মহিলাদের মধ্যে বেশিরভাগই আজকাল স্বনির্ভর। কিন্তু শুধু আয় করাই যথেষ্ট নয়। নিজের উপার্জিত অর্থের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব রাখা এবং সেইসঙ্গে অর্থের নিয়ন্ত্রণও জরুরি। টাকা কোথায় কতটা খরচ করবেন, আর কখন কীসে বিনিয়োগ— সেটা বিবেচনা করুন বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে।
আপনার পাসবুক আপনারই
আপনি কর্মরতা বা হোমমেকার, যেটাই হোন না কেন, আপনার একটি স্বতন্ত্র ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক। সেভিংস হ্যাবিট শুরু থেকেই থাকা জরুরি।
আপনার পাসবুকটি একান্তই আপনার ব্যক্তিগত জিনিস। তার মালিকানা যেমন আপনারই, তাই ট্রানজাকশনের যাবতীয় হিসেবনিকেশ আপনার নখদর্পণে থাকা উচিত।
আপনার সঞ্চিত অর্থ এভাবে সুরক্ষিতও থাকবে। এই অর্থ দিয়ে বিপদে, আপনার পরিবারের সঙ্গে সুখ দুঃখ ভাগ করে নিতে পারবেন। আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তাহলে সেটিও নিজের নামেই নিন। এতে আপনার ক্রেডিট স্কোর উন্নত হবে এবং ধার নেওয়ার সময় পয়েন্টস যোগ হওয়ার পাশাপাশি আপনার ব্যয়ের একটি স্টেটমেন্টও পাবেন। এর ফলে পছন্দের জিনিস কেনাকাটিও যেমন করতে পারবেন, সুবিধেমতো ঋণ শোধও করতে পারবেন।
বড়ো সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম
নিজস্ব ব্যাংক ব্যালেন্স আপনাকে আত্মবিশ্বাস যোগাবে। বড়োসড়ো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়, মহিলাদের প্রবণতা থাকে অন্যের মতামত নেওয়ার, বিশেষ করে স্বামী বা নির্ভরযোগ্য কোনও পুরুষসঙ্গীর। কিন্তু একবার নিজেই যদি আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখা শিখে ফেলেন, তখন আর বড়ো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কারও মতামতের প্রয়োজন হবে না। বিশ্বাস করা নিশ্চয়ই ভালো, কিন্তু সচেতন হওয়া আরও ভালো। এরপর আপনি ফ্ল্যাট-ই কিনুন বা বিমা পলিসি, আপনার ফিন্যান্স কনসালট্যান্ট-এর সঙ্গে আলোচনা করুন। এরপর যদি প্রয়োজন হয় আপনার স্বামীকে বা সঙ্গীকে এই আলোচনার শরিক করুন ও আপনার বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত জানান।
আয়–ব্যয়ের হিসাব রাখুন
নিজের আয় এবং ব্যয়ের ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখুন, বাড়তি খরচে যাতে রাশ টানতে পারেন। নিজের আয়ের একটা হিসাব থাকলে, তা থেকে সঞ্চয় কতটা করবেন প্রথমেই নির্দিষ্ট করে রাখুন। ব্যয়ের ব্যাপারে লাগাম দিন, যদি দেখেন আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য যা ব্যয় হওয়া উচিত, তার থেকে বেশি খরচ হয়ে যাচ্ছে।
সন্তানের জন্য সঞ্চয়
আপনার স্বামী কি এ ব্যাপারে সচেতন নন, যে সন্তানের জন্য “বিশেষ সঞ্চয়’ প্রয়োজন ? তাহলে আপনিই উদ্যোগ নিন এবং সন্তানের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে বিশেষ সঞ্চয় স্কিমগুলোতে বিনিয়োগ করুন। শিক্ষা বিষয়ক স্কিম হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
এই সঞ্চয় যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায়, ততই মঙ্গল। আপনার সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য এটা আখেরে সুফলদায়ী হবে। আপনার সন্তান ১৫-১৬ বছরে পা দেওয়ার পর এই বিনিয়োগ খুব একটা লাভজনক হবে না। তাই সন্তান শিশু থাকাকালীন-ই শুরু করুন এই স্কিম।