শীতকাল মানেই শীতের হিমেল পরশ, বছর শুরুর হরেক মজা, বাতাসে কেক-এর মিষ্টি গন্ধ, রোদে বসে কমলালেবুর খোসা ছাড়ানো আর বাড়ি ঘরদোরের সাজবদল।

নতুন বছরে নিজের জীবনটাকে আবার নতুন করে সাজিয়ে তুলতে সকলেই চায়। নতুন করে পথচলার শুরু। মানুষের জীবনের মতোই তার সাধের বাড়িটিও নতুন কলেবরে সেজে ওঠার অপেক্ষায় থাকে। তাহলে নতুন বছরই হোক আদর্শ সময় বাড়ির সাজে পরিবর্তন আনার। বাড়ির অন্দরে বিভিন্ন রঙের সমারোহ যেমন অন্দরসজ্জায় নতুনত্ব নিয়ে আসে, তেমনি মানসিক শান্তি এবং মনে আনন্দেরও উদ্রেক করে। কীভাবে সম্ভব আসুন জেনে নেওয়া যাক:

দেয়ালে ব্রাইট কালার্স

বাড়ির অন্দরে কী Colours হবে তাই নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে থাকেন। ঘরের রং ব্রাইট হবে সকলেই চান কারণ তাতে মনে পজিটিভিটি বজায় থাকে। সুতরাং রং বাছাই করাটা নির্ভর করছে আপনার মানসিকতার উপর।

সাদা: শীতের মরশুমে ঘরের অন্দরে সাদা রঙের আধিপত্য অনেকেরই পছন্দ। সাদার সঙ্গে আলাদা আলাদা রঙের মেলবন্ধন ঘটিয়েও ঘর সাজিয়ে তোলা যায়।

ক্রিমসন: বসার ঘরে কী রং করা হবে সেটা অনেকের কাছেই চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে। কিন্তু বসার ঘরে প্রবেশ করে দেয়ালে ক্রিমসন রং, অতিথির মনে নিঃসন্দেহে আলাদা অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে।

নীল: নীল রং সব মরশুমেই মানানসই। গাঢ় নীল হোক অথবা হালকা নীল, এটি দেয়ালের সৌন্দর্য শতগুনে বাড়িয়ে তোলে এবং অনেকেই এই Colour পছন্দ করেন।

বাদামি: এই রং-টি মহিলাদের পছন্দের রং হতে পারে কারণ দেয়ালে ময়লা লাগলে সেটা বোঝা যায় না এবং এটি পরিষ্কার করাও খুব সহজ।

কমলা: এই রং অন্দরসজ্জায় দেয় ফ্রেশ লুক। নানা শেড-এ এই রং মার্কেটে সহজলভ্য এবং রং-টি এককথায় লোভনীয়।

আইভরি: শীতকালের জন্য বেস্ট Colour হল আইভরি। এটি ঘরকে উজ্জ্বল দেখাতে সাহায্য করে। বসার ঘরে এবং শোবার ঘরে এই রং ব্যবহার করতে পারেন।

সবুজ: সবুজ এমন একটা রং যেটি চোখকে আরাম দেয়। এই রঙের হালকা শেড ব্যবহার করে দেখুন, আপনার ঘর দেখতে অনেক বেশি বড়ো মনে হবে।

গোলাপি: ঘর এবং বারান্দা বড়ো এবং ব্রাইট দেখাতে গোলাপি Colour ব্যবহার করতে পারেন।

লাল: ঘরকে উজ্জ্বল দেখাতে লাল রং ব্যবহার করতে পারেন। লালের সঙ্গে অন্য রং ম্যাচ করিয়েও দেয়াল রাঙিয়ে তুলতে পারেন। লালকে রোমান্টিক রং ধরা হয় তাই শোয়ার ঘরে লালের ব্যবহার বিবাহিত জীবন রোমাঞ্চকর করে তুলতে পারে।

দেয়ালের রঙের সঙ্গে ম্যাচিং পর্দা

বাজারে নানা ধরনের, নানা মেটেরিয়ালের পর্দা পাওয়া যায়। মরশুম অনুযায়ী পর্দার রং, ফ্যাব্রিক কী হবে তা পুরোটাই নির্ভর করে ব্যক্তির মানসিকতার উপর।

বাদামি রং: ঘর যদি খুব বড়ো হয় তাহলে ঘরের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে এই রঙের কোনও তুলনা হয় না। আর যদি ঘর খুব ছোটো হয়, তাহলে ঘরকে বড়ো দেখাতেও এই রং সাহায্য করে। সবরকম দামেই ভালো মানের পর্দা বাজারে রয়েছে। দেয়ালের ডিজাইনের সঙ্গে ম্যাচ করেও পর্দা নির্বাচন করতে পারেন। শীতকালে টেক্সচারড পর্দা দেখতেও খুব সুন্দর লাগে।

লাল রং: শীতের মরশুমের জন্য লাল রঙের নিজস্ব হটনেস, ঘরের অন্দরসজ্জায় আনে পারফেক্ট লুক। লালের সঙ্গে হলুদের কনট্রাস্ট ঘরের লুক-কে ভাইব্র্যান্ট করে তোলে। গাঢ় রং পছন্দ না হলে হালকা হলুদ রং বাছুন যাতে পর্দা থাকা সত্ত্বেও বাইরের সূর্যের আলো পর্যাপ্ত পরিমাণে ঢুকে ঘর আলোকিত করে তুলতে পারে।

কমলা: এই Colour শীতকালের জন্য আদর্শ। ঘরের ফাঙ্কি এবং ট্রেন্ডি লুক থেকে দৃষ্টি সরাতে কমলা রং ব্যবহার করে দেখুন। এটি ঘরে ফ্রেশ লুক আনতেও সক্ষম।

বোল্ড কালারের পর্দা: ঘরের রং যদি হালকা হয় এবং দেয়ালে কোনওরকম টেক্সচার যদি না থাকে, তাহলে বোল্ড কালারের পর্দা লাগান।

মেরুন এবং উইন্টার ব্লু: শীতে মেরুন রঙের পর্দা ভালো অপশন। সূর্যের রশ্মি শোষণ করে এই রং ঘর গরম রাখতে সহায়তা করে। বাচ্চাদের ঘরে উইন্টার ব্লু পর্দা লাগাতে পারেন অথবা বসার ঘরেও এই রঙের পর্দা খুবই মানানসই। এছাড়াও নিজের পছন্দমতন যে-কোনও কম্বিনেশন বেছে নিয়েও অন্দরসজ্জায় পর্দার মাধ্যমে আনুন পরিবর্তন।

গাছও লাগান রংবেরঙের

সাধারণত শীতকালে রোদের তেজ কম হয় এবং তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সঙ্গে আবহাওয়া কিছুটা হার্শ হয়ে ওঠে। অনেক ফুল গাছ শীতকালে বাঁচে না, শুকিয়ে যায়। কিন্তু শীতকালীন কিছু গাছ আছে যেগুলি ঠান্ডার মরশুমেই বাড়বাড়ন্ত হয়ে ওঠে। মরশুমি ফুলের গাছও নানা রঙের এবং নানা আকারে পাওয়া যায়।

ক্যালেন্ডুলা: এটি বিভিন্ন রঙের হয়। বিশেষ করে, হলুদ এবং গাঢ় কমলা রঙের পাওয়া যায়।

শীতকালীন জুঁইফুল: উজ্জ্বল হলুদ রঙের শীতকালীন জুঁইফুল আপনার ঘরের শোভা বৃদ্ধি করবে।

পিটুনিয়া: শীতের বাগানে লাগাতে পারেন সাদা, হলুদ, গোলাপি, গাঢ় রঙের ক্রিমসন এবং কালচে বেগুনি রঙের পিটুনিয়া।

ইংলিশ প্রিমরোজ: সাদা, হলুদ, কমলা, নীল, গোলাপি, বেগুনি – প্রায় সব রঙেই পাওয়া যায় এই ফুলের গাছ। বাড়ি সাজাবার জন্য এটি খুবই ভালো বিকল্প।

 

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...