মেক-আপ ট্রেন্ডস-এ এখন ম্যাট ভীষণভাবে ইন। অল টাইম ফ্রেশ লুকের জন্য ম্যাট মেক-আপ প্রোডাক্টস্ ব্যবহার করার বিশেষ টেকনিক রয়েছে। লং-লাস্টিং, ফ্রেশ লুক, ন্যাচারাল শেডস– এই বিশেষত্বই আপনার লুক্স-কে আলাদা করবে সবার থেকে। ম্যাট বিউটি হিসাবে নিজেকে প্রজেক্ট করতে জেনে নিন এর টেকনিক।

ম্যাট মেক-আপ সেলেব্রিটিদের পছন্দ

ম্যাট ফিনিশ এখন বলিউডে দারুন ভাবে ইন। তাই হিন্দি ছবির অভিনেত্রীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। হালফিল ছবিতে বহু নায়িকাকেই পর্দায় দেখা যায় এই ধরনের স্টাইলাইজড্ মেক-আপ-এ। করিনা কপূর, অ্যাশ ও দীপিকা পাডুকোন এঁদের মধ্যে অন্যতম।

ম্যাট মেক-আপ প্রোডাক্টস্

ম্যাট মেক-আপ প্রোডাক্টস্ সাধারণত অয়েল ফ্রি হয়ে থাকে। ক্রিমি, গ্লসি, শাইনি, শিমারি কসমেটিক্স-এর মতো, এটি ব্যবহার করলে অয়েলি ভাব আসে না, বরং বোল্ড পাউডারি এফেক্ট দেখা যায়। এর টেক্সচার যেহেতু খুব মসৃণ, তাই অ্যাপ্লাই করার পর স্মুদ অ্যান্ড ফ্রেশ লাগে।

ম্যাট কসমেটিক লিপস্টিক বা আইলাইনার ছাড়াও প্রচুর ম্যাট প্রোডাক্টস্ এখন বাজারে মেলে। তার মধ্যে আছে ম্যাট ফাউন্ডেশন, প্রাইমার, ম্যাট ফিনিশ পাউডার, আইলাইনার, আইশ্যাডো, মাসকারা, লিপস্টিক, লিপ লাইনার, ব্লাশার, নেল পলিশ প্রভৃতি। ম্যাট ফিনিশ লুকের জন্য এগুলি ব্যবহার করতে পারেন, যা অল্প সময়েই আপনাকে বিভাময়ী করে তুলবে।

ম্যাট মেক-আপ প্রোডাক্টস্-এর বৈশিষ্ট্য

লংলাস্টিং-যে-হেতু ম্যাট কসমেটিক মূলত পাউডার বেসড্, তাই এটা চট করে তৈলাক্তভাব এনে দেয় না এবং ছড়িয়েও যায় না। অ্যাপ্লাই করার কিছুক্ষণ পর সেট হয়ে যায় আর দীর্ঘক্ষণ একই রকম থাকে। তুলনায় ক্রিমি বা গ্লসি মেক-আপ অনেক তাড়াতাড়ি স্মাজ করে এবং মেক-আপের ফ্রেশনেস চলে যায়।

ফ্রেশ লুক – অন্যান্য কসমেটিক প্রোডাক্টের মতো, ম্যাট প্রোডাক্টে মিনারেল অয়েল ও পেট্রোলিয়াম জেল থাকে না। ফলে দীর্ঘক্ষণ এর শেড-এর কোনও তারতম্য থাকে না। একইরকম গাঢ় হয়ে সেট থাকে। এই জন্যই একটা ফ্রেশ লুক সবসময় বজায় থাকে।

ইয়ং এফেক্ট -ম্যাট কসমেটিক্স-এর টেক্সচার খুব মসৃণ হয়। এই মেক-আপ অ্যাপ্লাই করার ফলে চোখের নীচের

সংবেদনশীল চামড়ার বা ঠোঁটের পাশের ফাইন লাইন্স বা রিংকল্স ঢেকে যায়। তুলনায় গ্লসি বা শাইনি মেক-আপ এই সব ত্রুটিগুলি প্রকট করে।

ভেলভেট ফিনিশ – শাইনি বা শিমারি টেক্সচার-এর কসমেটিকস্ এক ধরনের গডি এফেক্ট দেয়। কিন্তু ম্যাট মেক-আপ-এর ভেলভেট ফিনিশ টেক্সচার, একধরনের সফ্ট লুক নিয়ে আসে যাতে ত্বক আকর্ষণীয় দেখতে লাগে।

লাইট ওয়েট – নন অয়েলি ও জিরো শিমার এই ম্যাট মেক-আপ অন্যান্য কসমেটিক্স-এর তুলনায় বেশ লাইট ওয়েট। এটা অ্যাপ্লাই করলে মেক-আপ-এ ওয়েটলেস অনুভূতি হয়। অন্যদিকে শিমারি মেক-আপ করলে কিছুটা ভারী ভারী লাগে।

ন্যাচরাল শেড্স -অয়েল কন্টেন্ট-এর জন্য ক্রিমি শেড মেক-আপ প্রোডাক্টস্ খানিকটা ডাল ফিনিশ দেয়। কিন্তু পাউডার বেস ম্যাট কসমেটিক্স-এ অনেক ব্রাইট দেখায়। ন্যাচারাল স্কিন টোনের সঙ্গে ব্লেন্ড হয়ে যায় ভালো।

ননস্টিক -ম্যাট মেক-আপ প্রোডাক্টস্ একেবারেই তেলতেলে নয়, তাই অ্যাপ্লাই করার সঙ্গে সঙ্গে শুকনো ঝরঝরে ফিলিং দেয়। এটির স্থায়িত্বও বেশি। যতক্ষণ না হাত দিয়ে রগড়ানো হচ্ছে, এটা উঠেও যায় না।

নো টাচ-আপ -অন্যান্য মেক-আপ-এ কিছুক্ষণ পর পর টাচ আপ-এর প্রয়োজন হয়। কিন্তু ম্যাট মেক আপ-এর স্থায়িত্ব গুণের জন্যই এটা একবার অ্যাপ্লাই করার পর আর টাচ-আপ করতে হয় না। আপনি টেনশন ফ্রি থাকতে পারেন এটার স্থায়িত্ব সম্পর্কে।

ইজি টু অ্যাপ্লাই- ম্যাট কসমেটিকস্-এর আর-একটি বৈশিষ্ট্য হল এটা খুব ইউজার ফ্রেন্ডলি। বাড়ি বসে নিজেই করতে পারবেন নিজের মেক-আপ, কোনও মেক-আপ এক্সপার্ট-এর সহায়তা ছাড়াই।

ফর অল সিজন – যে-কোনও ঋতুতে যে-কোনও অকেশনে এই ধরনের মেক-আপ স্বচ্ছন্দ্যে করতে পারবেন। মেক-আপ আর্টিস্টরা বলেন, শীতে ক্রিম বেস্ড মেক-আপ করতে। গ্রীষ্মে ওয়াটার বেসড্ মেক-আপ কিন্তু যে-কোনও সময়ে ম্যাট মেক-আপ মানিয়ে যায়।

হাই ডেফিনিশন – ম্যাট কসমেটিক ফেসিয়াল ফিচারগুলিকে স্ট্রংলি হাইলাইট করে। ফলে আপনার ঠোঁট যদি মোটা হয়, তা সরু দেখানোর জন্য সাহায্য নিতে পারেন এই মেক-আপের। আবার পাতলা ঠোঁটে ফুলার এফেক্ট দিতেও এই মেক-আপ আদর্শ। চোখের গঠন ছোটো বা বড়ো করতে ম্যাট আইলাইনার বা ম্যাট আইশ্যাডো অপরিহার্য। সব মিলিয়ে নিখুঁত সৌন্দর্যের জন্যই এর প্রয়োজন।

সেলফি এক্সপার্ট – মেক-আপ যত স্মুদ হবে, ফোটোজেনিকালি আপনি তত নিখুঁত হয়ে উঠবেন। এটা শাইনি বা গ্রিজি মেক-আপ-এ যতটা না সম্ভব, অনেক বেশি সম্ভবপর হয় ম্যাট মেক-আপ-এ।

সব স্কিনের জন্য- সমস্ত স্কিন টাইপ-এ এই মেক-আপ সুট করে। অয়েলি স্কিন যাদের, তাদের জন্য এই ম্যাট মেক-আপ আশীর্বাদ স্বরূপ। গ্লসি আর ক্রিমি মেক-আপ অয়েলি ত্বকের কন্যাদের জন্য একদমই উপযুক্ত নয়। তারা ম্যাট মেক-আপ-এ সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে পারেন। মেক-আপ বেস সুন্দর করে সেট হয়ে যায় এই ধরনর মেক-আপ-এ। ফলে স্কিন টেক্সচারে

সমতা আসে।

কসমেটিক ব্র্যান্ড

  • ম্যাক ও বেনিফিট, এই ব্র্যান্ডগুলিতে আপনি ম্যাট কসমেটিক কিনতে পারেন। যদিও এগুলি একটু হাই রেঞ্জের
  • মিডিয়াম রেঞ্জের জন্য কালারবার আর লোরিয়েল ব্র্যান্ডের ম্যাট কসমেটিক কিনতে পারেন
  • ল্যাকমে, মেবিলিন, রেভলন প্রভৃতি ব্র্যান্ড পাবেন পকেট ফ্রেন্ডলি রেঞ্জ

মেক-আপ অ্যালার্ট

  • আপনার স্কিন যদি বেশি ড্রাই হয় তো শীতে ম্যাট কসমেটিক লাগাবেন না। এতে শুষ্ক ত্বক, শীতের হাওয়া লেগে আরও শুকনো অনুভূতি দেবে। আবহাওয়ার জন্যই ম্যাট মেক-আপ কিছুটা প্যাচি দেখতে লাগে
  • আপনার যদি অতিরিক্ত ঘাম হয় তাহলে গ্রীষ্মে ম্যাট প্রোডাক্টস্ এড়িয়ে চলাই ভালো। ঘামের প্রভাবে মেক-আপ স্মাজি কিংবা ফিকে হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...