অভিনেত্রী রেখার রহস্যময় সৗন্দর্য, শ্রীদেবীর সেই ইনোসেন্ট ফেস, মাধুরীর মাদকতা, বিপাশার মোহিনীরূপ দেখলেই মনে হয়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এদের সৗন্দর্যও যেন বেড়ে চলেছে। এখন অনেকেই বলবেন সার্জারির ছোঁয়া৷ কথাটা হয়তো মিথ্যে নয়। মুদ্রার একপিঠে যেমন সার্জারি, তেমনই অন্যপিঠে রয়েছে সঠিক মেক-আপ, হেয়ার স্টাইল আর ড্রেস সেন্স।সার্জারি ছাড়াও সঠিক মেক-আপের সাহায্যে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন গ্লোয়িং, ইয়ং অ্যান্ড বিউটিফুল।একেই বলে Reverse Age Make-up৷ কিন্তু তার জন্য মাথায় রাখতে হবে জরুরি কয়েকটি বিষয়৷

কী করবেন আর কী করবেন না?

ভুল মেক-আপ হ্যাবিট

মেক-আপ মুখের সৗন্দর্য বাড়ানোর জন্য করা হয়ে থাকে, কিন্তু হেভি মেক-আপ, বেমানান হেয়ারকাট যেমন কদর্য করে তোলে মুখ, তেমন বয়সটাও বাড়িয়ে দেয় অনেকটা। অথচ, মুখের আদল অনুযায়ী যথাযথ হেয়ারকাট, হেয়ার স্টাইল এবং হালকা মেক-আপের টাচেই সৗন্দর্যের পাশাপাশি বয়সটাও খানিকটা কমিয়ে ফেলতে পারেন।

ব্যবহার করুন টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার

মেক-আপ করার আগে মুখ পরিষ্কার করতে কেউ ভোলেন না কিন্তু ময়েশ্চারাইজার-এর ব্যাপারটা এড়িয়ে যান। অথচ ক্লিনজিং আর টোনিং-এর মতো , ময়েশ্চারাইজিং প্রক্রিয়াও ভীষণ জরুরি। নয়তো মেক-আপের পরে একটা প্যাচি লুক চলে আসে। তাই গর্জিয়াস লুক পেতে চাইলে কয়েক ফোঁটা টিন্টেড ময়েশ্চারাইজার হালকা হাতে মুখের নীচ থেকে উপরের দিকে ব্লেন্ড করে নিন।

কনসিল ডার্ক সার্কল্স উইথ রাইট শেড

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক চাপ, ঘুম কমে যাওয়া, অসময়ে খাবার খাওয়া, ফাস্ট ফুড গ্রহণের বদ অভ্যাস, অতিরিক্ত কাজের প্রেশার– ডাক সার্কল্স বাড়িয়ে দেয়। ব্লু টোন ডার্ক সার্কল্স হলে, ইয়োলা আর পিচ টিন্টেড কনসিলার ব্যবহার করুন। আর লাইট অর্থাৎ হালকা সার্কল্স থাকলে স্কিন টোনের তুলনায় খানিক হালকা শেড, ব্রাশ নয়তো আঙুলের ডগা দিয়ে লাগান। দীর্ঘক্ষণের জন্য কোথাও যেতে হলে পাউডার দিয়ে লক করে দিন।

প্লামপিং লিপ্স

পাতলা ঠোঁট আর তার চারপাশের শিথিল হয়ে যাওয়া ত্বকই জানান দেয়, আপনার বয়স যৗবনের প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। মহিলাদের মধ্যে একটা প্রবণতা আছে, একটু বয়স বাড়লেই তারা ডার্ক কালারের পেন্সিল দিয়েই ঠোঁট আঁকেন। এতে নাকি বয়সটা কম মনে হয়। সেক্ষেত্রে বলি আপনাদের ধারণা একেবারেই ভুল, কারণ ডার্ক লিপস্টিক লাগানোর ফলে পাতলা ঠোঁট আরও প্রমিনেন্ট হয়ে পড়ে। ফলে সবার নজর ওদিকেই থাকে। ঠোঁটের চারপাশের চামড়া শিথিল হয়ে যাওয়ার কারণে একটু খাওয়াদাওয়া করলেই লিপস্টিক স্মাজ হয়ে ভীষণ বিশ্রী দেখতে লাগে। ঠোঁটে প্লামপিং এফেক্ট দেওয়ার জন্য আউটলাইনার দিয়ে পুরো ঠোঁটটি ভরে, সুন্দর আকার দিন। পরে হালকা করে লিপগ্লস লাগান।

ক্রিমি ব্লাশার

Reverse Age Make-up করলে ক্রিমি ব্লাশার ব্যবহার করতে ভুলবেন না। আপনার স্কিন টোন (লাইট, মিডিয়াম, ডার্ক) অনুযায়ী ক্রিমি ব্লাশার বেছে নিন। এটা ন্যাচারাল গ্লোয়িং চিকস্ এফেক্ট দেবে। আর একটা কথা মাথায় রাখবেন, পাউডার ব্লাশার কখনওই ব্যবহার করবেন না। এতে বলিরেখা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। দেখতেও রুক্ষ লাগে।

অ্যান্টি-এজিং আই মেক-আপ

বয়সের ছাপ সর্বদা চোখ আর তার আশপাশের ত্বকেই বেশি লক্ষ্য করা যায়। হরমোনের অসামঞ্জস্যতার ফলে আই ল্যাশেস হালকা হয়ে যাওয়া, বলিরেখার কারণে আইব্রোজ শিথিল হয়ে যাওয়া, ডার্ক সার্কল্স ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে থাকে।

আইব্রোজ শেপ

চোখের মেক-আপ করার আগে আইব্রো দুটিকে পয়েন্ট আর্চ-এর শেপ দিন। আইব্রো যতটা সম্ভব মোটা রাখার চেষ্টা করবেন, যাতে আপনাকে আপনার বয়সের থেকে কম বয়সি মনে হয়।

আইব্রোজ মেক-আপ

আইব্রোজ মেক-আপের জন্য ব্রাউন কালারের আইশেড অথবা পেন্সিল দিয়ে আইব্রোজ শেপ দেওয়ার সময় অবশ্যই ট্রান্সপারেন্ট মাসকারা ব্যবহার করুন।এটাই Reverse Age Make-up করার মন্ত্র৷

ল্যাশেজ কার্ল

বয়সের সাথে সাথে আইলিড ঢিলে হয়ে যাওয়ার কারণে আই ল্যাশেজ ফ্ল্যাট মনে হয়। তাই

২ কোট (এক কোট শুকিয়ে গেলে, আর এক কোট লাগান) মাসকারা অবশ্যই লাগান। এছাড়া বাজারে বায়োমাইজিং মাসকারাও পাওয়া যাচ্ছে। ভালো পরিণাম পেতে হলে অবশ্যই ব্যবহার করুন।

লাইট আইশ্যাডো

আইলিড-এর ইনার কর্নারে হালকা শিমার আইশ্যাডো ব্যবহার করলে চোখগুলিও বড়ো মনে হবে এবং চোখ বসাও লাগবে না। আউটার কর্নারে মিডিয়াম ডার্ক শেড আর ব্রো বোন-এ লাইট শিমার দিয়ে হাইলাইট করুন। খেয়াল রাখবেন হেভি গ্লিটার আপনার জন্য যথাযথ নয়, তাই এটা এড়িয়ে চলাই ভালো।

পারফেক্ট হেয়ার কাট এবং কালার

আপনার হেয়ার কাটও আপনার বয়স কম দেখাতে বেশ খানিকটা সক্ষম। তাই সেকেলে বিনুনি, খোঁপা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন কিছু হেয়ার কাট ট্রাই করুন। তার মানে এই নয় যে, স্টাইলের জন্য হুট করে লম্বা চুল কেটে একেবারে ছোটো করে ফেললেন। লম্বা চুলেও দারুন দারুণ কাট রয়েছেন যা আপনার সৗন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে। যেমন পিরামিড লেয়ার, ফিউশন মাল্টিপল লেয়ার্স, ইনোভেটিভ ফেদার্স টাচ ইত্যাদি। আর মেহেন্দির পরিবর্তে হেয়ার কালার বা হাইলাইটার করুন, দেখবেন আপনার লুকটাই চেঞ্জ হয়ে গেছে৷

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...