চিকিৎসকরা হার্ট সার্জারির কথা বললেই, রোগী কিংবা তাঁর বাড়ির লোকেদের মধ্যে খুব ভয় কাজ করে। ভয় হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, কর্মজীবন থেকে দীর্ঘ বিরতি, এমনকী জীবনহানির আশঙ্কাও থাকে। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতির ফলে, এই ভয় এখন অনেকটাই কমেছে। মিনিম্যালি ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি (এমআইসিএস) অনেক বেশি নিরাপদ বলে এখন দাবি করছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, এমআইসিএস-এর ক্রমসাফল্যে এর জনপ্রিয়তাও বাড়ছে। কিন্তু, হার্টের কী ধরনের সমস্যার সমাধানে এমআইসিএস উপযুক্ত, কীভাবে হয় এই সার্জারি এবং কেন এই ধরনের সার্জারির জনপ্রিয়তা বাড়ছে, এই সমস্ত বিষয়ে সম্প্রতি কৗতূহল মেটালেন ডা. সুশান মুখোপাধ্যায়।
বাড়ছে হার্ট ডিজিজ। প্রচুর মহিলাও হার্টের নানারকম অসুখেঞ্জভুগছেন এখন। এর কারণ কী?
এত বেশি সংখ্যক লোক হার্টের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন এখন, যা খুবই উদ্বেগজনক। এর মুখ্য দুই কারণ হল– ফুড হ্যাবিট এবং লাইফস্টাইল-এর পরিবর্তন। ফাস্ট ফুড বেশি খাওয়া, মিনিমাম আট ঘন্টা না ঘুমোনো, ধূমপান, মদ্যপান প্রভৃতি ছাড়াও, হার্টের অসুখের জন্য দায়ী মানসিক চাপ। কারণ মানসিক চাপ যত বাড়বে, ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও ততই বাড়বে। আর ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত হওয়া মানেই হার্টের অসুখকে আমন্ত্রণ জানানো। তবে মহিলাদের হার্টের অসুখ বাড়ছে অন্য কারণে। যেসব মহিলা দীর্ঘদিন কন্ট্রাসেপ্টিভ পিলস সেবন করছেন কিংবা হরমোন থেরাপি করেছেন, সেইসব মহিলারা হার্টের অসুখে ভুগতে পারেন।
সাধারণত কমবয়সি মহিলাদের যেসব হার্টের সমস্যা লক্ষণীয়, তা হল– হার্টের পর্দার মধ্যে ছিদ্র বা অ্যার্টিয়াল সেপ্টাল ডিফেক্ট বা ভেন্টিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট। এই ধরনের সমস্যা খুবই সাধারণ।ঞ্জএছাড়াও হার্টের মধ্যে যে কপাটিকা বা ভাল্ভ আছে, তারও সমস্যা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে ভাল্ভ পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়। আর যে- সমস্ত সমস্যা দেখা যায়, তারমধ্যে অন্যতম হল হার্টের মধ্যে টিউমার। এটি মিক্সমা নামে পরিচিত। এর ফলে ক্যালসিফায়ড ভাল্ভ সংকুচিত হয় এবং অ্যাওঠিক স্টেনোসিস দেখা যেতে পারে, যার জন্য সার্জারির প্রয়োজন। তবে যে- সমস্যাটি আমাদের দেশে মহামারির আকার ধারণ করেছে, তা হল– করনারি আর্টারি ডিজিজ। অর্থাৎ, যার জন্য হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে মহিলাদের করনারি ভাস্কুলার ডিজিজ হয়ে থাকে, যা ঋতুকালীন সময় কিছুটা কম থাকে। তবে ঋতুবন্ধের পর এই সমস্যা পুরুষদের মতোই হয়। আসলে নানা কারণে বাড়ছে করনারি ভাস্কুলার ডিজিজ। শরীরচর্চার অভাব, ওজন বেড়ে যাওয়া, ফ্যাট এবং ব্যাড কোলেস্টেরল-এর মাত্রা বেড়ে যাওয়া ইত্যাদির কারণেও বাড়ছে এই ডিজিজ।