২০২৩ সালের আকাদেমি পুরষ্কার অনুষ্ঠানে সেরা আন্তর্জাতিক কাহিনিচিত্র বিভাগে প্রতিযোগিতায় ভারতের তরফে লড়াইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিল গুজরাতি সিনেমা 'চেলো শো'-কে ৷ তবে সেরা আন্তর্জাতিক ছবি মনোনয়নে ‘আরআরআর’ কিংবা ভারত থেকে সরকারিভাবে পাঠানো ‘চেলো শো’-র জায়গা হয়নি।কিন্তু মানুষের মনে এই চেলো শো ছবির ছায়া দীর্ঘতর হয়েছে।
৯ বছরের বালক সময়। রেললাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে চলে। সঙ্গে এগিয়ে চলে তার স্বপ্ন। সময়ের বাবা ট্রেনের যাত্রীদের চা বিক্রি করে। তাদের পাশ দিয়েই বয়ে যায় গোটা জীবন। ৩৫ মিমি পর্দায় তারই চলচ্চিত্রায়ন ‘চেলো শো’। গল্পে যেন সূক্ষ্ম জাদুর ছোঁয়া। প্রায় আত্মজীবনীমূলক উপকথা। চরিত্র ‘সময়’-এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ভাবিন রাবারি।
কিছুদিন আগে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ‘চেলো শো’। এর ইংরেজি নাম দ্য লাস্ট ফিল্ম শো। আমেরিকার পরিচালক প্যান নলিন ওরফে নলিন পাণ্ড্যর জীবনের উপর ভিত্তি করেই আবর্তিত হয়েছে ‘The last film show’-এর গল্প ৷ ছবির প্রযোজক সিদ্ধার্থ রায় কাপুর।
সৌরাষ্ট্র অঞ্চলে নলিনের বড়ো হয়ে ওঠা, ছবির জাদুর প্রতি আকর্ষণ-সবই ধরা পড়েছে ছবিতে ৷ আর ছবির কাহিনিতে সেলুলয়েডের পিছনে থাকা আলো এবং ছায়ার জাদু বিভোর করে নয় বছর বয়সি একটি কিশোরকে । সে সামাজিক চাপ এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে লড়াই করেও, একক নিষ্ঠার সঙ্গে “চলচ্চিত্র শো” এর প্রতি তার আবেগকে জীবিত রাখে। ছবিতে ডিজিটাল বিপ্লবের যুগকে সেট করা হয়েছে একটি গুরুত্বপূরিণ ব্যাকড্রপ হিসাবে।
প্রযুক্তিগত উত্থান-পতন ছেলেটির আবেগকে আঘাত করে। সময় বদলায় এবং ফিল্মেও ডিজিটালাইজেশন আসে কারিগরির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে। তখন অতিকায় ডাইনোসরের মতোই মনে হয় প্রাচীন ফিল্মের ক্যানগুলিকে। ছবি হলে চালানোর যন্ত্রগুলি, নানা রঙের ফিল্মের রোলগুলি,এক সময় স্ক্র্যাপ হিসাবে বাতিল হয়ে যায়। কিশোর ‘সময়ে’র চোখের সামনে রঙিন স্বপ্নগুলো ভেঙে, গুঁড়িয়ে, গলিয়ে রূপান্তরিত হতে থাকে নানা রঙের চুড়িতে।একটা অদ্ভূত বেদনার সুর মিশে থাকে ছবির ছত্রে ছত্রে যা দর্শককে শেষ অবধি নিমজ্জিত রাখে।