লকডাউনের শুরুতে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও, মে মাসেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালানো শুরু হয়। দেশজুড়ে এই বিশেষ ট্রেন চলতে শুরু করার পর বহু রেলকর্মীকেই জনসাধারণের সরাসরি সংস্পর্শে আসতে হয়। আর তার ফলেই এই বিপুল সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হন বলে মনে করা হচ্ছে। মৃত্যু বরণ করতে হয়েছে কয়েকশো রেলকর্মীকে।গত নয় মাস ধরে দেশে কোভিড-১৯ মহামারি ছড়িয়ে গিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় কোটি। বিপুল মানুষ সুস্থও হয়েছেন। কিন্তু মৃত্যুর হয়েছে বহু মানুষের।তাঁদের বেশির ভাগই হলেন ফ্রন্টলাইনারস৷অর্থাত্ যে সব কর্মক্ষেত্রে, সরাসরি মানুষের সঙ্গে সংস্পর্শে আসতে হয়েছে কর্মীদের ৷
জানা গেছে এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার রেলকর্মী। এর মধ্যে মৃত ৭০০ কর্মী। মারা যাওয়া মানুষদের মধ্যে সিংহভাগই ছিলেন ফ্রন্টলাইন কর্মী। তাঁরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শে এসেছিলেন ট্রেন চলাচলের সময় । মহামারির সময় রেল পরিষেবা দিতে গিয়ে এই বিপুল সংখ্যক কর্মীকে হারিয়েছে দেশ।
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রত্যেক কর্মীর বিষয়ে সচেতন থেকেছে কর্তৃপক্ষ এবং সেজন্য প্রতিটি অঞ্চলে কোভিড সেন্টার খোলা হয়েছে। তবুও সকলকে বাঁচাতে পারা যায়িনি। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ! প্রথমে কোভিড চিকিৎসার জন্য ৫০টি হাসপাতালের ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷। পরে তা বাড়িয়ে ৭৪ করা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে রেল মন্ত্রক জানিয়েছিল, করোনা আক্রান্ত রেলকর্মীদের সংখ্যা ১৪ হাজারের বেশি। মৃত ৩৩৬ জন। সেই সঙ্গে এও পরিষ্কার করে দেওয়া হয়, কোনও অসুখে ভুগে মারা গেলে সেই রেলকর্মীর পরিবারকে আলাদা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় না। ফলে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত রেলকর্মীদের পরিবারও আলাদা করে কোনও ক্ষতিপূরণ পাবে না। এ সত্যিই বড়ো দুর্ভাগ্যজনক ৷আইনের ফাঁসে হাঁসফাঁস করে, শেষে আত্মবলিদান দিতে হয় সেই সাধারণ মানুষদেরই৷এই রেলকর্মীরাও ‘অন্তরালের নায়ক’ হিসেবেই থেকে যাবেন৷ অথচ ভেবে দেখেছেন কি, এই কর্মীরা না থাকলে দেশের বহু মানুষেরই বাড়ি ফেরা হতো না ? করোনা মহামারির এই ভয়াবহ সময়ে, পরিবারের মানুষের পাশে থাকাই হতো না !