ভারতীয় ফ্যাশনে গত কয়েকবছরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। বিশেষত পোশাক-আশাকের ব্যাপারে। আর এই পরিবর্তনের হাত ধরে চলতি ফ্যাশনে ঢুকে পড়েছে স্টোল, শর্ট স্কার্ফ। স্টোলের সঙ্গে লেহেঙ্গা চোলি দারুণ ভাবে ফ্যাশনে ইন। শুধু ওয়েস্টার্ন কেন ইন্ডিয়ান পোশাকেও ভীষণ মানানসই।
শীতের সময় হালকা উষ্ণতার পরশ পেতে এখন আর শুধু স্টোলের ব্যবহার হয় না। স্টাইল স্টেটমেন্ট হিসাবে যে-কোনও মরশুমেই ভীষণ ভাবে ট্রেন্ডি। ঝাঁ চকচকে মল থেকে রোডসাইড হকার— হাত বাড়ালেই এদের কাছে পেয়ে যাবেন পছন্দের নানান ধরনের স্কার্ফ আর স্টোল।
স্কার্ফ-এর দিকে ঝোঁক বাড়ছে বর্তমান টিনএজারদের। দোপাট্টার আলনায় স্কার্ফ সামলানো অনেক সহজ। স্কার্ফের ব্যবহারে আউটফিটে একটা ওয়েস্টার্ন লুকও চলে আসে। হালকা রঙের চুড়িদার কিংবা গুলোয়ারের সঙ্গে কালারফুল স্টোল চড়িয়ে নিন— অনেক বেশি স্মার্ট গাইলিশ দেখাবে। জিন্স-টপ, কুর্তির সঙ্গে এই আউটফিট যে একেবারে আদর্শ সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
সব আউটফিটেই মানানসই : ভারতীয় পোশাকের পাশাপাশি ওয়েস্টার্ন আউটফিটে সমান ভাবে মানানসই। ডিজাইনার স্টোল, ট্র্যাডিশনাল এবং ওয়েস্টার্ন- দুটির সঙ্গেই দারুণ যায়। আভিজাত্য আনতে জরির কাজ করা পশমিনা স্টোল কিংবা এমব্রয়ডারি করা পুরোদস্তুর কাশ্মীরি স্টোল চাহিদার শীর্ষে। এছাড়াও রয়েছে উলের বা সিল্কের প্রিন্টেড স্টোল। পরেরবার তাই সালোয়ার কামিজ পরুন একটু অন্যভাবে। কন্ট্রাস্ট কালারের স্টোল এক কাধে ফেলে রাখুন। অনেক বেশি ইয়াং লাগবে।
ফর্মাল কর্পোরেট পোশাকে অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলে স্টোল তো রয়েইছে। ম্যাচিং করে কিংবা কন্ট্রাস্ট করে যথাযথ স্টোল চাপিয়ে নিন। ফুলস্লিভ অফ হোয়াইট টপ, ডেনিম জিনসের সঙ্গে জর্জেটের প্রিন্টেড স্কার্ফ ট্রাই করে দেখতে পারেন। জ্যাকেটের সঙ্গেও স্কার্ফ বেশ মানানসই। এক্ষেত্রে স্টোল ক্রিস-ক্রস করে পেঁচিয়ে সামনের দিক খোলা রাখুন অথবা কাধের অংশে পরিপাটি করে ভাঁজ করে নিতে পারেন। পিন-আপ এমন ভাবে করবেন যাতে বাইরে থেকে দেখা না যায়।
আত্মবিশ্বাস জোগায় : স্টোল ও স্কার্ফ এখন প্রত্যেক মেয়ের ওয়ার্ডরোবের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। মহিলাদের সৌন্দর্যের সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে তোলে। বর্তমান ফ্যাশন-দুনিয়ার পার্টও বটে। চিরাচরিত দোপাট্টার পরিবর্ত হিসাবে ক্রমশ নিজের জায়গা করে নিচ্ছে স্টোল। ফ্যাশন ডিজাইনাররা নিত্যনতুন ডিজাইনের স্টোল, স্কার্ফের দিকে বাড়তি নজর দিচ্ছেন বর্ধিত চাহিদার কথা মাথায় রেখে। ওয়ার্ডরোবে কুর্তি হোক বা সালোয়ার কিংবা শার্ট— স্টোল সবকিছুর সঙ্গেই দারুণ ভাবে ইন।
ক্যাজুয়াল পোশাকে শার্ট পরুন, প্যান্ট পরুন বা স্কার্ট, দুই কাধের উপর দিয়ে কোমর পর্যন্ত স্টোল ঝুলিয়ে নিলেই ফ্যাশনদুরস্ত লুক চলে আসবে। পোশাক বৈচিত্রের কারণে স্টোল গোটা বিশ্বেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর আত্মবিশ্বাস জোগায় এমন পোশাক মানসিক ভাবেও আপনাকে এগিয়ে দেবে। সাহায্য করবে আলাদা ছাপ রাখতে।
ধরুন কোনও পার্টিতে যাচ্ছেন। লং স্কার্ট এবং বড়িহাগিং টপের এলিগ্যান্ট লুক এনে দেবে। ফর্মাল অকেশনে কিংবা পার্টিতে সিদ্ধের সঙ্গে মানানসই একটা স্কার্ফ ঝুলিয়ে নিন। কেয়ারফি একটা ইউনিক স্কার্ফ আপনার জন্য ম্যাজিকাল হতে পারে। কাথা কাজ করা বা গুরলি মোটিফের সিল্ক স্কার্ফ ব্যক্তিত্ব বাড়াতে অনবদ্য। আবার টিস এবং ইয়ং গার্লদের কাছে শিফনের স্কার্ফের চাহিদা ভীষণরকম। ব্র্যান্ডেডও যেমন পাবেন তেমনই পাবেন সম্ভার জিনিস। ফ্যাশন ওয়ার্ল্ডের জন ভেলভেটের স্কার্ফ একেবারে আদর্শ। তবে হালকার চেয়ে ডিপ পার্পল, রেড, ব্রাউন কালারের স্কার্ফ এখন ইন।
সহজলভ্যতা : প্রচুর কালার ও টেক্সচারে স্টোল, স্কার্ফ পাওয়া যায়। নেটের স্টোলও অত্যন্ত জনপ্রিয়। উলের বা নেটের স্টোল একদিকে যেমন ফ্যাশনেবল তেমনই সফিসটিকেটেড।
ডিজাইনাররা স্টোলকে আনলিমিটেড ক্লাসিক এবং টাইমলেস অ্যাকসেসরি বলে চিহ্নিত করে। চিরাচরিত আউটফিটের সঙ্গে ওয়েস্টার্ন পোশাকে স্টোলের কালারফুল উপস্থিতি রীতিমতো আকর্ষণীয়। বর্তমানে স্টোলে রঙের বৈচিত্র্যের সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রিন্ট ও উইভস্-এর নানান সমাহার। কোথাও ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রাইবাল লুক আবার কোনওটাতে রয়েছে পপ-আর্ট-প্রিন্ট।
স্টোলের হাজারো কালার। তার মধ্যে পছন্দসই বেছে নিন। তবে পশ্চিমি দুনিয়ার ট্রেন্ড হল প্যাস্টেল শেডস-এর হালকা স্টোল, আইভরি, ব্ল্যাক এবং গ্রে। আর ভারতে তো ইন্ডিয়ান ডিজাইনের অফুরন্ত ভান্ডার। গাঢ়, আগুন, রক্তবর্ণের লাল শেড তো সব সময়তেই ইন।
তবে পোশাক অনুযায়ী সঠিকটা বেছে নিতে হবে আপনাকেই। এটি নির্ভর করে আপনার দৈনন্দিন পোশাকের উপর। যেমন টপ যদি সাদা হয় সেক্ষেত্রে অপশন বেড়ে যায়। রেড রয়্যাল ব্লু, হট পিংক সেক্ষেত্রে দারুণ যাবে। তসরেরও স্টোল পেয়ে যাবেন। পছন্দমাফিক বেছে নিয়ে হয়ে উঠুন নজরকাড়া।