প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়-কে প্রথমে কথায়-কথায় স্মরণ করলেন দেবজ্যোতি মিশ্র। জ্ঞান মঞ্চ-এ আয়োজিত এক সান্ধ্য স্মরণ অনুষ্ঠানে তিনি তুলে ধরলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়-এর সঙ্গে তাঁর আলাপপর্ব এবং হৃদ্যতার দিনগুলির কথা।
সৌমিত্র-পুত্র কবি সৌগতের সূত্রে, লেক টেম্পল রোডের বাড়িতে আসা-যাওয়া শুরু করেছিলেন দেবজ্যোতি। সেই বাড়িতেই প্রথম বার বাখ্ শুনেছিলেন তিনি। পরে, 'রাজা লিয়র'-এর মিউজিক শুনে দেবজ্যোতির ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। আরও অনেক পরে ময়ূরাক্ষী ছবিতে সৌমিত্রের নিজের কন্ঠে একটা গান রেকর্ড করার প্রয়োজনের কথা জানান ছবির পরিচালক অতনু ঘোষ। তাঁর মনে হয়েছিল, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়-এর স্বকন্ঠে গানটা না থাকলে ব্যাপারটা ঠিক মানাবে না। সেই কথামতো কাজ শুরু করতে গিয়ে শুরুর দিকে সৌমিত্রের সম্মতি মেলেনি। উঁনি রাজি ছিলেন না গান গাইতে। পরে অবশ্য গানটা করেন এবং খুব কম সময়ের মধ্যেই গানটা রেকর্ড করে ফেলেন।
দেবজ্যোতির মতে, সৌমিত্রের সাংগীতিক পরিমণ্ডল অনেকটা ব্যাপ্ত ছিল। সে বাখ্, বিথোভেন, রবীন্দ্রনাথ, সত্যজিৎ রায়-এর পাশাপাশি, আধুনিক গানও তাঁর সুরের স্মরণীকে আলোকিত করেছে। সম্প্রতি জ্ঞান মঞ্চে এসব কথা তুলে ধরার পর, সুরের কোলাজ উপহার দিলেন দেবজ্যোতি। সঙ্গী হলেন রূপঙ্কর, ইমন, দুর্নিবার সহ আরও অনেক শিল্পী। অপুর সংসার, ফেলুদা থিম ছাড়াও,রবীন্দ্রসংগীতে বিধির বাঁধন, এমনকি সলিল চৌধুরী-র আলোর পথযাত্রী, জীবনে কি পাব না, ও আকাশ সোনা সোনা হয়ে পাতালঘর এবং ময়ূরাক্ষীতে সেই সুরের সফর এসে মেশে। সুরের স্মরণিকায় প্রয়াত সৌমিত্র তখন শ্রোতাদের মনে জীবন্ত।
সবশেষে দেবজ্যোতি আবার জানালেন, ‘সৌমিত্রবাবুর জার্নি, সুরের পথ ধরে এক-সন্ধ্যায় পরিবেশন করা খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। আমরা চেষ্টা করেছি ওঁর সাংগীতিক সফরকে গানে, সুরে তুলে ধরতে। সেখানে অপুর থিম থেকে পাতালঘর, ময়ূরাক্ষীর থিমে গলা মিলিয়েছেন সব শিল্পীরা। ছোট্ট চেম্বার অর্কেস্ট্রা সহযোগে এক অন্যরকম সাউন্ডস্কেপ পরিবেশন করলাম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়-এর স্মরণে।’