সারা বছর মানুষ যে উৎসবের প্রতীক্ষায় থাকেন, সেই সেরা উৎসবটি হল–শারদোৎসব। মহা-মিলনের এই উৎসবে প্রকাশিত হয় মানুষের আবেগ-উচ্ছ্বাস। সমন্বয় ঘটে শিল্প এবং ঐতিহ্যের। শুধু তাই নয়, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং রুটিরুজির ব্যবস্থাও হয়। শিল্পীরা তাদের প্রতিভা প্রদর্শন করে কিছু অর্থ উপার্জনের সুযোগও পান।

আবেগের এই উৎসবে উদ্যোক্তারা যে যেমন পারেন অভিনব কিছু করে দেখানোর সুযোগও করে নেন। পরিবেশ সুরক্ষিত রাখার উদ্যোগও নেন অনেকে। কেউ-কেউ আবার উৎসাহী হয়ে ওঠেন সমাজসেবায়। অনেকে মুখে অন্ন তুলে দেন অনাথ কিংবা অসহায় শিশু-কিশোরদের। আবার শিল্প ও ঐতিহ্যেকে মাধ্যম করে নারীদের ক্ষমতায়নের সুযোগও করেন দেন অনেকে। ব্যক্তিগত ভাবে কিংবা সংস্থার পক্ষ থেকেও এই ধরনের উদ্যোগে শামিল হতে দেখা যায় শারদোৎসবকে উপলক্ষ্য করে।

সম্প্রতি নজরে এল এমনই এক উদ্যোগ। কলকাতা-র ৬৬টি পল্লীর শারদোৎসব প্রাঙ্গণে তুলে ধরা হল ‘স্পাইস আর্ট’ ক্যাম্পেইন। আর এই ‘স্পাইস আর্ট’ ক্যাম্পেইন-কে কথায়, গানে এবং নৃত্য প্রদর্শনের মাধ্যমে নয়নাভিরাম রূপ দিলেন মূলত নারীরাই। মহৎ এই উদ্যোগের আয়োজক ছিল আইটিসি-এর সানরাইজ স্পাইসেস। ‘স্পাইস আর্ট’ ক্যাম্পেইন চালু করার মাধ্যমে, শিল্প ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি, নারীদের ক্ষমতায়নের সুযোগও করে দেওয়া হল সম্প্রতি। তিরিশ ফুট লম্বা মশলার আর্ট ইনস্টলেশন করে ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছেন শিল্পীরা।

এই আর্ট ইনস্টলেশনটি বাঙালি ঐতিহ্যকে জাগিয়ে তোলার মাধ্যম বলেই দাবী করেছেন আয়োজকরা।  চিত্তাকর্ষক সেন্টারপিসটি নারীদের শক্তি এবং প্রতিভাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। শুধু তাই নয়, শারদোৎসব উপলক্ষ্যে শক্তির আরাধনায় ‘দুর্গোতিনাশিনী’ এবং ‘দশভুজা’ সংগীত আয়োজনের ব্যবস্থাও করেছেন উদ্যোক্তারা। এই গানগুলি নারীর ক্ষমতায়নকে আরও আবেগময় করে তুলেছে।

‘স্পাইস আর্ট’ ক্যাম্পেইন-এর আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে পীযূষ মিশ্র জানিয়েছেন, ‘বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ঐশ্বর্যকে সম্মান করতে হলে নারীর শক্তি এবং প্রতিভাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতেই হবে। আর এই সম্মান জানানোর সেরা সময় হতে পারে শারদোৎসব।’

টেলিভিশন অভিনেত্রী তৃনা সাহা ভট্টাচার্য এই উদ্যোগের অংশ হতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন, ‘স্পাইস আর্ট’ ক্যাম্পেইন-এ শামিল হতে পেরে আমি ভীষণ খুশি এবং রোমাঞ্চিত। কারণ এই উদ্যোগের মাধ্যমে, মহিলাদের শক্তি এবং প্রতিভাকে সম্মান জানানো হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, এই উদ্যোগের ফলে  মহিলারা আরও উৎসাহিত এবং অনুপ্রাণিত হবেন। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে মাধ্যম করে নারীদের  ক্ষমতায়ন এবং সৃজনশীলতাকে মূল্য দেওয়ার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।’

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী প্রীতম মাইতি-র শিল্প-নির্দেশনায় তৈরি করা হয়েছে এই ‘স্পাইস আর্ট’-টি। আর এই শিল্পকর্মটি আনুষ্ঠানিক ভাবে তুলে ধরার মুহূর্তে, নৃত্য প্রদর্শন করেন ৪০০জন নৃত্যশিল্পী।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...