আমার শিশু-সন্তান দুষ্টুমি করে, খেলে, হাসে, একটু একটু কথা বলারো চেষেটা করে– কিন্তু খেতে চায় না৷ বুঝতে পারি না খাবার গ্রহণে তার এই অনীহা কেন? জোর করে খাওয়ালে বমি করে দেয় আর নয়তো কান্নাকাটি করে৷ মোবাইল ফোন দেখিয়ে ভুলিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করি কিন্তু ডাক্তার বলেন এটা ঠিক পদ্ধতি নয়৷কারণ ওকে আমি মোবাইল নির্ভর জীবনশৈলিতে অভ্যস্ত করে ফেলছি৷ কী করব যদি বলে দেন৷
বিভিন্ন কারণে শিশুদের খাবার রুচি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। হয়তো আপনি খাবার দেওয়ার রুটিন ঠিক রাখছেন না, অসময়ে খেতে দিচ্ছেন, সে কী খেতে চায় আর কী চায় না তা বিবেচনায় নিচ্ছেন না। এমন যদি হয়, সে কিন্তু খেতে চাইবে না। তাছাড়াও অনেক সময় মায়েরা ভালোবেসে বাচ্চাকে বেশি খাবার খাওয়াতে চান। এটা বাচ্চার কাছে শাস্তি মনে হতে পারে।
বাচ্চাকে কখনও জোর করে খাবার খাওয়াবেন না! এমনটা করলে সেটা বাচ্চাদের অভ্যাসে পরিণত হতে পারে। মুখ ভর্তি করে খেতে দেবেন না। এতে তার গিলতে সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় শ্বাস কষ্ট দেখা দিতে পারে। যার ফলে সে খাবার গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করতে পারে।
আপানার বাচ্চা কতটুকু খেতে পারবে সে বিষয়ে আপনার থেকে আর কে ভালো জানে? সুতরাং বাচ্চার প্লেটে ততটাই খাবার নিন যতটা বাচ্চা একবারে খেতে পারবে! প্রয়োজনের বেশি খাবার প্লেটে ভরে দিয়ে, বাচ্চাকে পুরো খাবার খাওয়ার জন্য বাধ্য করা মোটেই ভালো ব্যাপার নয়। এমন আচরণের কারণেও তার খাবার আগ্রহ কমে যেতে পারে।
আপনি খাবারের পরিমাণ এক সাথে অনেকটা না দিয়ে, অল্প অল্প খাবার, সময়ের ব্যবধানে খাওয়ানোর চেষ্টা করে দেখুন৷ খাবারে ভ্যারাইটি রাখুন যাতে ওর একঘেয়ে না লাগে৷ রঙিন আর আকর্ষণীয় কাপ প্লেট আর পাত্র ব্যবহার করুন এবং ছোটো বাচ্চাদের খেতে দেওয়ার সময় তাদের প্রিয় খেলনা কাছে রাখুন।বাচ্চাদের চকোলেট, চিপস, সফট ড্রিংকস– এইসব থেকে যত পারবেন দূরে রাখুন। এই সব জিনিস বাচ্চাদের খাবার রুচি নষ্ট করে।
বাচ্চারা গল্প শুনতে খুব ভালোবাসে। মজার মজার গল্প বলে তাকে খাওয়ান। দেখবেন সে বেশ আগ্রহ সহকারেই খাচ্ছে। তবে সেটা প্রতিদিন করতে যাবেন না। একদিন গল্পের ছলে তো আরেক দিন খেলার ছলে খাওয়াতে পারেন। সঠিক সময়ে বাচ্চাকে খেতে দিন। এতে তার খাদ্যাভাস তৈরি হবে। বোঝার চেষ্টা করুন কোন খাবার গ্রহণে বাচ্চা বেশী আগ্রহী। এইসব দিকে খেয়াল রাখলে দেখবেন শিশু খাবার খেতে আগ্রহী হবে এবং আপনাকেও বেশি কষ্ট করতে হবে না।