এই প্রজন্মের যুবক-যুবতিদের বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ভেবেচিন্তে। গত অক্টোবর মাসের ঠিক আগের সপ্তাহে আগ্রা-র এক বিবাহিত যুবকের অভিযোগ, সব টাকা এবং মূল্যবান রত্নালঙ্কার নিয়ে বাপেরবাড়ি পালিয়েছে তার স্ত্রী এবং বর্তমানে সে তার প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে থাকা শুরু করেছে।
বিহারের বৈশালী জেলায়ও একটা বাজে ঘটনা ঘটেছে। এক ব্যক্তি এবং তার শ্যালিকার মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এক সময় শ্যালিকা তার স্বামীকে মেরে ফেলে জামাইবাবুর সাহায্য নিয়ে। উদ্দেশ্য ছিল শ্যালিকার স্বামীকে মেরে ফেলার পর জামাইবাবু এবং শ্যালিকা ভালো ভাবে সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে। কিন্তু শ্যালিকা এটা ভাবেনি যে, ওদের সম্পর্ক মজবুত হলে ওর দিদি-র কী হবে! যাইহোক, এই সম্পর্কের পরিণতি খুব ভয়ংকর রূপ যে নেবে, একথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিয়ের আগে কার সঙ্গে কার কী সম্পর্ক ছিল বা আছে তা খোঁজখবর করা যে কতটা জরুরি, তা বিয়ের পর কোনও খারাপ ঘটনা ঘটলে টের পান অনেকে। আসলে প্রেমের বিয়েই হোক আর সম্বন্ধ করে— পাত্রপাত্রীর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া আবশ্যক। শুধু বাহ্যিক চাকচিক্য কিংবা ব্যাংক ব্যালেন্স দেখে বিয়ে করলে সেই বিয়ের আয়ু যে বেশিদিন টিকবে না— এটা অনেক ক্ষেত্রেই প্রমাণিত হয়েছে।
ভারতবর্ষে এখন প্রায় ১,৫০০ ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট আছে এবং অনেকেই একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলে রেখেছেন মোটা টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়ে। আর সমস্যার সূত্রপাত ঠিক এখান থেকেই। কারণ, এই সব ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে যে-ডেটা দেওয়া থাকে, তার কতটা সত্যি আর কতটা মিথ্যে, তা কে জানে! মনে রাখা দরকার, বিয়ের পাত্রপাত্রীর জন্য চেনা-পরিচিত কাউকে মাধ্যম করুন।
ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে ঠিক মতো খোঁজখবর না নিলে, কোথায় কীভাবে যে ঠকে যাবেন, তার কোনও ঠিক নেই। কারণ, মাধ্যম যাইহোক না কেন, সবাই নিজেদের স্বার্থমতো কাজ করে। অনেক প্রাইভেট ডিটেক্টিভ এজেন্সিও সঠিক রিপোর্ট দেয় না। বানিয়ে একটা মিথ্যে রিপোর্ট দিয়ে টাকা লুটে নেয়। অতএব, নিজেই যতটা সম্ভব খোঁজখবর নিয়ে তারপর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৫, ৪১৬, ৪১৭ এবং ৪১৯ ধারায় বৈবাহিক অপরাধের শাস্তির ব্যবস্থা থাকলেও, বাস্তব এক আর আইন মোতাবেক তা প্রমাণ করে শাস্তি দেওয়া অন্য এক বিষয়। আদালত আপনার সমস্ত সমস্যার সমাধান করে দেবে, এমন ভাবনা যদি কেউ ভেবে থাকেন তাহলে তা মূর্খামি ছাড়া আর কিছু নয়। মনে রাখবেন, যিনি বিয়ে করবেন এবং যাকে বিয়ে করবেন, উভয়ের উচিত বিয়ের আগে যতটা সম্ভব খোঁজ নিয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া। কারণ, নিজের ভালোমন্দ নিজেকেই জেনেবুঝে নিতে হয়, অন্য কেউ আপনার জন্য খুব বেশি মাথা ঘামাবেন বলে তো মনে হয় না।