কখনও খেয়াল করে দেখেছেন কি, আপনার পোষা বন্ধুটি কিন্তু কোনওরকম স্বার্থের তোয়াক্কা না করেই আপনাকে ভালোবাসে! এই স্বার্থপর পৃথিবীতে মানুষের থেকে আঘাত পেতে পেতে, অনেকেই আজকাল একা থাকেন শুধু তার পোষ্যটিকে নিয়ে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন পোষ্যেরা তাদের মালিক বা পালক তথা তাদের হিউম্যান পেরেন্টসকে নিঃস্বার্থ ভাবেই ভালোবাসে।
আপনি বাড়িতে পেটস রাখলে দেখবেন, ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার পোষ্যের সঙ্গে আপনার রসায়ন শুরু হয়ে যায়। পোষ্যরা ধীরে ধীরে সন্তানের মতোই হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পোষ্য তার মালিকের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে, তাদের বিভিন্ন আচার-আচরণ মালিকের সামগ্রিক শরীর-স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়।
আমাদের মধ্যে অনেকেই বাড়িতে কুকুর বিড়ালের মতো পোষ্য রাখতে ভালোবাসি। ছোটো থেকে মানুষের সাহচর্যে থাকার জন্য তারাও পরিবারের একজন সদস্য হয়ে ওঠে। বাড়ির লোকেরা তাকে আদর আহ্লাদে ভরিয়ে রাখে। পোষ্যরাও পরিবারের লোকেদের সঙ্গে সময় কাটাতে এবং তাদের দ্বারা প্যাম্পারড হতে ভালোবাসে।
পোষ্যর সঙ্গে কীভাবে নিবিড় হবে সম্পর্ক?
প্রতিদিন আপনার পোষ্যকে বাইরে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যান৷ একটা নির্দিষ্ট সময়ে রোজ পার্কে ঘোরান কিংবা দৌড়াতে নিয়ে যান। এতে তাদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক গভীর হবে। ইচ্ছে করলে বাইরে বেরোনোর সময় সঙ্গে কিছু খেলনা রাখতে পারেন। এতে তারা সেই সমস্ত খেলাতে নিজেদের ব্যস্ত রাখতে পারবে।ফিটনেস বাড়বে৷ প্রাণীটি চনমনে থাকবে৷
খেলনা তাদের নাগালের কাছেই রাখুন। এগুলো বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন ডিস্পেন্স ট্রিট ,চিউ টয় কিংবা কোন বল জাতীয় খেলনা। এছাড়াও বিড়ালদের জন্য অভিভাবকরা কার্ডবোর্ডের বাক্স বা কাগজের ব্যাগ রেখে যেতে পারেন। এগুলি ওদের কাছে খুবই প্রিয়। এর মধ্যে রাখা ফ্লাফি বল কিংবা নকল ইঁদুর তাদের খেলার আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে।
বাড়িতে পোষ্যদের একটা ডিসিপ্লিনের অভ্যাস করান৷ একটা নির্দিষ্ট ঘর বা স্পেস রাখুন ওর জন্য, যেখানে সে স্বাধীনভাবে খেলাধুলা করতে পারে। অনেকেই কুকুর কিংবা বিড়ালের থাকার বা ঘুমানোর জন্য ছোটো ডেন বা শোয়ার জায়গা রাখেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় তারা এগুলোকে ভেঙে দেয় কিংবা নোংরা করে রাখে। সেটা পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব কিন্তু আপনাকেই নিতে হবে৷। তাই বাড়িতে যে-কোনও একটি ঘরে তাদের অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করতে হবে যাতে আপনার ঘরদোর পরিচ্ছন্ন থাকে।
তাদের জন্য একটি পাত্রে জল এবং খাবার রেখে দিন যাতে তেষ্টা বা খিদে পেলে তারা সেগুলো হাতের নাগালে পায়।খেয়াল করে দেখুন আপনি নিজে হাতে না খাওয়ালে তারা প্রকৃতিগত তাগিদে খাবার খাচ্ছে কিনা৷ এইটুকু স্বাবলম্বী হওয়া কিন্তু আপনার পোষ্যটির প্রয়োজন৷
প্রশিক্ষণ জরুরি
ছোটো বয়স থেকেই আপনার পোষ্যদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে বড়ো করে তুলুন। তাদের জন্য একটা রুটিন নির্দিষ্ট করে রাখুন যেটা তাদের সময় মেনে চলতে শেখাবে। তবে অবশ্যই তাদের জন্য কিছু সময় রাখবেন যেটা আপনাদের সম্পর্ককে আরও উন্নত এবং মজবুত বানাবে।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে বিশেষ কোনও কারণে পোষ্যদের বাড়িতে ছেড়ে যেতে হয়। এইরকম পরিস্থিতি সামনে এলে মালিক এবং কুকুর উভয়ের ক্ষেত্রেই তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কেউই একে অপরকে একা ছেড়ে থাকতে পারে না। আপনার পোষ্যকে বাড়িতে একা থাকার প্রশিক্ষন দেওয়াও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।