বর্তমানে খাদ্যতন্তু বা রাফেজ কোনো নতুন শব্দ নয়।খাদ্যের উপাদানগুলি যেমন কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাটের সাথে খাদ্যতন্তু বা রাফেজ সমান পংক্তিতে জায়গা করে নিয়েছে। আমাদের খাদ্যতালিকায় যেমন প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ পদার্থের যেমন গুরুত্ব রয়েছে , তেমনই প্রয়োজন আছে রাফেজ- এরও। তাই রোজকার ডায়েট-এ রাখুন পরিমানমতো আঁশয়ুক্ত খাদ্যবস্তু।
শস্যদানা, ফল ও সবজির কিছু অংশ যা হজম বা পরিপাক হয় না এমন তন্তুময় বা আঁশযুক্ত অংশ রাফেজ নামে পরিচিত। তন্তু দু ধরনের– দ্রবণীয় তন্তু এবং অদ্রবণীয় তন্তু।
দ্রবণীয় তন্তু – এগুলি আমাদের রক্তের কোলেস্টেরল ও গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। জলে দ্রবণীয় তন্তুগুলি হল ওটস, বিনস, আপেল, লেবুজাতীয় ফল, বার্লি ইত্যাদি।
অদ্রবণীয় তন্তু– এগুলি আমাদের পরিপাকতন্ত্রে পরিপাক হওয়া খাদ্যের বিচলনে বা পেরিস্টালসিসে সাহায্য করে এবং মলের মধ্যে জলের পরিমাণ বাড়ায়, মলকে নরম করে ও মল নির্গমনে সাহায্য করে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছেন তাদের জন্য এই তন্তু খুবই উপকারি। গমের ভূষিসমেত আটা ,গমের ভূষি,বাদাম,বিনস,
সবুজ শাকপাতা,শাকসবজি যেমন ফুলকপি,আলু প্রভৃতি অদ্রবণীয় তন্তুর উদাহরণ।
রাফেজ-এর উপকারিতা
- রক্তস্রোতে গ্লুকোজের পরিমাণ কমায়
- ডায়াবেটিক রোগীদের পক্ষে উপকারি
- রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।মল নির্গমন সহজ করে।
সবুজ শাকপাতা,খোসাসুদ্ধ ফল, ভুষি, বিনস, গমের রুটিতে তন্তুর পরিমাণ বেশি থাকে।খাবারে তন্তুর পরিমাণ কম থাকলে ইস্কেমিক হার্ট ডিজিজ (হৃৎপিণ্ডে রক্তপ্রবাহের স্বল্পতা), ডায়াবেটিস বা মধুমেহ, ডাইভার্টিকুলার ডিজিজ ( কোলনের মধ্যে ছোটো থলির মত গঠন যা একটি অস্বাভাবিক অবস্থা ) ও কোলন ক্যান্সারের প্রবণতা দেখা যায়।
খাবারে বেশি পরিমাণ তন্তু কিন্তু প্রোটিন পরিপাকে বিঘ্ন ঘটায়।প্রাপ্তবয়স্কদের খাদ্যে প্রতিদিন ৩০-৪০গ্রাম তন্তু থাকা প্রয়োজন। অতএব প্রাত্যাহিক জীবনে মাছের কালিয়া, মাংসের ঝোল, চপ কাটলেট , ভাজাভূজি এসবের সাথে পেঁপে সিদ্ধ, কুমড়ো সিদ্ধ, শাকচচ্চরি, ডাঁটাচচ্চরি–এসব রাখা খুবই দরকার।