আমার সামনেই ঘটা একটা ঘটনা। তিন-চারদিন ধরে সায়ন মায়ের কাছে স্কুলের রিপোর্টকার্ডটা সই করে দিতে বলছে অথচ সীমার কোনও হেলদোল নেই। সেদিন সুযোগ পেয়ে সায়ন মা-কে চেপে ধরল কারণ পরের দিনই স্কুলে ম্যামকে রিপোর্টকার্ড সই করে দিতেই হবে, নয়তো তাকে ক্লাসে বসতে দেওয়া হবে না।
সীমার মনে পড়ল, সায়নের রিপোর্টকার্ড টা অতনুর থেকে সই করিয়ে আলমারিতে তুলে রেখেছিল সময় থাকতে বার করে দেবে বলে কিন্তু কিছুতেই মনে থাকছিল না। সায়নের তাড়া খেয়ে তাড়াতাড়ি আলমারিটা খুলে সীমা রিপোর্টকার্ড বার করতে গিয়ে দেখে যেখানে থাকার কথা জিনিসটা সেখানে নেই। তাহলে গেল কোথায়? তাহলে আলমারিতে ঢোকাতেই ভুলে গেছে? জোর দিয়ে মনে করার চেষ্টা করল সীমা। কিন্তু না, অতনু সই করার পর থেকে বাকি ঘটনাটা পুরোপুরি স্মৃতি থেকে উধাও।
সীমা লক্ষ্য করছে এই ধরনের টুকটাক ভুলে যাওয়ার ঘটনা প্রায়শই তার সঙ্গে ঘটছে। অফিসের প্রয়োজনীয় ফাইল ডেস্ক-এর উপরেই থেকে যাচ্ছে, আরজেন্ট মেসেজ কলিগকে একবার দেওয়ার পরেও আবার দিতে যাচ্ছে। সংসারে ছোটোখাটো ভুলে যাওয়ার ঘটনা আগেও ঘটছিল কিন্তু অতটা গুরুত্ব সীমা কোনওদিন দেয়নি ব্যাপারটায় কিন্তু ছেলের রিপোর্টকার্ড হারিয়ে ফেলা তো আর স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তাহলে কি অফিস আর বাড়ির স্ট্রেস একসঙ্গে সীমা নিতে পারছে না? বাইরের কাজের প্রেশার সীমার স্মৃতিশক্তির উপর প্রভাব ফেলতে আরম্ভ করেছে? এমনই নানা প্রশ্নের ভিড় জমে সীমার মনে।
এই প্রশ্নগুলো কিন্তু সীমার একার নয়। আধুনিক জীবনে অভ্যস্ত বহু পুরুষ এবং মহিলারা এই একই সমস্যায় জর্জরিত। তবে খেয়াল রাখতে হবে মাঝেমধ্যেই ভুলে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে নাকি, শর্ট টার্ম অথবা লং টার্ম মেমরি লসের সমস্যা হচ্ছে।
নানা কারণেই মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ব্যাহত হতে পারে।
১) ঘুম যদি ঠিকমতো না-হয় - স্মৃতি বিভ্রান্তি ঘটে যদি পরিমাণমতো ভালো ঘুম না-হয়। স্বল্প পরিমাণে ঘুম হলে অথবা রাত্রে ঘুমের সময় বারবার ঘুম ভেঙে গেলে ফ্যাটিগ্ অথবা ক্লান্তির কারণে সাময়িক মেমরি লস হয়।