বর্তমান জীবনযাত্রায় সবারই ব্যস্ততা বাড়ছে। সুযোগ থাকলে সবকিছুই দ্রুত সেরে নিতে চান সবাই। চিকিৎসার ক্ষেত্রেও তাই। কোনও অসুখের ক্ষেত্রে যদি অপারেশন করতেই হয়, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে চান রোগী। কারণ, হাসপাতালে অপারেশন করাতে গিয়ে দিনের পর দিন ভর্তি থাকতে হলে যেমন কষ্ট হয় রোগী এবং তাঁর পরিজনদের, ঠিক তেমনই হাসপাতালে মেটাতে হয় মোটা টাকা। কিন্তু সময় বদলেছে। আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তির সুবাদে যেমন বিভিন্ন রোগের দ্রুত উপশমের উপায় আবিষ্কৃত হয়েছে, ঠিক তেমনই এসেছে এমন চিকিৎসা পদ্ধতি, যার ফলে জটিল অস্ত্রোপচারের পর একদিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছুটিও পেয়ে যেতে পারেন রোগী। আর এই দ্রুত রোগমুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন ডা. সঞ্জয় মণ্ডল।
ডে-কেয়ার সার্জারি কী?
অ্যানাস্থেশিয়া ও অস্ত্রোপচারের গুণগত উন্নতির জন্য আজকাল রোগী সকালে অপারেশন করিয়ে বিকেলেই বাড়ি চলে যেতে পারেন, রাতভর হাসপাতালে থাকার দরকার পড়ে না। ডাক্তারি পরিভাষায় এটিই ডে-কেয়ার সার্জারি নামে পরিচিত।
কোন কোন অপারেশনের ক্ষেত্রে ডে-কেয়ার সার্জারি করা সম্ভব?
সাধারণত চক্ষু চিকিৎসার জন্য এই পদ্ধতি সর্বাধিক জনপ্রিয় হলেও, ইদানীং বিভিন্ন ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি অর্থাৎ গলব্লাডার, অ্যাপেনডিক্স ও হার্নিয়া অপারেশনের ক্ষেত্রে ডে-কেয়ার সার্জারি করা হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, পাইলস, ফিশার, ফিসচুলা ইত্যাদির চিকিৎসাতেও আজকাল একদিনে রোগীকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
ডে-কেয়ার সার্জারির জন্য কোনও আলাদা পদ্ধতি করা হয় কী?
অত্যাধুনিক কিছু অ্যানাস্থেটিক পদ্ধতি রয়েছে, যা প্রয়োগ করলে অসুস্থ মানুষটি স্বাভাবিক ভাবে অপারেশন সামলে উঠে ওই একইদিনে বাড়ি চলে যেতে পারেন। পাইলস বা সমজাতীয় সার্জারির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় মডার্ন সেই পলিং টেকনিক। যার সুবিধা হল, এতে রোগীর ব্যথা যেমন কম হয়, তেমনই অপারেশন পরবর্তী দেখভালের প্রয়োজনও কমে।
যে-কোনও রোগীই ডে-কেয়ার সার্জারি করাতে পারেন?
অবশ্যই না। যাদের হাসপাতাল থেকে বাড়ি বেশ কিছুটা দূরে, তাদের অপারেশনের দিনই ধকল নিয়ে এতটা পথ যাতায়াত না করাটাই শ্রেয়। আবার, যে সমস্ত রোগীর হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস, বুকব্যথা সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও পরামর্শ দেওয়া হয়। অপারেশনের পর বেশ কিছু ঘণ্টা, প্রয়োজনে কিছু দিন পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য। বিশেষ কোনও জটিল অস্ত্রোপচারের পরেও রোগীকে হাসপাতালেই রাখা উচিত।