মানুষ হঠাৎ করেই খুবই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে প্রায় এক বছর ঘরে করোনার আতঙ্কে দিন কাটানোর পর।রেস্তোরাঁ, হোটেল, বাজার, এমনকী গণউদ্যানেও যাতাযাত শুরু করেছে মানুষ। আর ঠিক এই কারণেই, প্রতি ২ থেকে ৩ ঘন্টার ব্যবধানে প্রত্যেকটি জায়গা স্যানিটাইজ করার প্রয়োজন অনিবার্য হযে পড়েছে। কারণ, করোনার সংক্রমণের থেকে বাঁচার জন্য, এটাই অন্যতম উপায়।
একদিকে যেমন বিভিন্ন দেশের এখন মুখ্য লক্ষ্য কোভিড ১৯-এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা, ঠিক তেমনই জারি রয়েছে সংক্রমণ আটকানোর প্রয়াসও। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ করোনার নতুন স্ট্রেনের ঘায়ে কাবু। এর জন্য সব সময় মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোওয়া এবং স্যানিটাইজেশন-এর নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বড়ো বড়ো কর্পোরেট সংস্থায় থার্মাল স্ক্যানিং এবং স্যানিটাইজেশন-এর উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। প্রেক্ষাগৃহেও থার্মাল স্ক্যানিং এবং স্যানিটাইজেশন ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওযা হচ্ছে না। আর এই মারণ রোগের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওযার জন্য, সরকারের পক্ষ থেকেও বারবার হাত ধোওয়ার এবং স্যানিটাইজ করার নির্দেশ দেওযা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, মাস্ক পরা এবং হাত ধোওয়ার পাশাপাশি, স্যানিটাইজ না করলে করোনার সংক্রমণ আটকানো সম্ভব নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল এই যে, সবাই এই নিয়ম মানছেন না। আর কিছু মানুষের এই বেপরোয়া আচরণই বাড়িয়ে তুলছে বিপদ। ভুলে যাবেন না করোনা কিন্তু এখনও পৃথিবী ছেড়ে যায়নি। টীকাও সাধারণ মানুষের হাতে এয়ে পৌঁছোতে সময় লাগবে।তাই আগের মতোই সাবধানতা মেনে চলুন।
স্যানিটাইজেশন–এর গুরুত্ব
- অনেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং স্যানিটাইজেশন-এর মধ্যে তফাত বোঝেন না কিন্তু দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয। আসলে ঝাড়পোঁছে ধুলোময়লা, পোকামাকড় ইত্যাদি আটকানো যায় কিন্তু স্যানিটাইজেশন জীবাণু আটকায়
- করোনার মতো মারণ ভাইরাসও মেরে ফেলা যায় স্যানিটাইজ করে
- ব্যাপক সংক্রমণকেও আটকানো গেছে স্যানিটাইজেশন-এর মাধ্যমে
- স্যানিটাইজার-এর ব্যবহার সাবানের মতো নয়, শুধু স্প্রে করলেই একশো ভাগ কাজ করে স্যানিটাইজার
- জায়গা ছোটো হোক কিংবা বড়ো, স্যানিটাইজার সর্বত্র ব্যবহার করা উচিত
- স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং হাসপাতালে করোনা সংক্রমণ রুখতে গেলে, স্যানিটাইজার ছাড়া গতি নেই
- ইট, কাঠ, পাথর, লোহা প্রভতি যেখানে যেমন অবস্থাতেই থাকুক না কেন, এইসবের উপর স্যানিটাইজার স্প্রে করে করোনা ভাইরাসকে মেরে ফেলা জরুরি।
হাত ধোওয়ার অভ্যাস ছাড়বেন না
ভুলে যাবেন না আমরা কিন্তু এখনও সম্পূর্ণ বিপদমুক্ত নই। তাই সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোওয়ার অভ্যাসটা চালিয়ে যান। সেইসঙ্গে, যেখানে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার সুবিধে নেই, সেখানে আগের মতোই ব্যবহার করুন অ্যালকোহল-যুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার। আর মাস্ক প্রোটেকশক তো থাকছেই।এতদিনে সকলেই জেনে গেছি যে, করোনা শুধু হাঁচি, কাশি কিংবা সর্দি থেকে ছড়ায় না, ধাতব সামগ্রীতে হাত রাখলেও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার, ধাতব জিনিসপত্রে প্রায় ২৪ থেকে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে করোনা ভাইরাস। অতএব, বাইরে বেরোলে, এমনকী বাড়িতে থাকলেও ভালো করে হাত ধোওয়া প্রয়োজন।
স্যানিটাইজার স্প্রে করার আবশ্যকীয় জায়গা
- সুইচ বোর্ড
- দরজার হাতল
- কাজের বা কম্পিউটার রাখার টেবল
- জলের বোতলের বাইরের দিক
- অফিস বা প্রেক্ষাগৃহের চেয়ার
- ডাস্টবিন
- শোকেস-এর কাচ
- আলমারির হাতল
- জলের কল
- ওয়াশবেসিন
- দরজা, জানলার পর্দা
- বারান্দা এবং সিঁড়ির রেলিং
- টিভির রিমোট
- কম্পিউটার এবং ল্যাপটপ-এর কি-বোর্ড।
এই সমস্ত জায়গায় যেহেতু আমরা হাত রাখি, রোজকার মতো এগুলি স্যানিটাইজ করা চালিয়ে যান। আমরা সকলেই দিন গুনছি কবে আমাদের বিশ্ব থেকে চিরতরে বিদায় নেবে এই ভাইরাস। কবে আবার মাস্ক পরিত্যাগ করে আমরা খোলা হাওয়ায় নিঃস্বাস নিতে পারব।