একটা সময় ছিল যখন হার্ট অ্যাটাককে বার্ধক্যজনিত সমস্যা হিসেবে দেখা হতো। তবে, আজকাল ৩০ বছর বয়সি, এমনকি ২০ বছর বয়সিদেরও প্রাণঘাতী হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে জরুরি বিভাগে ভর্তি হতে দেখা যায়। আসলে এখন এই বিষয়টি আর ব্যতিক্রমী নয়, এটি একটি প্রবণতা হয়ে উঠেছে এবং এই বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবার সময় এসে গেছে। অন্তত, ‘ওয়ার্ল্ড হার্ট ডে’ উপলক্ষ্যে হার্ট-কে সুস্থ রাখার জন্য নতুন কিছু উদ্যোগ এবং শপথ নেওয়া উচিত। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ফর্টিস হাসপাতালের কার্ডিও থোরাসিক ভাস্কুলার সার্জারি বিভাগের ডিরেক্টর ডা. কায়াপান্ডা মুথানা মান্দানা।

কেন এমনটা হচ্ছে? এর উত্তরের একটা অংশ জেনেটিক্সের মধ্যে নিহিত। যদি আপনার পরিবারে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস থাকে, আপনি যত কম বয়সি হোন না কেন, তাহলে হার্ট-এর সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি। কিন্তু জীবনযাত্রা আরও বড়ো ভূমিকা পালন করছে। দীর্ঘ সময় ধরে কর্মক্ষেত্রে থাকা, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ, ব্যায়ামের অভাব, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, অ্যালকোহল এবং এমনকি বিশেষকিছু ওষুধও হৃদপিণ্ডকে দুর্বল করে দেয়। এর সঙ্গে যোগ করুন তরুণদের মধ্যে স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের নীরব বৃদ্ধি এবং বেশিরভাগই তা নির্ণয় করা হয় না। অর্থাৎ, আমাদের কাছে প্রাথমিক হার্ট অ্যাটাকের জন্য নিখুঁত উপাদান রয়েছে।

Dr. Kayapanda Muthana Mandana,
Dr. Kayapanda Muthana Mandana

পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে, যখন অনেক তরুণ-তরুণী সতর্কতামূলক লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা করে। বুকে অস্বস্তি, শ্বাসকষ্ট, ব্যাখ্যাতীত ক্লান্তি, বুক ধড়ফড় করা প্রভৃতিকে গুরুত্ব না দেওয়া। তারা ধরে নেয় যে, ‘আমাদের কম বয়স, তাই আমাদের হার্ট-এর সমস্যা হতে পারে না।’ কিন্তু বিপদে পড়ে যখন তারা সাহায্য চায়, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়, তেমন কিছুই আর করার থাকে না অনেকসময়।

তাই, আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। ৫০ বছর বয়সের পর হৃদরোগের স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবলে হবে না। এটি এমন একটি বিষয়, যা আপনি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার সময় থেকেই ভাবতে হবে। নিয়মিত চেক-আপ, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস, ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস ত্যাগ, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, ঘাম ঝরানো পরিশ্রম করা, উপযুক্ত পরিমানে জলপান করা এবং ব্যায়ামের জন্য সময় বের করা জরুরি। এখন আর বিলাসিতা নয়, এগুলি বেঁচে থাকার কৌশল।

আসল কথা হল, আরও সচেতনতা জরুরি এবং প্রত্যেকের আরও সচেতন হওয়া দরকার। এই বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষ্যে শপথ নিন, কোনওরকম অবহেলা নয়, হার্ট-এর বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে, নিয়মিত চেক-আপ এবং খাওয়া, ঘুম, শরীরচর্চার মাধ্যমে হার্ট-কে সুস্থ রাখবেন।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...