রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহে ‘শিলার জিন্নাত’ নাটকটি মঞ্চস্থ হল সম্প্রতি। বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা নাইজেল আক্কারা নির্দেশিত এই নাটকটি প্রযোজনা করেছে ‘কোলাহাল থিয়েটার ওয়ার্কশপ’। এই নাট্যসংস্থার এটি অষ্টম প্রযোজনা বলে জানিয়েছেন নাট্য-সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট নাইজেল আক্কারা স্বয়ং। নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার পরে, 'শিলার জিন্নাত' নাট্যপুস্তকটির মোড়ক উন্মোচনও করা হয়। আনুষ্ঠানিক ভাবে মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্ট কবি সুবোধ সরকার। এছাড়া আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে। এ দিন সন্ধ্যায় ‘উড়ুক্কু মানুষ’ নামের আরও একটি ছোটো নাটকও মঞ্চস্থ হয় 'কোলাহল থিয়েটার ওয়ার্কশপ'-এর প্রযোজনায়।
‘শিলার জিন্নাত’-এর মূল থিম হল (সংস্কৃতে) ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’। যার অর্থ হল--পৃথিবী একটি পরিবার। ‘শিলার জিন্নাত’ নাটকটি ইসমাইলকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে, যিনি একজন মৃৎশিল্পী। তার কাছে জীবনের থেকে বেশি প্রাধান্য পায় তার শিল্প। বড়ো বোন আসমা এবং ভাইঝি মুসকান-কে নিয়ে তার ছোটো পরিবার। পুজোর আগে হঠাৎই ইসমাইলের দুনিয়া ওলট পালট হয়ে যায়, যখন তিনি বুঝতে পারেন যে, তিনি মাটির কোনও মূর্তিকে আকৃতি দিতে অক্ষম। এরপর, পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন জোগানোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় হঠাৎই। বিচলিত ইসমাইল এরপর অদ্ভুত কিছু দর্শন করতে শুরু করে, যা তাকে অজানা দুনিয়ায় নিয়ে যায়। কিন্তু সেই ক্ষেত্র কি সত্যিই অজানা নাকি তার অতীতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ বহন করে? আর এসবের মধ্যে সুগন্ধা কী ভূমিকা পালন করে? সুগন্ধা-র পরিচয়ই-বা কী?
‘শিলার জিন্নাত’ আসলে অতীত এবং বর্তমানের মধ্যে এমন এক সংযোগ স্থাপন করে, যা পরাবাস্তব এবং বাস্তবতার সঙ্গে মিলিত হয়। সেইসঙ্গে, ‘একজন শিল্পীর কোন জাত নেই’ এই সত্যটি তুলে ধরে। ‘শিলার জিন্নাত’ নাটকটি পরিচালনা করেছেন নাইজেল আক্কারা এবং ‘উড়ুক্কু মানুষ’ পরিচালনা করেছেন তন্ময় ঘোষ।
‘শিলার জিন্নাত’-এর নাট্যরূপ দিয়েছেন সর্বাণী ঘোষ বসু। সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রাজনা দত্ত। কোরিওগ্রাফিতে সায়ন্তনী মুখোপাধ্যায়। মঞ্চসজ্জায় অম্বরিশ দাস। আলোকসজ্জায় সৌমেন চক্রবর্তী। সাউন্ড ডিজাইনে বন্ধন মিশ্র। নাটকটিতে বিভিন্ন চরিত্রে রূপদান করেছেন আশিফ ইকবাল, সায়ন্তনী মুখোপাধ্যায়, সর্বাণী ঘোষ বসু, উপাসনা বর, অম্বরিশ দাস এবং সঞ্জু দাস।