানিয়ে পরতে পারেন। আর যারা কাঞ্জিভরম পরতে চান, তখন কাঞ্জিভরমের উপর হেভি ওয়ার্ক করিয়ে নেন। কারণ, সেটাও খুব নজর কাড়ে। আর যারা টিপিক্যাল রেড পছন্দ করেন না, তারা অফহোয়াইট পরতে পারেন।

বাঙালি মেয়েরা স্টিচড শাড়ি পরতে পছন্দ করে না বিয়েতে। পরিবর্তে বউভাতে লেহঙ্গা পরছেন অনেকে। লেহঙ্গাকে শাড়ির মতো করে পরলেও দেখতে ভালো লাগে। তবে এক্ষেত্রে গয়না ও ফুলের  অ্যাক্সেসরি ব্যবহার করলে মানানসই হবে।

বিয়েতে কনে এবং আত্মীয়স্বজনরা পোশাকের যে-সব রং এখন বেশি পছন্দ করছেন তা হল রেড, ব্লাড রেড, ফ্লেম রেড, শকিং পিংক এবং অরেঞ্জ। তবে বউভাতে ইংলিশ কালার্স যেমন লাইট রোজ পিংক, অযে্টার পিংক, পেস্তা এসব রং চলছে পোশাকে। ফরসা মেয়রা সব রং-এর পোশাক পরতে পারেন কিন্তু শ্যামলা হলে রেড, পিংক, অরেঞ্জ এসব রং বাছুন। এ প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, ডাস্কি কমপ্লেকশনে অ্যান্টিক গোল্ড-ও ভালো মানাবে।

অনেকে আবার মা, ঠাকুমার বিয়ে বেনারসিটাই নিজের বিয়েতে পরতে চান রি-মডেলিং করে। তখন অবশ্য শাড়ির বেস বদলে নতুন কাপড় যোগ করতে হবে। অবশ্য সেই যোগ করার কাপড়টা যেন তসর, স্যাটিন বা হেভি সিল্কের হয়। তারপর আঁচল, পাড় ও বুটিগুলো কেটে অ্যাপ্লিক করে নিতে হবে নতুন বেস-এর উপর। এক্ষেত্রে আসল সোনার পাতলা তার দিয়ে বা রুপো দিয়ে বেস-এর উপর পুরোপুরি কাজ করা হয়। এটা অবশ্য বেশ সময় সাপেক্ষ কাজ। তাই বিয়ে অনেকদিন আগে কাজ করিয়ে রাখতে হবে।

এখন অনেক মেয়ে বউভাতের সকালে চান্দেরি বেনারসি পরছে। হালকা সাজের সঙ্গে এই ধরনের শাড়ি খুব ভালো লাগবে। এর বিকল্প মেখলাও পরতে পারেন। বউভাতে আটপৌরে করে শাড়ি, হাইনেক ব্লাউজ বা ছোটো গলা ব্লাউজ হালকা কুঁচি দেওয়া বেশ মানাবে। এটা এখন ফ্যাশনে ইন।

কনে ছাড়া পরিবারের অন্যান্য মেয়েরা যারা শুধু শাড়িতেই মোহময়ী হয়ে উঠতে চান, তারা শাড়ি পরার ধরন চেঞ্জ করে নিন। প্রায় আটরকম ভাবে পরা যায় শাড়ি। এই তালিকায় আছে বাটারফ্লাই স্টাইল, প্যান্ট স্টাইল, নিভি স্টাইল, মুমতাজ স্টাইল, লহঙ্গা স্টাইল, ট্র‌্যাডিশনাল বাঙালি স্টাইল, কুর্গ স্টাইল এবং মারাঠি স্টাইল। পোশাক নির্বাচনের জন্য এবং তা পরার জন্য যে-কোনও ফ্যাশন ডিজাইনার-এর সাহায্য নিতে পারেন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...