শিক্ষার দৌড় শুরু হয় শৈশবের প্রারম্ভেই। শিশুর ব্যবহার, বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও ঘটনাক্রমের ক্ষেত্রে শিশুর প্রতিক্রিয়া কী হবে এসবই নির্ভর করে তার শিক্ষার উপরে। যদি শিশুরা প্রাণায়ামের মতো যোগব্যায়াম অভ্যাস করে এবং তার ব্যবহারের রীতিগুলি জেনে রাখে তাহলে যে-কোনও পরীক্ষা, প্রেজেন্টেশন, জীবনের প্রতিটি ভাঙা, গড়ার ক্ষেত্রে যে মানসিক চাপ শিশুদের সহ্য করতে হয়, সেই অবস্থার মোকাবিলা করতে শিশুদের কোনওরকম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে না।
পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে আউটডোর অ্যাকটিভিটিজ-এও আভিভাবকেরা সন্তানদের পয়লা নম্বর হিসেবে গড়ে তুলতে চান। নিরাপদ পরিবেশে যেখানে তারা বন্ধু পরিবেষ্টিত হয়ে থাকে, সেখানেও অনেক সময় বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। এই অবস্থাতেও সঙ্গীর বিপদের সম্ভাবনা দেখে অন্য একটি শিশুও এগিয়ে আসতে পারে বিপদ থেকে সঙ্গীকে মুক্ত করতে।
বড়োরা সবসময়ে চিন্তায় থাকে, তাদের সন্তানরা কি কিছু শিখতে পারছে, শেখার আদৌ চেষ্টা করছে কিনা, তাদের মধ্যে শেখার আগ্রহ, নিজের প্রতি বিশ্বাস আছে কি? এইসবের একটাই উত্তর হতে পারে যে, যোগব্যায়াম অভ্যাস করলে এই সবকিছুই একটি শিশু নিজেই আয়ত্ত করতে পারবে।
বড়োদের সঙ্গে সঙ্গে শিশুদেরও অনবরত প্রতিযোগিতা এবং বিরামহীন জীবনের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ব্যস্ত স্কুলজীবন, খেলাধুলো, নানা ধরনের অ্যাকটিভিটি, অভিভাবকদের ব্যস্ত ডেলি শেডিউল ইত্যাদি সবকিছুই চাপ সৃষ্টি করে শিশুদের উপরে। জীবনের নানা ক্ষেত্রে স্ট্রেসের কারণে হারের সামনে পড়তে হয় তাদের। একমাত্র যোগব্যায়ামেই আছে স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য শক্তির জোগান দেওয়ার ক্ষমতা। এছাড়াও শিশুদের হাঁপানির অসুখে এ এক অব্যর্থ চিকিৎসা– যোগব্যায়াম।
‘হাঁপানি’ অসুখ-টা কী?
নিশ্বাস নেওয়ার সময় বাইরে থেকে হাওয়া টানার ফলে আমাদের ফুসফুসে হাওয়ার ব্যাগ ভরে যায় বেলুনের মতো। আবার নিশ্বাস ছাড়ার সময় হাওয়ার থলি খালি হয়ে ফ্ল্যাট হয়ে যায়। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী যারা তাদের এই হাওয়া যাতায়াতের পথটি পরিষ্কার এবং খোলা থাকে। হাঁপানির ক্ষেত্রে, হাওয়া পাস করার পথটি এবং হাওয়ার থলিটির স্বাভাবিক আকৃতি নষ্ট হয়ে যায়। এই রোগে ব্রংকাই এবং অ্যালভিওলাই-তে যখন হাওয়া ঢোকে তখন এটি ফুলে ওঠার বদলে চুপসে যায়। ফলত নিশ্বাস নেওয়ার সময়, হাওয়া শরীরে ঢোকেও কম এবং বেরোয়ও কম। এটি একটি ক্রনিক ফুসফুসের রোগ। সমানে কাশি, নিশ্বাসের কষ্টের ফলে গলায় বুকে ফোঁস ফোঁস শব্দ হওয়া, নাকের সঙ্গে ফুসফুসে হাওয়া চলাচলের রাস্তা লাল হয়ে ফুলে ওঠা এবং জ্বালা হওয়া ইত্যাদি সমস্যাগুলি হাঁপানির লক্ষণ। হাওয়া চলাচলের রাস্তা যখন বেশি লাল হয়ে ফুলে ওঠে, প্যাসেজের আশেপাশে চাপের সৃষ্টি হয়ে পেশি টাইট হয়ে যাওয়ায়, কাশি বাড়তে থাকার ফলে দমবন্ধ অবস্থা হয় পেশেন্টদের। এই অবস্থাকে অ্যাজমা অথবা হাঁপানির অ্যাটাক হয়েছে বলা হয়।