একটা সাম্প্রতিক সার্ভেতে দেখা গেছে, ভারতে ১৪ থেকে ১৭ বছরের মেয়েদের মধ্যে, অন্তত ২০ শতাংশের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি রয়েছে। বয়স বাড়লে এই ঘাটতির কারণেই বাড়ছে নানা শারীরিক সমস্যা। এর কারণ হল প্যাকেজেড এবং ফাস্ট ফুড নির্ভর জীবনশৈলী। আমরা অনেকেই এখন পেট ভরানোর জন্য এই ধরনের খাবারের উপর নির্ভর করি। এতে শরীর প্রযোজনমতো পুষ্টি পায় না। চাহিদামতো ক্যালসিয়ামেরও যোগান দেওয়া হয় না শরীরকে। ফলে দাঁত, নখ, হাড়ের উপর পড়ে এর নেতিবাচক প্রভাব।
হাড়ের ক্ষয়, ব্রিটল বোন্স ও সহজে ফ্র্যাকচার হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে থাকে মধ্য বয়সে পেঁছোনোর আগেই। অস্টিয়োপোরোসিস-এর সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত শরীরে ব্যথা, মাসল্ ক্র্যাম্প হওয়া, ক্লান্তি, বুক ধড়ফড় করা এসবই এই সমস্যার সাইড এফেক্টস। তখন ওষুধের উপর ভরসা করতে হয় ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে।
তাই উচিত হবে শুরু থেকেই ডায়েট-এ পরিবর্তন আনা এবং ক্যালসিয়াম-এ সমৃদ্ধ খাবারদাবার দৈনিক খাদ্য-তালিকায় শামিল করা।
ক্যালসিয়ামের ঘাটতির আরও কিছু কিছু বয়সজনিত কারণে হয়। মেনোপজের সময় অর্থাত্ ৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সে পেঁছে যখন এস্ট্রোজেন হরমোন-এর স্তর কমতে থাকে, তখন ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয় শরীরে। এছাড়া হরমোনাল ডিসঅর্ডার-এর কারণে হাইপোথাইরযেইজম-এর মতো সমস্যার শিকার হলেও, ক্যালসিয়ামের ভযাবহ ঘাটতি দেখা দেয়।
মহিলারা বেশির ভাগ সময়টা কিচেন-এ কাটান অথচ তারা জানেন না, এই কিচেনেই মজুত রয়েছে এমন অনেক জিনিস, যা ডায়েট-এ শামিল করলে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্টস্ গ্রহণ করতে হবে না।
- রাগি : এই দানাশস্য-টিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে। রাগি দিযে তৈরি রুটি খেলে ক্যালসিয়ামের প্রযোজন অনেকটাই মিটবে। ১০০ গ্রাম রাগিতে প্রায় ৩৭০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- সোয়াবিন : পর্যাপ্ত মাত্রায় ক্যালসিয়াম পাবেন সোয়াবিনে। ১০০ গ্রাম সোয়াবিনে ১৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তাই এটি অবশ্যই রাখুন খাদ্য-তালিকায়।
- পালংশাক : ১০০ গ্রাম পালংশাকে থাকে ৯০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম। তবে পালংশাক রান্না করার আগে এতে অক্স্যালিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে ভাপিয়ে নেবেন।
- ডাবের জল : নারকেল বা ডাবের জলও দারুণ উপকারী। প্রতিদিন একটা করে ডাবের জল খাওয়া দরকার। এছাড়া ভিটামিন ডি-এর উত্স সূর্যকিরণ, হাড়ের ক্যালসিয়ামের শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন সকালের রোদটা গায়ে লাগাবেন অন্তত ২০ মিনিট।