ভালো খাবার আমরা সকলেই উপভোগ করি কিন্তু সেই খাবার কীভাবে হজম হবে তা আমরা ভাবি না। আমাদের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশগুলিতে গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ার মিশ্রণ কখনও কখনও খাবারের হজম ব্যাহত করে।
তাই, আমরা যদি খাদ্যাভ্যাসের প্রতি যত্নবান না হই, তাহলে আমাদের স্বাস্থ্য গভীর সমস্যায় পড়তে পারে। পর্যাপ্ত সূর্যালোকের অভাব এবং সূর্যালোকের পর্যাপ্ত এক্সপোজারের অভাবের সঙ্গে সম্পর্ক-যুক্ত হজম। এর ফলে আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি-র সংশ্লেষণ হ্রাস করে, যার পরিণাম দুর্বল হাড়। চা এবং কফির মতো প্রচুর গরম পানীয়, এগুলিতে প্রচুর ক্যালোরি থাকে এবং ক্যালোরি ক্ষয় না হলে দীর্ঘমেয়াদে আমাদের জন্য ক্ষতিকারক। এর উপরে, কোনও রকম ওয়ার্কআউট করা বন্ধ থাকলে আরও ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
আরেকটি পানীয় যা কিছু মানুষের পান করার অভ্যাস থাকে, তা হল অ্যালকোহল। তবে এটি অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা শুধুমাত্র স্বল্পমেয়াদে নয়, দীর্ঘমেয়াদেও ক্ষতিকারক। অত্যধিক অ্যালকোহল স্বল্প মেয়াদে রিফ্লাক্স এসোফ্যাগাইটিস, গ্যাস্ট্রাইটিস এবং দীর্ঘমেয়াদে লিভারের সিরোসিস, হৃদরোগ, প্যানক্রিয়াটাইটিস এবং স্থূলতার দিকে পরিচালিত করে। অনেকের জল কম পান করার প্রবণতা রয়েছে। এর ফলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে, যা কিডনির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত তাদের, যাদের কিডনিতে পাথর রয়েছে।
ডিহাইড্রেশনের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনা এবং পাইলস ও ফিসারের সমস্যাও বেড়ে যায়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, নিয়মিত ভালো পরিমাণে তরল, বিশেষ করে জল গ্রহণ করে হাইড্রেটেড থাকতে হবে। গরমকালে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই আমাদের সঠিক যত্ন এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোগ এবং সংক্রমণের সম্ভাবনা হ্রাস পেলেই নিশ্চিন্তে জীবনযাপনের সুযোগ মিলবে।
প্রবাদ আছে— যার পেট ভালো, তার সব ভালো। যারা পেটের অসুখে ভুগেছেন অথবা ভুগছেন, তারা অন্তত এই প্রবাদের যথার্থতা উপলব্ধি করতে পেরেছেন। আসলে, শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ভালোমন্দ অনেকটাই নির্ভর করে পেটের সুস্থতার উপর। একটু ভালো ভাবে নজর রাখলে প্রমাণ পাবেন, মাথার চুল পড়ে যাওয়া এবং ত্বকের জৌলুস হারিয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হল ওই পেটের অসুখ।
তবে শুধু চুল পড়া কিংবা ত্বকের সমস্যাই নয়, পেপটিক আলসার কিংবা লিভার ক্যানসারের মতো বড়ো অসুখগুলির সূত্রপাতও কিন্তু নিয়মিত হজমের গোলমাল কিংবা অ্যাসিডিটি থেকে। অতএব, পেটের সুস্থতা জরুরি। কীভাবে পেট ভালো রাখবেন, সেই বিষয়ে একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিলেন ডা. সঞ্জয় মণ্ডল।
প্রতিদিন সকালে অ্যান্টাসিড খাওয়া কি পাকযন্ত্রের পক্ষে ভালো?
বিনা প্রয়োজনে ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। কেবলমাত্র সেই সমস্ত মানুষেরই ওষুধ খাওয়া উচিত, যাদের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এই বিষয়টি অ্যান্টাসিড গ্রহণের ক্ষেত্রেও সমান ভাবে প্রযোজ্য। নিয়মিত কখনওই অ্যান্টাসিড খাওয়া উচিত নয়।
একজন ডায়াবেটিক রোগী কীভাবে তাঁর পরিপাক সম্পর্কিত বিষয়গুলিকে বিবেচনা করবেন ?
একজন ডায়াবেটিক রোগীকে প্রথমেই চিনি ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য বর্জন করতে হবে। তাঁদের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে প্রোটিন জাতীয় খাবার। অন্যান্য সাধারণ মানুষের মতোই অত্যধিক তেল ও মশলা জাতীয় খাবারকে তাদের খাদ্য-তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। খাদ্য-তালিকা হতে হবে সুষম এবং খাদ্য গ্রহণ করতে হবে পর্যাপ্ত সময়ের ব্যবধানে। ডায়াবেটিক রোগীকে ভরপেট খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। খাবারের মধ্যে ক্যালোরি’র মাত্রাকে সঠিক ভাবে ধার্য করে খাবার খেতে হবে। একজন ডায়াবেটিক রোগীকে ইনসুলিন ও ওরাল হাইপোগ্লিসিমিক্সকে এড়িয়ে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।