আমার বয়স ৩৮৷ আমি একজন ডিভোর্সি৷ গত তিন বছর হল আমি একজনকে বিয়ে করেছি৷ আমার স্বামীর আগের পক্ষের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে৷ তাকে পরম আদরে ও ভালোবাসায় আমি বড়ো করেছি৷ ওই ছেলেটির এখন দশ বছর বয়স৷  জানি না আমি অতটা ভালো মানুষ কিনা। তাই মনে হয়েছে, নিজের সন্তান হলেই আমি ভালো দায়িত্ব নিতে পারব।সেই বাসনার কথা স্বামীকে বলি৷ বর্তমানে আমার নিজের একটি সন্তান হয়েছে৷ কিন্তু আমার মনে এখন দ্বিধা তৈরি হচ্ছে নিজের সম্তানকে বড়ো করে তুলতে গিয়ে,স্বামীর আগের পক্ষের সন্তানের অযত্ন করে ফেলব না তো? ওর মনে কোনও ক্ষোভ তৈরি হবে না তো? যদিও ওর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ও স্নেহপূর্ণ সম্পর্ক এখনও বজায় আছে৷ভয় হয় আত্মীয়রা ওর মনে কোনও ভাবে হিংসা ঢুকিয়ে দেবে না তো !

আপনি সঠিক পথই বেছে নিয়েছেন। বাচ্চাকে বড়ো করা খুবই গুরুতর দায়িত্ব।আপনি স্বামীর আগের পক্ষের সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে যথেষ্ট বড়ো মনের পরিচয় দিয়েছেন৷ সেই দায়িত্ব একেবারে একশো শতাংশ পালন করতে পেরেছেন৷ কিন্তু নিজের সন্তানের আকাঙ্ক্ষা হওয়াটা দোষের নয়৷ মাতৃত্বের পূর্ণ অভিজ্ঞতাটার মধ্যে দিয়েযাওয়ার অধিকার আপনার আছে৷। যে-শারীরিক এবং মানসিক পরিবর্তন হয় এই সময়, তা উপভোগ করতেপেরেছেন, এটাই তো খুব আনন্দের।

প্রথম সন্তানের ওপর কিন্তু আলাদা দুর্বলতা থাকেই। সবসময় অনুভব করবেন যে স্বামীর ওই সন্তান যেন আপনার প্রথম সন্তান। দু’ জনের মধ্যে কোনও ফারাক অনুভব করতে দেবেন না।ওর সঙ্গে আগের মতোই বন্ধুত্ব ও স্নেহপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখুন৷

মাতৃত্ব নিয়ে বড়ো বেশি মাতামাতি হয় আমাদের দেশে। সন্তান দত্তক নিয়ে মানুষ করলেও ভালোবাসার কোনও খামতি থাকে না তাতে। আর সেই একই ভালোবাসা ফেরতও পাওয়া যায়। তাই ওই ছেলেটিকেও পর ভাবার কোনও কারণ নেই৷আর নিজের সন্তানকে সময় বেশি দিতে হচ্ছে ভেবে অপরাধ বোধেরও কোনও কারণ নেই৷আপনার নিজের গর্ভজাত দুটি সন্তান হলে যা করতেন, তা-ই করুন৷

সন্তান জন্ম দিলেই তা নিজের হয়? নাকি বড়ো করে তুললেও সে একইরকম আপন হয়? এত কিছুর পরে সমাজে বিরোধ, বিতর্ক থেকেই যাবে।আপনি ওসবে কান না দিয়ে মাতৃত্বের আনন্দ উপভোগ করুন দুই সন্তানের জননী হিসাবে৷

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...