শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট হওয়া ছাড়াও,নানারকম অসুখের যেমন জন্ম দেয় মেদবহুল অথবা স্থূলকায় চেহারা,ঠিক তেমনই মাতৃত্বলাভের ক্ষেত্রেও প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় ওবেসিটি।এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন আই এল এস হাসপাতালের বেরিয়াট্রিক সার্জন এবং মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডা. ওম তাঁতিয়া।
ওবেসিটি বা মোটা হওয়ার কারণ কি?
ওবেসিটি আসলে লাইফস্টাইল ডিজিজ। হাই ক্যালোরি ইনটেক এবং ক্যালোরি এক্সপেনডিচার-এ যদি ভারসাম্য না থাকে, তাহলেই এই সমস্যা হয়। ফাস্ট ফুড, সেড্যানটরি (অলস) লাইফস্টাইল, ল্যাক অফ এক্সারসাইজ, জেনেটিক এবং কিছু হরমোনাল ফ্যাক্টর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় ওবেসিটির ক্ষেত্রে।
ওবেসিটি মাপা হয় কীভাবে? অর্থাৎ কতটা মোটা হলে সমস্যা হতে পারে ধরে নেওয়া হবে?
হাইট এবং ওয়েট-এর রেশিয়ো-কে বিএমআই বা বডি মাস ইনডেক্স বলা হয়। এই বিএমআই-এর পরিমাণ থেকেই ওবেসিটির সমস্যা আছে কিনা বোঝা যায়। কারও বিএমআই যদি ১৮ থেকে ২২.৫ হয়, তাহলে নর্মাল। যদি ২২.৫ থেকে ২৭.৫ এর মধ্যে থাকে, তাহলে ওভারওয়েট। কিন্তু যদি ২৭.৫-এর বেশি হয়, তাহলে ওবেসিটির সমস্যা ধরে নিতে হবে।
ওবেসিটির সমস্যা দূর করতে লাইপোসাকশন না করে, বেরিযাট্রিক সার্জারি করা হবে কেন?
লাইপোসাকশন একটা কসমেটিক সার্জারি। চিকিৎসা-শাস্ত্রে একে বডি স্কাল্পটিং সার্জারি বলা হয়। এই পদ্ধতিতে স্কিন-এর নীচের অতিরিক্ত ফ্যাট সাক করে বাদ দেওয়া হয়। কোমর, পেট এবং থাই-এর শেপ ঠিক রাখার জন্য সাধারণত লাইপোসাকশন করা হয়। কিন্তু বেরিয়াটিক সার্জারি-তে পাকস্থলির উপর অপারেশন করে ওজন কমানোর চেষ্টা করা হয়। এই অপারেশন-এ পাকস্থলিকে কেটে ছোটো করা হয়, যাতে রোগীর ওজন কমে যায়। সেইসঙ্গে, ডায়াবেটিস, প্রেসার ও অন্যান্য নানারকম অসুখের হাত থেকে অনেকটা রেহাইও পান রোগী।
ধরুন, কোনও মহিলা অতিরিক্ত ওজনের জন্য মা হতে পারছেন না, বেরিয়াট্রিক সার্জারির পর কি তিনি মা হতে পারবেন?
বেরিয়াট্রিক সার্জারির পর মা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। অবশ্য সেই মহিলার যদি ইনফার্টিলিটির অন্য কোনও সমস্যা না থাকে। এই প্রসঙ্গে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বেরিয়াট্রিক সার্জারি করার দেড় থেকে দুই বছর পর সন্তান নেওয়া উচিত।