সৌন্দর্য শুধুমাত্র মুখশ্রী নির্ভরই নয়, এর জন্য প্রয়োজন পুরো শরীরের যত্ন নেওয়া। আধুনিক পোশাকে সজ্জিত হতে অনেক মেয়েরাই হাত অনাবৃত রাখতেই পছন্দ করেন। সেই ক্ষেত্রে হাতের সৌন্দর্য বজায় রাখতে না পারলে পুরো সাজটাই দৃষ্টিকটু হয়ে উঠতে পারে। কোমল মসৃণ সুন্দর হাতের জন্য মহিলারা নানা ধরনের ক্রিম, প্যাক, সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন, অনেকেই বিউটি পার্লারে যান। কিন্তু পার্লারে যাওয়া মানেই সময় এবং অর্থের অপচয়। তার থেকে বাড়িতেই যদি ম্যানিকিয়োর করে নেওয়া যায় তাহলে সময়ও নষ্ট হয় না আর অর্থেরও সাশ্রয় হয়।

Manicure কেন জরুরি?

পরিষ্কার রাখার জন্য: যে-কোনও কাজেই আমাদের হাত ব্যবহার করতে হয়, যার ফলে হাতে নোংরা ধুলোমাটি লাগাটা খুব স্বাভাবিক। সাবান দিয়ে আমরা নিয়মিত হাত ধুই ঠিকই কিন্তু নখের ভিতরে জমে থাকা ময়লা এতে পরিষ্কার হয় না। নোংরা ধীরে ধীরে জমতেই থাকে যার জন্য সংক্রমণের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত ম্যানিকিয়োর— নখে জমে থাকা নোংরা এবং জীবাণু দূর করতে সাহায্য করে।

হাত মোলায়েম রাখতে: ম্যানিকিয়োর করাবার পর হাত এতটাই নরম এবং মোলায়েম হয়ে যায় এবং ত্বকের গ্লো এতটাই বেড়ে যায় যে নিজের হাত দেখে নিজেকেই অবাক হতে হয়! এই প্রক্রিয়া চলাকালীন মাসাজে স্ক্রাবিং এবং এক্সফলিয়েশন শামিল করা হয়, যার কারণে হাতের সৌন্দর্য এবং মসৃণতা বৃদ্ধি পায়।

কিউটিকল্স-এর পুষ্টির জন্য: কিউটিকল্স হল ডেড স্কিন। এটা নখের ডগার ত্বকের কাছে একত্রিত হয়, এর ফলে নখের আশেপাশের ত্বক মোটা হয়ে যায়। এর মধ্যে জীবাণু তৈরি হয়। কিন্তু বাড়িতে নিয়মিত Manicure করলে কিউটিকল্স নরম, পোষণযুক্ত এবং সঠিক আকারে থাকবে।

রিল্যাক্সেশনের জন্য: নিয়মিত মাসাজ যে-কোনও ব্যক্তিকে রিল্যাক্স রাখার জন্য অত্যন্ত আবশ্যক। বর্তমানে কর্মব্যস্ততার যুগে মাসাজ শরীর ও মনকে আরাম দেয় এবং স্ট্রেস-ফ্রি রাখে।

ব্লাড সার্কুলেশন উন্নত করতে: ম্যানিকিয়োর করতে একটি জরুরি স্টেপ হল ১৫-২০ মিনিটের মালিশ। এটি হাতের রক্তচলাচলকে উন্নত করে আঙুল এবং কবজির জয়েন্টে গতিশীলতা আনতে সাহায্য করে।

সহজে কীভাবে বাড়িতে ম্যানিকিয়োর করা সম্ভব

nail art beauty tips

ম্যানিকিয়োর করার জন্য প্রয়াজনীয় টুলস:

নেলপলিশ রিমুভার, নেল ফাইলার, কাটার, কটন প্যাড্স, কিউটিকল ক্রিম, কিউটিকল পুশার, নেলপলিশ, হাত জলে ডুবিয়ে রাখার জন্য বড়ো বোল, শ্যাম্পু অথবা বডিওয়াশ, লেবুর রস, মধু, বাড়িতে Manicure স্ক্রাব বানাতে চিনি, অলিভ অয়েল ও লেবুর রস।

কীভাবে ম্যানিকিয়োর করবেন

নেলপলিশ মুছে ফেলুন ও নখ ট্রিম করুন: প্রথমে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলুন। ভালো কোম্পানির নেল রিমুভার এবং তুলোর সাহায্যে পুরোনো নেল পেইন্ট নখ থেকে মুছে ফেলুন। বড়ো নখ ছোটো করবার জন্য নেল ফাইলার দিয়ে নখের কোণা সেট করে নখ ট্রিম করুন। নিজের পছন্দমতন নখকে গোল, চৌকো বা ওভাল শেপ দিন।

কিছুক্ষণ হাত ভিজিয়ে রাখুন: একটি বড়ো বোলে ঈষদুষ্ণ জল ভরে তাতে সামান্য শ্যাম্পু মিশিয়ে ৫ মিনিটের জন্য হাত ডুবিয়ে রাখুন। অথবা, দুই বড়ো চামচ মধু ও ১ চামচ লেবুর রস জলে দিয়ে সেই মিশ্রণে হাত ভিজিয়ে রাখুন। লেবু ডি-ট্যানিং এবং হোয়াইটনিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। আর মধু ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে। হাতের ত্বক নরম হলে একটি নরম ব্রাশ দিয়ে নখ এবং কিউটিকল্স পরিষ্কার করে নিন। এরপর ফাইলারের হ্যান্ডল ব্যবহার করে নখের সাইডে জমে থাকা কিউটিকল্স ঠেলে পিছনে করে দিন৷

স্ক্রাব করুন: ম্যানিকিয়োর স্ক্রাব অনেক রকমের বানানো যায় তবে সহজ ও কার্যকরী পদ্ধতি হল লেবু, চিনি এবং অলিভ অয়েল-এর স্ক্রাব — যেটি সব ধরনের ত্বকের জন্যই উপযোগী। একটি পাত্রে ২ চামচ চিনি, ১/২ চামচ অলিভ অয়েল এবং ১ চামচ লেবুর রস মেশান। অলিভ অয়েল হাতের ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখতে সাহায্য করবে। ২ মিনিট মিশ্রণটি দিয়ে হাত স্ক্রাব করুন তারপর হালকা গরমজলে হাত ধুয়ে ফেলুন ও নরম তোয়ালে দিয়ে হাত শুকিয়ে নিন।

ক্লিয়ার নেলপলিশ লাগান: নখে প্রথমে ক্লিয়ার নেলপলিশ দিয়ে বেস কোট লাগান। এতে আপনার নেলপেইন্ট স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠবে। তাছাড়া দীর্ঘসময় পর্যন্ত নেলপলিশ টিকে থাকবে।

টপকোট অ্যাপ্লাই করুন: বেস কোট শুকিয়ে গেলে পছন্দের নেলপলিশের একটা পাতলা কোট অ্যাপ্লাই করুন। এটা শুকিয়ে গেলে আর একটা কোট লাগান। পুরোটা ভালো করে শুকিয়ে গেলে উপর দিয়ে ক্লিয়ার নেলপলিশের আর একটা কোট লাগিয়ে দিন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...