‘থাইরয়েড’ শব্দটির সঙ্গে সকলে পরিচিত হলেও, থাইরয়েড ডিসঅর্ডারস্-এর বিষয়ে পুরোপুরি ধারণা নেই অনেকেরই। কিন্তু এই রোগটি সম্পর্কে কিছু জ্ঞান এবং সচেতনতা থাকা আবশ্যক এবং লাভজনক। কারণ, ক্ষতিকারক রোগগুলির মধ্যে Thyroid Disorders অন্যতম। তাই সঠিক সময়ে এই রোগের চিকিৎসা শুরু হওয়া জরুরি। এ প্রসঙ্গে ডা. সুবীর রায় জানালেন বিশদে।
Thyroid Gland কী এবং মানব শরীরের কোথায় এর অবস্থান?
থাইরয়েড গ্ল্যান্ড হল অন্তক্ষরা বা অনালগ্রন্থি। মানবদেহের গলার সামনের দিকে এর অবস্থান। এর আকার প্রজাপতির মতো অনেকটা।
থাইরয়েড গ্ল্যান্ড-এর কাজ কী?
রক্তপ্রবাহ থেকে দু’রকম হরমোন তৈরি করে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড। এই দুটি হরমোনের একটির নাম থাইরক্সিন (T4) এবং অন্যটির নাম ট্রায়োডোথাইরোনাইন (T3)। এই হরমোনগুলি দেহকোশগুলিকে সচল রাখতে সাহায্য করে। পিটুইটারি গ্ল্যান্ড-এর কন্ট্রোলে থাকে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড। এই থাইরয়েড-এর হরমোন লেভেল যদি বেড়ে-কমে যায় তাহলে পিটুইটারি গ্ল্যান্ড প্রভাবিত হয়ে হরমোন ক্ষরিত হয়, তাকে বলে থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন বা টিএসএইচ।
Thyroid Hormones-এর কাজ কী?
T-4 এবং T-3 হরমোন দুটি সরাসরি ক্ষরিত হয় থাইরয়েড গ্ল্যান্ড থেকে এবং হরমোনগুলি দেহকোশের মেটাবলিজম-কে প্রভাবিত করে। যদি টি-ফোর এবং টি-থ্রি এই দুটি থাইরয়েড হরমোন বেশি মাত্রায় ক্ষরিত হয়, তাহলে দেহকোশ স্বাভাবিকের থেকে বেশি কাজ করে এবং অবস্থাটিকে বলা হয় হাইপারথাইরয়েডিজ্ম। আর এর ঠিক উলটো অর্থাৎ যদি থাইরয়েড হরমোন কম ক্ষরিত হয় (হাইপোথাইরয়েডিজ্ম), তাহলে শারীরিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলিও কম কাজ করবে, অর্থাৎ অসুস্থ হয়ে পড়বে। অতএব, থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোনকে (টিএসএইচ) সঠিক মাত্রায় (৪.৪ - ৪) রাখতে হবে।
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারস্-এ কারা বেশি আক্রান্ত হন?
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারস্-এ যুবক-যুবতি, মধ্যবয়স্ক নারী-পুরুষ, প্রবীণ-প্রবীণা, এমনকী, শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে।
থাইরয়েড ডিসঅর্ডারস্-এর কারণ কী? এটি কি বংশগত?
থাইরয়েড সাধারণত বংশগত রোগ নয়। এটি আসলে অটো ইমিউন ডিজিজ। শরীরে আয়োডিনের মাত্রা কম হলে থাইরয়েড-এ আক্রান্ত হয়। এছাড়া বিভিন্ন কারণে এই রোগ হতে পারে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েও থাইরয়েড অ্যান্ডিবডি তৈরি করে। এরফলে থাইরয়েড কোষগুলি হয় অতি সক্রিয় কিংবা অল্প সক্রিয় হয়।